JNU: গত সপ্তাহে যেভাবে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা হয়েছে তার নিন্দা করেন কানহাইয়া কুমার
হাইলাইটস
- বিজেপির ছাত্র সংগঠনের হয়ে কথা বলছে পুলিশ, অভিযোগ কানহাইয়া কুমারের
- নিরপেক্ষ তদন্তের পক্ষে জোর সওয়াল করেন তিনি
- রবিবার জেএনইউতে হামলা চালায় প্রায় ৫০ জন মুখোশধারী
নয়া দিল্লি: পুলিশ বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপির (ABVP) হয়ে কথা বলছে, বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন কানহাইয়া কুমার। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (JNU) ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়া কুমার বলেছেন, গত সপ্তাহে দিল্লির ওই ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হওয়া মুখোশধারীদের হামলার (JNU Violence) প্রসঙ্গে যেভাবে ছবি প্রকাশ করে বাম ছাত্রনেতাদের উপরেই দায় চাপাতে চেয়েছে দিল্লি পুলিশ তা যথেষ্ট "উদ্বেগজনক", বলেন তিনি (Kanhaiya Kumar)। "যেভাবে বাম এবং ডানপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলির মধ্যে বিভেদ করা হচ্ছে তা উদ্বেগজনক। ক্যাম্পাসে যে কোনও ধরণের হামলার ঘটনাই ঠিক নয় ... তবে পুলিশ আধিকারিকরা যেভাবে কথা বলছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল এই সাংবাদিক সম্মেলন পুলিশের নয়, এবিভিপির", বলেন সিপিআই নেতা কানহাইয়া কুমার। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, "পুলিশ যেভাবে কথা বলছে, তা একতরফা বলে মনে হচ্ছিল। এসব ক্ষেত্রে প্রশাসন তথা প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে"।
গত সপ্তাহে দিল্লির ওই নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা হয়, মুখোশ পরে জেএনইউয়ের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় শুক্রবার ৯ জন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করে কয়েকজনের ছবি প্রকাশ করেছে দিল্লি পুলিশ। জানা গেছে, অভিযুক্তদের মধ্যে বেশিরভাগই হলেন বাম ছাত্রনেতা। গত রবিবার সন্ধ্যায় ওই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা এর নিন্দায় সরব হন। ওইদিনই জেএনইউয়ের হস্টেল বা ছাত্রাবাসের ফি বাড়ানোর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আন্দোলন চলছিল। সেই আন্দোলনকে ঘিরে রবিবার সেখানে একটি সংঘর্ষও বাঁধে। ওই ঘটনাকে ইঙ্গিত করেই দিল্লি পুলিশের আধিকারিকরা ছাত্রনেতা চুনচুন কুমার, পঙ্কজ মিশ্র, ঐশী ঘোষ, ওয়াসকার বিজয়, সুচেতা তালুকদার, প্রিয়া রঞ্জন, দোলন সাওয়ান্ত, যোগেন্দ্র ভরদ্বাজ এবং বিকাশ প্যাটেলের নাম অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
JNU Violence: হস্টেলে হামলায় অভিযুক্ত ঐশী ঘোষ ও অন্যান্যদের ছবি প্রকাশ করল দিল্লি পুলিশ
ঐশী ঘোষ বাম-নিয়ন্ত্রিত জেএনইউ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এবং যোগেন্দ্র ভরদ্বাজ এবং বিকাশ প্যাটেল বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় ছাত্র পরিষদ বা এবিভিপি-র সদস্য বলে জানা গেছে।
ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল বা ছাত্রাবাসের বর্ধিত ফি সহ অন্যান্য ব্যয়বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন একদল ছাত্র। সেই সময়েই অনলাইন রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করতে এবং তাঁদের বিক্ষোভ তথা ধর্মঘটকে কার্যকর করতে জেএনইউয়ের সার্ভার রুমে ঢুকে হামলা চালান ঐশী ঘোষ এবং অন্য বাম ছাত্রনেতারা।
রবিবার যেভাবে একদল মুখোশধারী জেএনইউয়ের হস্টেলে হামলা চালায় তা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছে গোটা দেশ। ওই হামলায় আহত হন বেশ কয়েকজন শিক্ষক সহ পড়ুয়ারা। রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায় বাম ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ঐশী ঘোষকেও। অভিযোগ ওঠে, ওই হামলার সময় বেশ কয়েকজন পুলিশ ক্যাম্পাসে থাকা সত্ত্বেও হামলাকারীদের কাউকেই থামানো বা গ্রেফতার করা হয়নি।
"আমি ঐদিন কোনও মুখোশ পরে ছিলাম না": দিল্লি পুলিশের পাল্টা দাবি ঐশী ঘোষের
জেএনইউতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পক্ষে সওয়াল করে কানহাইয়া কুমার বলেন, "শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়েই পথে নেমে আন্দোলন করতে হচ্ছে। এফটিআইআই, আইআইএমসি, এমবিবিএস ... সব জায়গাতেই ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধেই জেএনইউতে বিক্ষোভ চলছে ৭৫ দিন ধরে। অথচ এ বিষয়ে জেএনইউ উপাচার্য কোনও পড়ুয়া এবং শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেননি। বরং প্রয়োজনে হোয়াটসঅ্যাপে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়েও সুপারিশ করেছেন তিনি।"