কলকাতার ব্রাজিলের সমর্থকরা প্রায় ধরেই নিয়েছে, এই বছরের বিশ্বকাপটা পাচ্ছে তাদেরই দল।
কলকাতা: ‘ফুটবল’ বলতেই এই দেশের যে শহরটির কথা প্রথমেই মনে আসে, তা হল- কলকাতা। এই শহরে, এমনিতে, ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার সমর্থকই বেশি। কিন্তু, এই বছরের রাশিয়া বিশ্বকাপে স্পেন, জার্মানি, আর্জেন্টিনার মতো দলগুলি আগেই বিদায় নিয়ে নেওয়ায় ফুটবলের শহরে ভালোবাসা পড়ে আছে কেবলই ব্রাজিলের জন্য। অথবা, যা দ্বন্দ্ব, তাও যেন কেবল ব্রাজিলকেই ঘিরে। শুক্রবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। কলকাতার ফুটবল সমর্থকরা এখন তাই ভাগ হয়ে গিয়েছে দু’তরফে। ব্রাজিলের পক্ষে এবং ব্রাজিলের বিরুদ্ধে।
27 বছর বয়সী আর্জেন্টিনার সমর্থক সিদ্ধার্থ মাইতি এই ম্যাচটিতে বেলজিয়ামকে সমর্থন করবেন বলে জানালেন। এই ব্যাপারটি নিয়ে তিনি খুব পরিষ্কার যে, অন্য যে কোনও দলকে সমর্থন করতে পারেন তিনি। কিন্তু, কোনওভাবেই ব্রাজিলকে নয়।
“আমি বরাবরই ব্রাজিল বিরোধী। ব্রাজিল যদি এবারের বিশ্বকাপটা জেতে, তাহলে আমি আরও বেশি দুঃখ পাব। সত্যি বলতে, আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ না পেলে, কারও পাওয়া উচিত না! আর্জেন্টিনা বেরিয়ে গেছে যখন, ব্রাজিলেরও বেরিয়ে যাওয়া উচিত”, বলেন তিনি।
ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মধ্যে এই যুযুধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা নতুন কিছু নয়। বিশ্বকাপের সময়, অন্তত এই দুই দলের বাঙালি সমর্থকদের মধ্যে আলোচনা দেখলে মনে হয়, আসল খেলাটা হয় আদতে মাঠের বাইরেই! কিন্তু, ঘটনা হল, আর্জেন্টিনা এই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর, ওই দলের সমর্থকরা এই বিশ্বকাপে দ্বিতীয় কোন দলকে সমর্থন জানাবেন, তা নিয়ে দ্বিধায়।
“আমি চাই লাতিন আমেরিকার কোনও দল জিতুক। সেটা উরুগুয়ে হতে পারে, ব্রাজিল হতে পারে। এটা না হলে, এই কাপটা আবার ইউরোপে চলে যাবে। যা আমি একদমই চাই না”, বললেন আর্জেন্টিনার সমর্থক সন্দীপ মিশ্র।
অন্যদিকে, ব্রাজিলের সমর্থকরা প্রায় ধরেই নিয়েছে, এই বছরের বিশ্বকাপটা পাচ্ছে তাদেরই দল।
“প্রায় সব বড়ো দলই তো বেরিয়ে গেল বিশ্বকাপ থেকে। ব্রাজিলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনও দল আর নেই সামনে। এই ধরনের বড়ো ম্যাচে সবসময়ই প্রচুর চাপের পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু, ব্রাজিল যদি সামনে পড়ে, তাহলে উল্টোদিকের দলটা মাঠে নামার আগেই 50 শতাংশ ম্যাচ হেরে বসে থাকে”, ব্রাজিল সমর্থক শুভদীপ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য এরকমই।
বহু দলকেই সমর্থন জানায় এই শহর, ফুটবলের প্রতি তার নিখাদ ভালোবাসাটি থেকেই। কিন্তু, ব্রাজিলের প্রতি টান কোথাও গিয়ে অনেকটাই আলাদা। একচল্লিশ বছর আগে খেলে যাওয়া এডসন আরেন্তেস দো নাসিমেন্তোর দেশের প্রতি এই শহরের ভালোবাসা কোনওদিনই হারায়নি তার চিরঅমলিনতা।