এক সময় দেশের অধিনায়কত্বও করেছেন, এখন প্লেয়ার হিসেবে দলটাকে নতুন করে দেখছেন মামুনুল
Mamunul Islam Mamun, কলকাতা ফুটবল এই নামের সঙ্গে ভীষণ ভাবে পরিচিত। উল্টো দিকে, কলকাতাও তাঁর ভীষণ কাছের। তাই, বার বার ফিরে আসতে ইচ্ছে করে। সুযোগ এলে, তা হাতছাড়া করতে চান না। কলকাতাই তাঁর ‘সেকেন্ড হোম'। সেই ‘বাড়ি'কে ঘিরে বাংলাদেশ ফুটবল দলের এই মিডফিল্ডারের অনেক স্মৃতি। পাঁচ বছর পর আবার কলকাতার মাটিতে পা রেখে তাই নস্টালজিক মামুনুল। এই ফুটবলই তো কত বার মিলিয়ে দিয়েছে দুই বাংলাকে। যুবভারতীর গ্যালারি থেকে যখন হুঙ্কার ভেসে আসে, তখন যেন মনে হয় তাঁর জন্যই চিৎকার করছেন সমর্থকরা। মঙ্গলবার বিশ্বকাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক পর্বে ভারতকে ১-১ গোলে আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ। মামুনুল এই ম্যাচে মাঠে নামেননি। কিন্তু, দলের খেলায় খুশি তিনি। তাঁর বিশ্বাস, যুবভারতী এই ৯০ মিনিট দারুণ উপভোগ করেছে।
প্র: কলকাতার মাটিতে ভারতকে আটকে দেওয়াটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ দলের জন্য?
মামুনুল: অনেকটাই। আমরা ভাল খেলেছি ভারতের বিরুদ্ধে। আমরা জিততেও পারতাম সুযোগ নষ্ট না করলে। তবে এই এক পয়েন্ট আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।
প্র: বাংলাদেশের ফুটবল ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে এই মুহূর্তে?
মামুনুল: ফুটবল কিছুটা বদলেছে। বাংলাদেশের ফুটবলও উন্নতি করছে। বিশেষ করে ক্লাব পর্যায়ে। এএফসি ক্লাব কাপে আবাহনী সেমিফাইনালে পৌঁছেছিল বড় ক্লাবকে হারিয়েই। যেখানে ভারতীয় ফুটবলে ক্লাবগুলোর রমরমা সবার জানা, আমরা তাদের হারিয়েছিলাম। তার পর থেকে এশিয়ার সেরা দলগুলোর মধ্যে আমাদের নাম ঢুকে পড়ে। কাতারের সঙ্গে ১-০ গোলে হারছিলাম, শেষে গোল হজম করতে হল। কিন্তু সেই ম্যাচটা আমরা ভাল খেলেছিলাম। এটাই প্রমাণ, আমরা উন্নতি করছি।
World Cup Qualifier 2022: বাংলাদেশের কাছে আটকে গেলেন ইগরের ছেলেরা
প্র: নতুন দায়িত্ব নেওয়া এই কোচ কতটা বাংলাদেশের ফুটবলে বদল আনতে পেরেছেন?
মামুনুল: এক বছর হল কোচ এসেছেন। তিনি আসায় অনেক কিছু বদলেছে। নতুন প্রজন্মকে তুলে এনেছেন। যুব প্রতিভারা দলে আসায় মরিয়া হয়ে সবাই সেরাটা দিচ্ছে। এই কোচ আমাদের দেশের জন্য যেমন সিস্টেমে খেলা সম্ভব, সেটাই নিয়ে এসেছেন দলের মধ্যে।
প্র: ভারতের সঙ্গে এই ফলটা প্রত্যাশিত ছিল?
মামুনুল: উপমহাদেশের সব দলই ৫০-৫০। আগাম বলা খুব মুশকিল, কে সেরা! র্যাঙ্কিং খুব একটা এ ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে না। তবে ভারত-বাংলাদেশ সব সময়ই হাইভোল্টেজ ম্যাচ। ওই ৯০ মিনিট যে সেরাটা দেবে, সেই জিতবে।
প্র: তা-ও বাংলাদেশের থেকে ভারতের ফুটবলকে এগিয়ে রাখা হয়?
