দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী।
কোঝিকড়: পর্যাপ্ত জ্বালানি নিয়েই কোঝিকোড় বিমানবন্দরে (Kozhikode Airport) অবতরণ করছিল দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমান। শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এই কথা বললেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। পাশাপাশি এই দুর্ঘটনা (Air India Express plane crash) নিয়ে একাধিক তত্ত্ব রটছে। সেই রটনা থেকে মুখ ফিরিয়ে এদিন ধৈর্য ধরতে বার্তা পাঠান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী (Civil Aviation Minister) বলেছেন, "আমি এয়ার ইন্ডিয়ার সিএমডি'র সঙ্গে কথা বলেছি। প্রশ্ন করেছি পাইলটের কাছে কতটা জ্বালানি ছিল? উত্তর ছিল, পর্যাপ্ত। অর্থাৎ অন্য কোথাও এই বিমান অবতরণ করানোই যেত। কিন্তু আমাদের এখন অপেক্ষা করতে হবে। তদন্ত শেষ করতে দিতে হবে।" সংবাদমাধ্যমের একাংশকে দুষে তিনি বলেছেন, "সংবাদে একাধিক তত্ত্ব উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে উনি দু'বার অবতরণের উদ্যোগ নিয়েছিল। বৃষ্টি বা হাওয়া, সেই উদ্যোগে বাধা দিয়েছে। আসল তত্ত্ব কোনটা? সেটা তদন্ত সাপেক্ষ।"
এদিন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংবাদমাধ্যমকে এই মন্ত্রী আরও বলেছেন, "মর্মাহত। যে ১৮ জন মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে আমরা সমব্যাথী। মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ ক্ষতিপূরণ আর গুরুতর আহতদের ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। লঘু জখমের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।" দেখুন তাঁর টুইট:
এদিকে, ঠিক কী করে ঘটল কেরলের কোঝিকোড় বিমানবন্দরে ভয়ঙ্কর ওই বিমান দুর্ঘটনা? ঠিক দুর্ঘটনার আগে কী বলছিলেন বিমানের পাইলট ও সহযোগী পাইলট? তাঁরা কি বুঝতে পেরেছিলেন শুক্রবার সন্ধেবেলা প্রবল বৃষ্টির মধ্যে বিমান অবতরণের চেষ্টা বিপজ্জনক হতে পারে? এই সব প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে কেরলের কোঝিকোড় বিমানবন্দরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস বিমানটির ব্ল্যাক বক্স (Black boxes) থেকে, কেননা তার মধ্যে থাকা ডেটা রেকর্ডারটিই জবাব দেবে শেষমুহূর্তের পরিস্থিতি ঠিক কী হয়েছিল। ব্ল্যাক বক্সের মধ্যে থাকে দুটি রেকর্ডার- একটি ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (ডিএফডিআর) এবং একটি ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর)। ডিএফডিআর বিমানটি কোন উচ্চতায় উড়ছিল, তার অবস্থান কোথায় ছিল এবং বিমানের গতি কী ছিল সেই সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ করে। পাশাপাশি সিভিআর বিমান চালকদের মধ্যে হওয়া সমস্ত কথোপকথনের রেকর্ড রাখে। উদ্ধার হওয়া এই ব্ল্যাকবক্সের থেকে দুর্ঘটনার তদন্তে নামা আধিকারিকরা দুর্ঘটনার আগের প্রতিটা মুহূর্তের বিষয় জানতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃত ১৮ জন। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ১২৭ জন।
দুবাই থেকে যাত্রীদের নিয়ে বিমানটি ভারতে ফিরছিল। শুক্রবার রাত ৭:৪১ মিনিটে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ৩৫ ফুট দূরে ছিটকে পড়ে বিমানটি। ওই বিমানটিতে ২ পাইলট ও বিমানকর্মী সহ মোট ১৯০ জন সওয়ার হয়েছিলেন।
কেরলের কোঝিকোড়েতে ওই বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান দুই পাইলট সহ মোট ১৮ জন। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি এই বিমান দুর্ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি, রাত ৭.৪১ নাগাদ রানওয়েতে নামার সময় চাকা পিছলে গিয়ে ৩৫ ফুট দূরে ছিটকে পড়ে। জানা গেছে, দুর্ঘটনার আগে পাইলটরা বিমানটি দু'বার অবতরণের চেষ্টা করেও নামতে পারেনি। তৃতীয়বার অর্থাৎ চূড়ান্ত অবতরণের সময়ই ঘটে যায় ওই দুর্ঘটনা।
"আবহাওয়ার রাডার অনুযায়ী, রানওয়ে ২৮-এ অবতরণের কথা ছিল বিমানটির, কিন্তু দু'বার অবতরণের সমস্যা হওয়ায় পাইলটরা রানওয়ে ১০-এ নামার চেষ্টা করতে গেলে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে",জানিয়েছে ডিজিসিএ।
হেল্পলাইনস: Air India Express - 1800 2222 71, Airport Control Room - 0483 2719493, Malappuram Collectorate - 0483 2736320, Kozhikode Collectorate - 0495 2376901