JNU University: গত সপ্তাহে ক্যাম্পাসে ঢুকে হামলা চালায় ৭০ থেকে ১০০ জনের একটি দল
নয়াদিল্লি: জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jawaharlal Nehru University) ৫ জানুয়ারি হামলার (JNU Attack) ঘটনায় উপাচার্য জগদীশ এম কুমারকে (Jagadeesh M Kumar) “মূলচক্রী” বলে বর্ণনা করেছে কংগ্রেসের তদন্ত কমিটি, পাশাপাশি তাঁকে দ্রুত বরখাস্তেরও দাবি জানানো হয়েছে। “হিংসা ছড়াতে হামলাকারীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করা”-র অভিযোগে উপাচার্য সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে “ফৌজদারি তদন্তের” দাবি জানিয়েছে কংগ্রেসের তদন্ত কমিটি, হামলার সময় দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে তারা। এদিন বিকেলে বিস্তারিত নথি প্রকাশ করা হয়, সেখানে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে হামলাকারীদের ক্যাম্পাসে অবাধে ঘুরে বেড়াতে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে, উপাচার্যের পদক্ষেপকে “হামলাকারীদের পরোক্ষ সম্মতি এভং জটিলতা” তৈরির ইঙ্গিত দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে, বলা হয়েছে, তিনি “মানুষের সঙ্গে নিখুঁতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়েন...তাঁকে অভিযোগ জানানো হয় এবং...ডানপন্থী আদর্শে ঝোঁকেন”।
কংগ্রেসের কমিটির প্রস্তাব দিয়েছে, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার ঘাটতি থাকায়, “পড়ুয়া ও শিক্ষকদের ভয় দেখাতে পূর্ব পরিকল্পিত এবং চিন্তাভাবনা” করে অস্ত্রসহ ঢোকে দুষ্কৃতীরা
কংগ্রেসের এই তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের বিবৃতি এবং পুলিশের বিবৃতির মধ্যে অমিল হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিকেল ৪.৩০ নাগাদ পুলিশ ডাকে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ, অন্যদিকে, ৭.৪৫ নাগাদ তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রথম অনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে, দিল্লি পুলিশ জানায়, যেখানে তাঁদের কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছিল, সেখান থেকে অনেকটা দূরে হিংসার ঘটনা ঘটে।
JNU University: হামলার সময় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন পজড়ুয়াদের একাংশ
কংগ্রেসের দাবির প্রতিধ্বনী শোনা গিয়েছে পড়ুয়াদের গলায়, ছাত্র সংসদের নেতা সাকেট মুন NDTV কে বলেন, “বিকেল থেকেই ক্যাম্পাসে পুলিশ ছিল, তবে কিছুই করেনি তারা”।
হামলার সময় তাদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে দিল্লি পুলিশ, এখনও পর্যন্ত একাধিক এফআইআর রুজু হয়েছে, তবে ৫ জানুয়ারির হামলার সম্পর্কিত যোগ রয়েছে একটিরই, সেদিনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
আরেকটি এফআইআরে, হামলার পরেই যেটি করা হয়েছি, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সার্ভারুমে ভাঙচুর, এবং হামলার ঘটনায় নাম রয়েছে ছাত্র সংসদের নেতা ঐশি ঘোষের, প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, হস্টেল ফি বৃদ্ধি নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে মতবিরোধের জেরেই এই হামলা।
হামলার ঘটনায়, মাথায় আঘাত পান ঐশি ঘোষ, কোনওরকম যোগ থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। ঐশি ঘোষ সহ মোট ৯ জন পড়ুয়াকে এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
JNU University: হামলার সময় মাথায় আঘাত পান ছাত্র সংসদের নেত্রী ঐশি ঘোষ
কংগ্রেসের রিপোর্টে সার্ভাররুমে হামলার ঘটনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উপাচার্যের দেওয়া বিবৃতির দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে, ৪ জানুয়ারি কাজ করছিল সার্ভাররুম, সেদিনই হামলা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, সার্ভাররুমে হামলার পরেই যে হামলার ঘটনা ঘটে, কয়েকজন পড়ুয়াকে, অন্য কয়েকজন পড়ুয়া শীতকালীন সেমিস্টারে রেজিস্ট্রেশনে বাধা দেওয়ার ফল।
কংগ্রেসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, “প্রায় মনে হচ্ছে, হামলাকারীদের রক্ষা করতে সিসিটিভি ফুটেজ যাতে কাজ না করে, সার্ভারুমে গণ্ডগোল হওয়ার সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন উপাচার্য এবং কোনও রেকর্ড ছাড়াই তাদের তাণ্ডব করতে দেওয়া হয়েছে”।
JNU University: সবরমতী হস্টেলে সবচেয়ে বেশী অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে বলে মনে করা হয়
হামলার সময়, রাস্তার আলো বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেসের এই রিপোর্ট, আক্রান্তদের অভিযোগ, হামলা চালাতে এবং অবাধে চলে যেতে দেওয়ার জন্যই এই পদক্ষেপ।
হামলার পর থেকে, উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলা হয়েছে। ৫ জানুয়ারি ৭০ থেকে প্রায় ১০০ জন মুখে মাস্ক পড়া লোকজন জেএনইউ ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের ওপর হামলা চালায়। তিনঘন্টার সেই হামলায় প্রায় ৩৪ জন জখম হন।
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশ, এমনকী, একই দাবি তুলেছেন বিজেপি নেতা মুরলি মনোহর জোশিও, তবে তা নিয়ে এখনও পদক্ষেপ করেনি সরকার।