মামুনুল:ভারত আমাদের থেকে এগিয়ে পরিকাঠামোতে। ভারতের ফুটবলের পরিবেশ বদলেছে। সেরা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে ভারতীয় ফুটবল দলকে। প্লেয়ারদের ক্ষেত্রে কিন্তু সুনীল ছেত্রী ছাড়া কোয়ালিটির দিক থেকে আমাদের আর ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।
![2vlanms8](data:image/svg+xml;base64,PD94bWwgdmVyc2lvbj0iMS4wIiBlbmNvZGluZz0idXRmLTgiPz4KPCEtLSBHZW5lcmF0b3I6IEFkb2JlIElsbHVzdHJhdG9yIDI0LjMuMCwgU1ZHIEV4cG9ydCBQbHVnLUluIC4gU1ZHIFZlcnNpb246IDYuMDAgQnVpbGQgMCkgIC0tPgo8c3ZnIHZlcnNpb249IjEuMSIgaWQ9IkxheWVyXzEiIHhtbG5zPSJodHRwOi8vd3d3LnczLm9yZy8yMDAwL3N2ZyIgeG1sbnM6eGxpbms9Imh0dHA6Ly93d3cudzMub3JnLzE5OTkveGxpbmsiIHg9IjBweCIgeT0iMHB4IgoJIHZpZXdCb3g9IjAgMCAxNDAgMTA2IiBzdHlsZT0iZW5hYmxlLWJhY2tncm91bmQ6bmV3IDAgMCAxNDAgMTA2OyIgeG1sOnNwYWNlPSJwcmVzZXJ2ZSI+CjxzdHlsZSB0eXBlPSJ0ZXh0L2NzcyI+Cgkuc3Qwe29wYWNpdHk6Ny4wMDAwMDBlLTAyO2ZpbGw6I0YxRjNGNzt9Cgkuc3Qxe29wYWNpdHk6MC4zNDtmaWxsOiNBRkFGQUY7ZW5hYmxlLWJhY2tncm91bmQ6bmV3ICAgIDt9Cjwvc3R5bGU+CjxyZWN0IGNsYXNzPSJzdDAiIHdpZHRoPSIxNDAiIGhlaWdodD0iMTA2Ii8+CjxkZXNjPkNyZWF0ZWQgd2l0aCBTa2V0Y2guPC9kZXNjPgo8cGF0aCBjbGFzcz0ic3QxIiBkPSJNMTAzLjcsNDYuMkw5OC4zLDU3bC01LjktMTAuN0g2My41aC0wLjRoLTguOXY0LjZjMS4yLDAuMywyLDEuNCwyLDIuNmMwLDEuMi0wLjksMi4yLTIsMi42djQuNmg4LjlsMCwwaDMKCWM0LjMsMCw2LjMtMi41LDYuMy02LjZ2LTEuNWMwLTAuNCwwLTEuNi0wLjMtMi44aDYuOHYxMWg0LjN2LTExaDYuMWw2LjEsMTFoNS41bDcuNy0xNC40SDEwMy43eiBNNjgsNTVjMCwxLjQtMC44LDIuMi0yLjYsMi4yaC0yCgloLTAuNGgtNC41di03LjZoNC45bDAsMGgyYzEuNywwLDIuNiwwLjksMi42LDIuMlY1NXoiLz4KPHBhdGggY2xhc3M9InN0MSIgZD0iTTUwLjgsNTMuNGMwLTEuMiwwLjktMi4zLDItMi42di00LjVoLTQuNXYxMC4yaC0wLjJjLTAuOSwwLTEuNS0xLTEuOC0xLjRsLTIuNS01Yy0xLjItMi40LTMuMi0zLjgtNS42LTMuOAoJaC00Ljd2MTQuNGg0LjZWNTAuNGgwLjJjMSwwLDEuNiwxLjEsMS44LDEuNGwyLjYsNWMxLjEsMi40LDMuMiwzLjgsNS41LDMuOGg0LjdWNTZDNTEuNiw1NS43LDUwLjgsNTQuNyw1MC44LDUzLjR6Ii8+Cjwvc3ZnPgo=)
প্র: কিন্তু এই ম্যাচে তো সুনীলকে খুঁজেই পাওয়া গেল না, সে কারণেই কি আপনারা কিছুটা এগিয়ে থাকলেন?
