জম্মু ও কাশ্মীরের (J&K) বাসিন্দাদের সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ সংক্রান্ত নতুন আইন কেন্দ্রের। এই আইনকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। গত আগস্টে সংবিধানের ৩৭০ ধারা (Article 370) বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস' তুলে নিয়ে তাকে দু'টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার আট মাস পর এই নতুন আইন আনা হল। এই নতুন আইন অনুসারে জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দাদের জন্য সংরক্ষণ থাকবে কেবল মাত্র জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ও পিওনের মতো পদের জন্য। বাকি সমস্ত পদের জন্য আলাদা করে কোনও সংরক্ষণ নেই। দেশের যে কোনও নাগরিকই সেই সমস্ত পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এর আগে সমস্ত চাকরিই সংরক্ষিত ছিল স্থায়ী বাসিন্দাদের জন্য। জমির মালিকানাও তাঁদের ছিল। এই আইনে নাগরিকদের সংজ্ঞাও বদলে গিয়েছে।
"করোনা যোদ্ধাদের জন্য এক কোটি টাকার ভাতা", ঘোষণা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের
নবপ্রবর্তিত কেন্দ্রশাসিত দুই অঞ্চলে অন্তত ১৫ বছর বাস করলে কিংবা সেখানে অন্তত সাত বছর পড়াশোনা করলে এবং দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় বসলেও তাঁরা এখানকার নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন।
পাশাপাশি এখানে কর্মরত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সন্তানরাও সংরক্ষণের আওতায় আসবেন।
বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তিই চতুর্থ শ্রেণির উপরে (২৫,৫০০ টাকা) বেতনক্রমের পদের উর্ধ্বের জন্য বিবেচিত হবেন না, যদি না তিনি জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বাসিন্দা হন।
মুম্বই থেকে ফেরার পরেই দেহে করোনার লক্ষণ উত্তরপ্রদেশের যুবকের, গোপন করায় মৃত্যু
এই নতুন আইনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিরোধী নেতা ও অন্যরা সকলেই বলতে শুরু করেছেন, এই ভাবে নতুন আইনে কেবল মাত্র কম বেতনের চাকরিই সংরক্ষিত রইল এখানকার বাসিন্দাদের জন্য।
‘ন্যাশনাল কনফারেন্স'-এর প্রদান ওর আবদুল্লাহ কয়েকদিন আগে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি এই নতুন আইনকে ‘অপমান' বলে আক্রমণ করছেন কেন্দ্রকে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সঙ্গে দেশ যখন লড়ছে, এই রকম একটা সময়ে কাশ্মীরের বাসিন্দা কারা সেই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার জন্য তিনি কড়া সমালোচনা করেছেন।
তিনি লেখেন, ‘‘যখন আমাদের সব মনোযোগ রয়েছে করোনা সংক্রমণের মোকাবিলার দিকে, তখনই সরকার একটি নতুন অধিবাসী আইন নিয়ে এল জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য।'' তাঁর মতে, এটা ‘অপমান', কেননা প্রতিশ্রুত কোনও নিরাপত্তাই দিচ্ছে না এই নয়া আইন।
তিনি আরও জানান, ‘‘এই নতুন আইন এমনই ফাঁপা, দিল্লির আশীর্বাদে নতুন যে দল তৈরি করা হয়েছে, যারা নতুন আইন আনতে দিল্লিকে আর্জি জানাচ্ছিল, তারাও বাধ্য হচ্ছে এর সমালোচনা করতে।''
আগস্টে সংবিধানের ৩৭০ ধারা তোলার সময় থেকেই অবরুদ্ধ ছিলেন আবদুল্লাহ। তিনি যে দলের কথা বলতে চেয়েছেন সেটি হল ‘জম্মু কাশ্মীর আপনি পার্টি'। তারাও জানিয়েছে, নতুন এই নিয়ম মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
দলীয় নেতারা সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।
আলোচনার বিষয় ছিল কাশ্মীরের নাগরিক্ব সংক্রান্ত প্রশ্ন নিয়েই। পরে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দু'জনেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, তাঁরা জম্মু ও কাশ্মীরের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে বদ্ধপরিকর।