মার্কিন মুলুকে (Killed In US) এক ভারতীয় শিশুর মৃত্যুর ঘটনায়(Indian Toddler death) চাঞ্চল্য ছড়াল।শেরিন ম্যাথিউজ নামে বছর তিনেকের মৃত শিশুটির দেহ মর্গে পৌঁছনোর পর চিকিৎসার শব ব্যবচ্ছেদের সময় দেখেন তাঁর শরীরের ভিতরে ম্যাগট বাসা বেঁধেছে, শিশুটির অঙ্গের বেশ কিছুটা অংশও খেয়ে নেয় তাঁরা।ওই ঘটনায় শিশুটির বাবা(Child's foster father) ওয়েসলি ম্যাথিউজকে দোষী সাব্যস্ত(pleaded guilty ) করা হয়েছে।ওয়েসলি ম্যাথিউজ শিশুটির নিজের বাবা নন, জানা গেছে, তিনি শিশুটিকে পালন করতেন।ওই শিশুটির বাবা ৩৯ বছরের ম্যাথিউজ আদালতকে এক স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন,গ্যারেজে মেয়েকে দুধ পান করানোর সময়েই তাঁর গলায় দুধ আটকে গিয়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় শেরিনের।যদিও তিনি প্রাথমিক জেরায় জানিয়েছিলেন, তাঁর মেয়ে দুধ পান করতে অস্বীকার করায় তিনি তাঁকে রাত ৩টের সময় ঘরের পিছনের দিকে একটি গাছতলায় রেখে আসেন এবং মিনিট ১৫ পর তিনি গিয়ে আর মেয়েকে সেখানে খুঁজে পাননি।কিন্তু তাঁর ওই কথার সপ্তাহ দুয়েক পর বাড়ির কাছের একটি কালভার্টের নিচে থেকে খুঁজে পাওয়া যায়। তখনই শিশুটার বাবা তাঁর আগের বয়ান থেকে সরে এসে বলেন, মেয়েকে দুধ পান করানোর জন্যে জবরদস্তি করার সময় তাঁর গলায় দুধ আটকে গিয়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু(Indian Toddler death) হয়।
ওয়েসলি ম্যাথিউজ এবং তাঁর স্ত্রী শিনি ম্যাথিউজ দুজনেই মূলত কেরালার মানুষ। ২০১৬ সালে তাঁরা বিহারের একটি অনাথ আশ্রম থেকে শেরিনকে দত্তক নেন বলে জানা গেছে।
ডঃ এলিজাবেথ ভেনটুরা যিনি ২০১৭-র অক্টোবরে ওই শিশুটির শব ব্যবচ্ছেদ করেছিলেন তিনিও সাক্ষ্য দিতে আসেন। তিনি জানিয়েছেন, কিভাবে শিশুটির মৃত্যু হয়েছিল তার সঠিক কারণ অনুসন্ধার করা সম্ভব হয়নি কেননা শিশুটির দেহটি অত্যন্ত বিকৃত হয়ে গিয়েছিল এবং তাতে পচন ধরে গেছিল।তিনি বিচারকদের জানান, যখন শিশুটির দেহ উদ্ধার হয় তখন তাতে ম্যাগট বাসা বেঁধেছিল এবং শিশুটির অঙ্গের অনেকটাই খেয়ে নিয়েছিল।শিশুটির হৃদয় ও ফুসফুসের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ খোঁজা সম্ভব হয়নি।তবে তাঁর অনুমান গার্হস্থ্য হিংসার কারণেই মৃত্যু হয়েছে শিশুটির।
দুধ খেতে গিয়েই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, বাবা ম্যাথিউজের(Child's foster father) এই বয়ানের সঙ্গে একমত হননি প্যাথোলজিস্টও। দুধ খেতে গিয়ে এই মৃত্যু হয়েছে একথা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলেও বিচারকদের জানান তিনি।শুধু তাই নয়, শিশুটির গায়ে যেসব দাগের সন্ধান মিলেছে তাতে অনুমান করা যায় যে শিশুটিকে খুনই(Indian Toddler death) করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিতসকরা।এমনকি শিশুটির শরীরে নির্যাতনের চিহ্নও মিলেছে বলে দাবি তাঁদের।এছাড়া পরীক্ষা করে দেখা গেছে ৮ মাসের মধ্যে শিশুটির ৫বার হাড় ভেঙেছিল।এরপরেই সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে শেরিনের বাবার বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়।
জেরায় শিশুটির মা ওয়েসলি ম্যাথিউজ বলেন, প্রথমে ভয়ে শিশুটির মৃত্যুর কথা কাউকে জানাননি তাঁর বাবা(Child's foster father) । এছাড়া তিনি এও ভেবেছিলেন হয়তো শিশুটি বেঁচে উঠবে, সে জন্যে প্রার্থনাও করেছিলেন তিনি।কিন্তু মেয়ে মারা গেছে বুঝতে পেরে তিনি প্রার্থনা করেন যে একটি বিষধর সাপ তাঁকে কামড়াক তাহলে তিনি মরে গিয়ে মেয়ের কাছে যেতে পারবেন।পরে তিনি শিশুটির দেহ ওই কালভার্টের তলায় লুকিয়ে রাখেন।“আমি মানতে নারাজ ছিলাম যে আমার মেয়ের মৃ্ত্যু ঘটেছে”, বলেন মৃত শেরিনের বাবা।
শিশুটির বাবা(Child's foster father) এও জানায় যে, শিশুটির মৃত্যুর পর তাঁর দেহ বাইরে ফেলে এসে নিজের মেয়ের সঙ্গে একসঙ্গে রাতের খাবারও খান তাঁরা। আদালত শিশুটির মার বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করে, কিন্তু উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে শাস্তির হাত থেকে রেহাই পেয়ে যান মৃত শিশুটির(Indian Toddler death)মা।