This Article is From Aug 06, 2019

কাশ্মীর সিদ্ধান্তে খুশি হতেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, বললেন তাঁর ভাইপো

তবে যেভাবে এটি করা হয়েছে তা অনুমোদন করতেন কিনা ভারতীয় জন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা তাঁর কাকা সে ব্যাপারে সন্দিহান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি চিত্তোষ মুখোপাধ্যায়

কাশ্মীর সিদ্ধান্তে খুশি হতেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, বললেন তাঁর ভাইপো

কলকাতা:

সোমবারই জম্মু ও কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা (Article 370) রদ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে আর বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত রাজ্য থাকছে না সেটি।  জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা বিলোপের এই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে বেঁচে থাকলে অবশ্যই সন্তুষ্টি প্রকাশ করতেন ভারতীয় জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (Syama Prasad Mookerjee), এমনটাই মনে করছেন তাঁর ভাইপো তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি চিত্তোষ মুখোপাধ্যায়।তবে যেভাবে এই সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করা হয়েছে তা অনুমোদন করতেন কিনা তাঁর কাকা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সে ব্যাপারে সন্দিহান ওই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি (Retired Justice Chittatosh Mookerjee)। 

৩৭০ ধারা বাতিল কেন্দ্রের "সাহসী পদক্ষেপ", বলছেন এলকে আদবানি

তবে যেভাবে আচমকা ৩৭০ ধারা রদ করা হয়েছে সেই বিষয়টি অনুমোদন করতেন কিনা ভারতীয় জন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা তাঁর কাকা সে ব্যাপারে সন্দিহান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি চিত্তোষ মুখোপাধ্যায়। "তিনি কী ভাবতেন তা অনুমান করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে এটা জানি যে, তিনি সংসদীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু যেভাবে এটি রদ করা হয়েছে সেটা কী তিনি সমর্থন করতেন? আমি জানি, কোনও কিছুর সমাপ্তি সবসময় ন্যায়সঙ্গত উপায়ে করা সম্ভব হয় না। তবে অন্য কোনও উপায় ছিল কি? আমার সন্দেহ আছে", তিনি বলেন (Retired Justice Chittatosh Mookerjee)।

কলকাতা ও মুম্বই উচ্চ আদালতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ইঙ্গিত দেন যে যেহেতু জম্মু ও কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি ছিল তাই রাজ্যপালের সম্মতি নিয়ে রাজ্য বিধানসভার মাধ্যমেও এই ধারা বাতিল হওয়া সম্ভব ছিল। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি (Retired Justice Chittatosh Mookerjee) বলেন, "আমি মনে করি যে এই রাজ্যে কোনও গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকলে এইভাবে এই জাতীয় প্রস্তাবে স্বীকৃতি বা সম্মতি জানাতে পারত না"।

তিনি আরও যোগ করেন, "আমার কাকা এই বিষয়টি স্পষ্ট করতে চেয়েছিলেন এবং এটি অর্জনের প্রয়াসেই তিনি প্রয়াত হন। সুতরাং, আমি বিশ্বাস করি যে তিনি খুশি হতেন এই বিলোপে। তিনি এক বিধান, এক প্রধান, এক নিশান চেয়েছিলেন।"

তবে ব্যক্তিগতভাবে, বিচারপতি মুখোপাধ্যায় ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, সেই সময়কার কাশ্মীরের নেতৃত্ব প্রদানকারী শেখ আবদুল্লাহ - ভারতের সঙ্গেই থাকতে চেয়েছিলেন কিন্তু সেই সময় শেখ আবদুল্লাকে আটকানো হয়।

"উপত্যকায় ৩ মাসেরও বেশি 'খাদ্য সরবরাহ রয়েছে": ৩৭০ ধারা রদের পর বললেন আধিকারিক

"সঠিক বা অন্যায়, যাই হোক না কেন, এই ধারাটি বিলোপ করা এই সরকারের রাজনৈতিক কর্মসূচির একটি অংশ ছিল এবং তাঁরা তাঁদের ব্রতটি পূর্ণ করেছে। আমি এবিষয়ে তাঁদের অভিনন্দন জানাতে পারছিনা, তবে এই পদক্ষেপ নিলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে জেনেও যিনি এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন আমি তাঁর প্রশংসা না করে পারছি না"  বলেন তিনি ।

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাকে বাতিল করার বিষয়ে বিচারপতি মুখোপাধ্যায়ের মতামত মিশ্রিত হতে পারে, তবে তাঁর কাকার মৃত্যুর ঘটনা এখনও তাঁর মনে তাজা। বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বলেন, "হঠাৎ করেই আমরা একজনের কাছ থেকে ফোনে জানতে পেরেছিলাম যে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়েছে, তবে তাঁর মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানতে পারিনি আমরা।" "এটি পরিবারের কাছে একটি বিরাট ধাক্কা ছিল। সবচেয়ে বড় কথা, আমার মামার মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স মাত্র ৫৩ বছর ছিল।"

ভারতীয় জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতার মা তাঁর মৃত্যুর তদন্ত দাবি করেছিলেন, কিন্তু তা করা হয়নি। শ্রীনগরের কারাগারে থাকাকালীন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যে ডায়েরি রেখেছিলেন তা নিয়েও তাঁর পরিবার এখনও অন্ধকারে রয়েছে।

বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বলেন, "তাঁর মৃত্যুর পরে পরিবারের কাছে একটি  চিঠি পৌঁছয়, আমার কাকা বলেছিলেন যে তিনি কারাগারে কিছু করার নেই বলে ডায়েরি লিখছেন। কিন্তু আমরা কখনই সেই ডায়েরি পাইনি। তাতে তিনি কী লিখেছেন, কে জানে।"

ক্ষমতাসীন বিজেপির পূর্বসূরী ছিল ভারতীয় জনসঙ্ঘ।

.