JNU Mob Attack: ৫ জানুয়ারি ৭০ থেকে ১০০ জনের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে হামলা চালায়
হাইলাইটস
- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলিতে জেএনইউ হামলার পরিকল্পনা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ
- ওই গ্রুপের সদস্যদের ফোন বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিল্লি পুলিশকে
- ফোন বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিল দিল্লি আদালত
নয়া দিল্লি: দিল্লির জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের হামলার (JNU Mob Attack) ঘটনায় নয়া মোড়। ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও শিক্ষকদের উপর হওয়া ওই হামলার সম্পর্কে যে যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কথা হয়েছিল, সেই সব (WhatsApp) গ্রুপের সদস্যদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করার জন্যে দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট। এর আগে সোমবারই ওই আদালত (Delhi High Court) হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল, ফেসবুক এবং অ্যাপলকে জেএনইউ আলোচনা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য সংরক্ষণের বিষয়ে নির্দেশ দেয়। জানা গেছে, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ অধ্যাপকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই এই কড়া পদক্ষেপ করল দিল্লি হাইকোর্ট।ওই আদালতের বিচারপতি ব্রিজেশ শেঠি জেএনইউয়ের রেজিস্ট্রার ডঃ প্রমোদ কুমারকেও ওই দিনের হামলা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য পুলিশকে দেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন। কেননা গতকাল (সোমবার) আদালতকে দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে ওই হামলা সংক্রান্ত তথ্য ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না।
জেএনইউয়ের হামলার ঘটনায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ৩ অধ্যাপক অমিত পরমেশ্বরন, শুক্লা সাওয়ান্ত এবং অতুল সুদ দিল্লির পুলিশ কমিশনার এবং দিল্লি সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্যে আদালতকে নির্দেশ দেওয়ার বিষয়েও অনুরোধ করেন ।
জেএনইউ কাণ্ডে তথ্য সংরক্ষণের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল,অ্যাপলকে আদালতের নোটিস
''ইউনিটি এগেনস্ট লেফ্ট'' বা বামপন্থী বিরোধী ঐক্য (Unity against Left') এবং ''ফ্রেন্ডস অফ আরএসএস'' বা আরএসএসের বন্ধুরা (Friends of RSS), এই দুটি গ্রুপে ওই হামলা নিয়ে যে সমস্ত কথা হয়েছে সেই সমস্ত তথ্য়ও প্রকাশ্য়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন জেএনইউয়ের অধ্যাপকরা। গত রবিবার জেএনইউ হামলার ঘটনা নিয়ে ওই দুই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্যদের কথোপকথন, ছবি, ভিডিও এবং ফোন নম্বরগুলিও প্রকাশ্যে আনার অনুরোধ করেন তাঁরা।
আদালতের ওই নোটিসের পরিপ্রেক্ষিতে হোয়াটসঅ্যাপ সংস্থা জানায় যে, এই সংক্রান্ত বার্তাগুলির অ্যাক্সেস তাঁদের কাছে নেই কারণ এখন এই ধরণের তথ্যগুলি পেতে গেলে সেই মোবাইল ফোনের অ্যাক্সেস প্রয়োজন যার মাধ্যমে ওই বার্তা পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে দিল্লি পুলিশ আদালতকে জানায় যে তারা এক হাজার একর ক্যাম্পাসে লাগানো ১৩৫ টি সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ খতিয়ে দেখতে চাইলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সার্ভার রুমে ভাঙচুর হওয়ায় সেগুলোও তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবরমতী হস্টেলে ভাঙচুর করা হয় ওই হামলার সময়
এদিকে জেএনইউ হামলার ঘটনায় দিল্লি পুলিশের হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। তাঁরা জানিয়েছে যে সন্দেহভাজন ৬০ জনের মধ্যে ৩৭ জনের একটি দলকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাঁরা 'বামপন্থী বিরোধী ঐক্য' নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ দলের সদস্য। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে যে জেএনইউয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের উপর গত সপ্তাহের হামলার ঘটনার পিছনে তাঁদের হাত রয়েছে। এখনও পর্যন্ত এঁদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ জনকে বহিরাগত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে যাঁরা ওই হামলার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ।
‘‘শহুরে নকশালরাই জেএনইউয়ের নাম খারাপ করছে'': এবিভিপি
দিল্লি পুলিশ একথাও জানিয়েছে বাম সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ও এবিভিপি দুই দলই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হামলা চালাতে বহিরাগতের সাহায্য নিয়েছিল। জেএনইউয়ের পড়ুয়ারাই ওই বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। রবিবার দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃশংস হামলা চালায় একদল মুখোশধারী, ঘটনায় আহত হন কমপক্ষে ৩৪ জন।
ওই ঘটনায় শুক্রবার ৯ জন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করে কয়েকজনের ছবি প্রকাশ করে দিল্লি পুলিশ,যার মধ্যে রয়েছে ঐশী ঘোষের ছবিও। যদিও এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঐশী ঘোষ বলেন, "আমাদের দেশের আইন-শৃঙ্খলার উপর আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে ... আমরা কোনও অন্যায় করিনি। দিল্লি পুলিশ আমাদের ফুটেজ প্রকাশ করুক ... আমরা এভাবে কিছুতেই সন্দেহভাজন তালিকায় থাকতে পারি না। আমাদের সংগঠনের কোনও সদস্যই কোনও অন্যায় করেনি"।
৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রায় ৭০ থেকে ১০০ জন মুখোশধারী গুণ্ডা, লোহার রড এবং হাতুড়ি নিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করে এবং প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে সেখানে এবং জেএনইউয়ের ছাত্রাবাসে হামলা চালায় যাতে আহত হন ৩৪ জন।