২০০৭ সালের সেই সিজনের সঞ্চালক ছিলেন শাহরুখ খান। সে বার হয়েছিল বিশেষ 'হার সিট, হট সিট' প্রতিযোগিতা
নয়াদিল্লি: শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) নির্দেশে এক কোটি টাকা বেঁচে গেল স্টার ইন্ডিয়া আর এয়ারটেলের। সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি গ্রাহক আদালতের এক রায় খারিজ করেছে। সেই গ্রাহক আদালত ২০০৮ সালে, ওই দুই সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছিল, ক্ষতিপূরণ বাবদ এক কোটি টাকা আবেদনকারীকে মেটাতে হবে। কৌন বনেগা ক্রোড়পতি বা কেবিসির (KBC) আড়ালে 'অসাধু ব্যবসা' করছে স্টার ইন্ডিয়া আর এয়ারটেল (Airtel)। সেই জনপ্রিয় শো-এর তৃতীয় সিজনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ওই মামলা করা হয়েছিল। সেই রায়ের বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল স্টার ইন্ডিয়া আর ভারতী এয়ারটেল। সেই মামলার রায়ে বিচারপতি আর সুভাষ ও এমএম সান্তনাগৌড়ার ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, "কমিশনের তদন্তে উঠে আসা 'অসাধু ব্যবসা' তত্ত্ব, আইনের খাতায় ভাল উদ্দেশ্য না।"
জাতীয় গ্রাহক আদালত বা কনজিউমার ডিসপুট রিড্রেসাল কমিশনে দায়ের করা আবেদনে বলা হয়েছিল, ওই দুই সংস্থা গ্রাহক নিরাপত্তা আইন- ১৯৮৬- কে লঙ্ঘন করেছে। দর্শকমনে ভুয়ো ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল তারা। মূল অভিযোগের কেন্দ্র ছিল, সেই সিজনের বিশেষ পর্ব; হার সিট, হট সিট । এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য কেবিসি'র চূড়ান্ত পর্যায়ের জন্য নির্বাচিত প্রতিযোগীরা, যে আসনে বসতেন, তাকে হট সিট বলা হতো। সেবার সিজন-থ্রি চলাকালীন অতিরিক্ত একটা পর্ব যোগ করা হয়েছিল, 'হার সিট, হট সিট' নামে। যে সিজন ২০০৭ সালের জানুয়ারি থেকে অগাস্ট, প্রায় আট মাস চলেছিল। সেই সিজনের সঞ্চালক ছিলেন শাহরুখ খান।
কেন তাঁর ত্বক চকচকে, ফাঁস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
ওই সিজনে দর্শকদের আবেদন করা হয়েছিল ঘরে বসেই কেবিসি'র আসনে যোগদান করতে। কীভাবে? এই হার সিট হট সিট প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। সেই প্রতিযোগিতায়, প্রতি পর্বে একটা প্রশ্নের ৪টি সম্ভাব্য উত্তর টিভির পর্দায় ভেসে উঠত।.
স্টার প্লাসের দর্শকরা ইচ্ছুক থাকলে, সঠিক উত্তর এসএমএস করে পাঠাতে পারতেন। এয়ারটেল, বিএসএনএল, এমটিএনএল গ্রাহকদের জন্য বিশেষ এই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। একাধিক সঠিক উত্তরের মধ্যে থেকে লটারির মাধ্যমে বিজেতা নির্বাচন করে, তাঁকে পুরস্কারমূল্য ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হতো। এটাই ছিল সেই বিশেষ পর্বের নিয়ম।
'কোহিনূর নয়, ফেভিকল নিয়ে যেত..', ব্রিটিশ রাজ পরিবারকে নিয়ে টুইট করল Fevicol
এবার এয়ারটেল আর স্টার ইন্ডিয়ার আবেদনে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, একটা মেসেজ পাঠাতে সাধারণ দরের চেয়ে বেশি দর দিতে হতো এয়ারটেল গ্রাহকদের। জানা গেছে, প্রতি এসএমএস পিছু, ২ টাকা ৪০ পয়সা নিত এয়ারটেল। এদিকে অভিযোগ, সেই টাকা থেকেই পুরস্কারমূল্য দেওয়া হতো আর অতিরিক্ত অর্থ স্টার ইন্ডিয়ার সঙ্গে ভাগ করে নিত এয়ারটেল। ফলে গ্রাহক আদালত তাদের রায়ে বলেছিল এসএমএস চার্জের আয় থেকে ওই দুই সংস্থা যেহেতু পুরস্কার অর্থ প্রদান করত, তাই স্টার ইন্ডিয়া আর এয়ারটেল 'অসাধু ব্যবসার' অংশীদার ছিল। সে জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ যৌথভাবে আবেদনকারীকে এক কোটি মেটাতে হবে। এমনটাই রায় দিয়েছিল সেই আদালত। সেই রায়ের বিরোধিতায় করা আবেদন সুপ্রিম কোর্টের এজলাসে এসে পড়লে, শীর্ষ আদালত বলেছে, কোনও প্রমাণ নেই এসএমএস-এর আয় থেকে দেওয়া হতো পুরস্কারমূল্য। ফলে খারিজ করে দিয়েছে গ্রাহক আদালতের রায়। যা স্বস্তি দিয়েছে ওই দুই বহুজাতিক সংস্থাকে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, আগে কেবিসি স্টার প্লাসে হলেও এখন সোনি চ্যানেল সম্প্রচার করে এই জনপ্রিয় গেম শো।