সমস্যা পিছু ছাড়ছে না জেট এয়ারওয়েজের (Jet Airways) প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়ালের। একে তো বৈদেশিক মুদ্রা নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের নজরে পড়েছিলেন তিনি (Naresh Goyal), এবার আর্থিক প্রতারণা মামলায় বুধবার গভীর রাতে তাঁর মুম্বইয়ের বাসভবনে তল্লাশি চালাল ইডি। নরেশ গয়াল ও তাঁর স্ত্রী অনিতা গয়ালের বিরুদ্ধে ৪৬ কোটি টাকা আর্থিক প্রতারণা করার অভিযোগ এনে একটি ট্র্যাভেল সংস্থা সম্প্রতি এফআইআর করে, তাদের এফআইআরে নাম রয়েছে জেট এয়ারওয়েজ বিমানসংস্থাটিরও। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই তল্লাশি বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার (Enforcement Directorate) আধিকারিকরা। এর আগে আবুধাবির বিমানসংস্থা এতিহাদ এয়ারওয়েজ জেট সংস্থায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করায় অভিযোগ ওঠে যে বৈদেশিক মুদ্রা নীতি লঙ্ঘন করেছেন জেট কর্তা, সেই সময়ও তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ইডি। তবে এবার জেটকর্তার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা প্রতিরোধ আইন অর্থাৎ পিএমএলএ-র অধীনে পৃথক তদন্ত শুরু করল ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি (ED)।
২০১৪ সালে জেট প্রিভিলেজ লিমিটেড-এর শেয়ার কিনে বিনিয়োগ করে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিমান সংস্থা এতিহাদ এয়ারওয়েজ। পরবর্তীকালে অভিযোগ ওঠে, ওই চুক্তিতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের নিয়ম মানা হয়নি। সেই অভিযোগেরই তদন্ত শুরু করে ২০১৯ সালের প্রথম দিকে তদন্ত শুরু করে ইডি। এরপর গত বছরের সেপ্টেম্বরে নরেশ গয়ালকে ইডির দফতরে তলব করা হয়। সেখানে প্রায় আট ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় জেট এয়ারওয়েজের প্রতিষ্ঠাতাকে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকদের দাবি আবুধাবির বিমানসংস্থাটির সঙ্গে জেটের চুক্তিতে মূল ভূমিকা ছিল নরেশ গয়ালেরই। তাই তাঁর বিরুদ্ধে বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে (ফেমা) তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি।
জেট এয়ারওয়েজের তহবিল পাচার, বিদেশি বিনিয়োগ! বন্ধ হওয়ার আগে কি বেনিয়ম? তদন্ত শুরু
বুধবার গভীর রাতে নরেশ গয়ালের বাসভবনে ইডির অভিযান এই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৯ সালের অগাস্ট মাসে তাঁর মুম্বই এবং দিল্লির বাসভবন সহ মোট ১২টি জায়গায় অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই অভিযানে জানা যায় যে নরেশ গয়াল তাঁর বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলিতে প্রচুর পরিমাণে বেআইনি অর্থ রেখেছেন।
বিমান চলাচল বন্ধ করল জেট এয়ারওয়েজ, তাড়াতাড়ি ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি: ১০টি তথ্য
গত বছরের মে মাসে, নরেশ গয়াল এবং তাঁর স্ত্রীকে লন্ডন রওনা হওয়ার সময় মুম্বই বিমানবন্দরে আটকে দেন অভিবাসন দফতরের আধিকারিকরা কর্মকর্তারা। তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধেই লুক আউট সার্কুলার জারি করা হয়।
গত বছরের বছরের মার্চে জেট এয়ারওয়েজের ডিরেক্টর এবং চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন নরেশ গয়াল। প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৭ এপ্রিল থেকে বন্ধ হয়ে যায় ওই সংস্থার সব উড়ান। রাতারাতি কাজ হারান সংস্থার প্রায় ২০ হাজার কর্মী। অথচ তার আগে পর্যন্ত ভারতের বাজারে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান পরিষেবা সংস্থা ছিল জেট এয়ারওয়েজ।