This Article is From Dec 18, 2019

"নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি সমগ্র দেশে প্রভাব ফেলবে", বললেন কানহাইয়া কুমার

Citizenship Amendment Act: সারা দেশে শিক্ষার্থী ও বিরোধী দলগুলি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে

জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ছিলেন Kanhaiya Kumar

হাইলাইটস

  • নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন কানহাইয়া কুমার
  • তাঁর মতে এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইনের প্রভাব পড়বে সবার উপরেই
  • কেন্দ্র বিভাজনের নীতি থেকে সরে না আসলে প্রতিবাদ আরও তীব্র হবে, বলেন তিনি
নয়া দিল্লি:

এনআরসি (NRC) এবং নাগরিকত্ব আইনের (Citizenship Amendment Act) মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের উপর জোড়া হামলা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার, এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন কানহাইয়া কুমার। ছাত্রনেতা থেকে দুঁদে রাজনীতিক হয়ে ওঠা কানহাইয়া (Kanhaiya Kumar) বলেন, এই দুই আইনের প্রয়োগের ফলে দেশের দরিদ্রদের  যেতে হতে পারে শরণার্থী শিবিরে, কেননা যাবতীয় নথিপত্র না দেখাতে পারলেই নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলবে সরকার। "সরকার বলেছে যে এই দুই উদ্যোগের ফলে দেশের মুসলিম নাগরিকদের উপর কোনও প্রভাব পড়বে না। বরং তার উল্টো হবে। এই দুটি নিয়ম লাগু হলে দেশের মুসলিমদের পাশাপাশি সমস্যায় পড়বেন দেশের দরিদ্র মানুষেরাও। কারণ তাঁদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র দেখাতে হবে। এই নিয়ম দুটি দেশের সকল নাগরিককেই প্রভাবিত করবে", এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেন কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়ার (সিপিআই) নেতা । 

কানহাইয়া কুমার, যিনি রাজনীতিবিদ হওয়ার আগে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিতেন, তিনি বলেন যে. এটি খুব উদ্বেগের, সেই কারণেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা আন্দোলন শুরু করেছে। "যদি সরকার এই বিভাজন নীতি না ছাড়ে তবে এই দেশ এবং এর সংবিধানকে ভালবাসে এমন সমস্ত মানুষ মিলেই আন্দোলন করবে।"

নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল রাজধানী, উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ১৪৪ ধারা

বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যে সব অমুসলিম মানুষরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা এবার ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এরই বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন দেশের অসংখ্য মানুষ। নতুন আইনটির মাধ্যমে ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা করে অবৈধ অভিবাসীদের দেশের নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিপন্থী। এই আইন নাগরিকদের জীবন ও মৌলিক অধিকার তথা সাম্যের অধিকার লঙ্ঘন করে, দাবি বিক্ষোভকারীদের।

এই নতুন আইন নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে দিল্লির জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রবিবার প্রতিবাদ মিছিল করার সময় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় সেখানে। পুলিশ ওই পদযাত্রা থামানোর চেষ্টা করলে তাঁদের লক্ষ্য করে কেউ বা কারা পাথর ছুঁড়ে মারে, পুড়িয়ে দেওয়া হয় বাস এবং দু'চাকার গাড়িও। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা অনুমতিতে পুলিশ ঢোকে, এমন অভিযোগেও উত্তাল হয় রাজধানী। শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটকেও রাখে দিল্লি পুলিশ, পরে যদিও তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও আছড়ে পড়ে প্রতিবাদের ঝড়।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিস দিল সুপ্রিম কোর্ট

তবে ছাত্র রাজনীতিতে এই নাগরিকত্ব আইন বিষয়টি উঠে আসায় তাঁর সমালোচনা করে শাসক দল বিজেপি।কিন্তু সিপিআই নেতা বলেন যে, রাজনীতির হাতেখড়ি সবচেয়ে ভাল হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই। এই কথা বলে তিনি এও মনে করিয়ে দেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বড় রাজনীতিবিদ হিসাবে নজরে আসার আগে ছাত্র নেতাই ছিলেন। "শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে পরিণত করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হওয়া মানে সংবিধানের উপর হামলা হলে, দেশের ঐক্য বা বৈচিত্র্যের উপর হামলা হলে তার প্রতিবাদ করা। জনগণকে বিভক্ত করার জন্য যে আইন চালু করা হচ্ছে তা অসাংবিধানিক", বলেন কানহাইয়া।

প্রধানমন্ত্রীর 'মন কি বাত' নিয়ে কটাক্ষ করে কানহাইয়া কুমার বলেন, "অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে প্রধানমন্ত্রী কেবল তাঁর মনের কথাই বলতে ব্যস্ত । তিনি যদি শিক্ষার্থীদের মনের কথা শোনার জন্য প্রস্তুত থাকতেন, দেশ আজ এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হত না। জনগণের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করার বিষয়ে যখনই কোনও সরকার চেষ্টা করেছে, তখনই মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন", বলেন তিনি ।

জেনে নিন দেশের অন্যান্য খবরও, দেখুন এই ভিডিও:

.