কোনও বিশ্রাম ছাড়াই কাজ করে গিয়েছিলেন যিনি, তিনিই এখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন
চেন্নাই: নিজের এপিটাফ নিজেই লিখে রেখেছিলেন করুণানিধি। আজ থেকে তিন দশক আগে এপিটাফের বয়ানটি বলেছিলেন তাঁর পুত্র এমকে স্ট্যালিনকে। তামিলে লেখা সেই গভীর ও বিষণ্ণ লাইনগুলির বাংলা তর্জমা করলে তা দাঁড়ায়ঃ- "কোনও বিশ্রাম ছাড়াই কাজ করে গিয়েছিলেন যিনি, তিনিই এখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন"।
তাঁর বাবাকে উদ্দেশ্য করে লেখা একটি কবিতায় করুণানিধির পুত্র এম কে স্ট্যালিন একবার লিখেছিলেন- "আমি কি একটিবারের জন্যও আপনাকে বাবা বলে ডাকতে পারি, আমার নেতা"?
1957 সাল থেকে নির্বাচনে লড়েছেন করুণানিধি। একবারের জন্যও হারেননি। তেরো বারের বিধায়ক এবং তামিলনাড়ুর পাঁচ বারের মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল সন্ধেবেলা দীর্ঘ অসুস্থতার পর চেন্নাইয়ের কাবেরী হাসপাতালে পরলোকগমন করেন। বয়স হয়েছিল চুরানব্বই বছর। আজ তাঁর রাজনৈতিক গুরু আন্নাদুরাইয়ের পাশেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয় চেন্নাইয়ের মেরিনা বিচে।
তবে, তাঁর শেষকৃত্যের স্থান নিয়ে চলেছিল বিতর্ক। তাঁর দল ডিএমকে চেয়েছিল, তাঁকে সমাধিস্থ করা হোক চেন্নাইয়ের মেরিনা বিচে। কিন্তু তামিলনাড়ুর এআইএডিএমকে সরকার সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি প্রাথমিকভাবে। মামলা গড়ায় আদালতে। দু'রাউন্ড ধরে শুনানি চলার পর মাদ্রাজ হাইকোর্ট করুণানিধির শেষকৃত্য মেরিনা বিচেই সম্পন্ন করার ব্যাপারে রায়দান করে।
দ্রাবিড় রাজনীতির এক বর্ণময় ও সংগ্রামী অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল চোখে কালো চশমা ও কাঁধে হলুদ শাল রেখে এগিয়ে চলা এই রাজনৈতিক নেতা ও সাংস্কৃতিক কর্মীর মৃত্যুর সঙ্গেই। আন্নাদুরাইয়ের সঙ্গেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী জয়ললিতার সমাধির পাশেও শায়িত হলেন তিনি। মেরিনা বিচের নিঃসঙ্গ হাওয়াই এখন থেকে তাঁদের চিরকালীন বন্ধু।