মামুনুল: একদমই না। যদি ভাল করে লক্ষ্য করেন, তা হলে দেখবেন, ভারতের পজিটিভ আক্রমণগুলো কিন্তু সুনীলের ভূমিকাতেই এসেছে। ওই আক্রমণ তৈরি করেছে।
প্র: ভারতের ফুটবলের যে বদলের কথা বলছেন সেটা বাংলাদেশ ফুটবলে আসছে না কেন?
মামুনুল: বাংলাদেশের ফুটবলও বদলাচ্ছে। আগে অনেক কম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতাম। এখন চেষ্টা করা হচ্ছে, বেশি করে খেলতে। ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে আসার আগে আমরা প্র্যাকটিস ম্যাচও খেলেছি; যেটা আগে হত না।
প্র: কী উন্নতি লক্ষ্য করছেন দলের খেলায়?
মামুনুল: সেটা কোয়ালিফায়ারের শেষে বুঝতে পারব। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন না করলেও এই খেলা থেকেও তো আমরা উন্নতি করতে পারি। গত বার কোয়ালিফায়ার থেকে যদি এক পয়েন্ট পেয়ে থাকি আর এ বার যদি তিন পয়েন্টে শেষ করি, তা হলে সেটাই আমাদের উন্নতি।
প্র: আপনি যখন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন, তখনও দল সাফল্য পেয়েছে। এই দলের সঙ্গে তার পার্থক্য কোথায়?
মামুনুল: আমি যখন অধিনায়ক ছিলাম তখন আমরা ‘অ্যাটাকিং ফুটবল' খেলতাম। বেশ কিছু ভাল ম্যাচ খেলেছি। এখন আমরা ‘কাউন্টার অ্যাটাক' নির্ভর ফুটবল খেলি। সেখানে বড় বড় ম্যাচে ফল পাচ্ছি। পার্থক্য এটাই। আসল তো রেজাল্ট।
World Cup Qualifiers, India Vs Bangladesh: ভারত-বাংলাদেশে ম্যাচ ১-১ ড্র
প্র: এত দিন পর আবার কলকাতায় এসে কতটা বদল দেখতে পাচ্ছেন?
মামুনুল: অনেক! পুরো স্টেডিয়ামটাই বদলে গিয়েছে। ঝাঁ-চকচকে, দারুণ মাঠ, অসম্ভব ভাল গ্যালারি, এক দম অন্য রকম। ২০১৪তে এটিকে-র হয়ে খেলে গিয়েছিলাম, তার পর আবার এই এলাম। পাঁচ বছরে পুরোটাই বদলে গিয়েছে।
প্র: আর সমর্থক?
মামুনুল: কলকাতার ফুটবল নিয়ে পাগলামির কথা গোটা বিশ্ব জানে। সেটা বদলায়নি। একই আছে। আর ওঁরা যখন গ্যালারি থেকে চিৎকার করেন, তখন মনে হয় আমার জন্য করছে। আর এটাই চাগিয়ে দেয়।
প্র: এই ম্যাচটা নিয়ে কী বলবেন, বাংলাদেশ কোথায় এগিয়ে থাকল ভারতের থেকে?
মামুনুল: আমরা কোনও সুযোগ দিইনি ভারতকে। সুযোগ কাজে লাগিয়েছি। আবার অনেক সুযোগ কাজেও লাগাতে পারিনি। ভারত তেমন ভাবে সুযোগ পায়নি। ছেত্রীর নিশ্চিত গোল দুটো সেভ হয়ে যাওয়াটাই আমাদের খেলায় ভীষণ ভাবে রেখে দিয়েছিল।
প্র: কলকাতার দর্শকদের দেখে কী মনে হল, ভারত আটকে যাওয়ায় হতাশ?
মামুনুল: না, আমার মনে হয় আমাদের ৯০ মিনিটের ফুটবল দেখে তাঁরা খুশি। কলকাতার ৫০ শতাংশ মানুষই তো বাংলাদেশের। সামনাসামনি সমর্থন করতে না পারলেও মনে মনে নিশ্চয়ই করে (হাসি)।
প্র: এত দিন পর কলকাতায় ফিরে কেমন লাগল?
মামুনুল: কলকাতা আমার ‘সেকেন্ড হোম'। এখানে এলে মনে হয় সবাই কাছের মানুষ। পাঁচ বছর আগে যখন আইএফএ শিল্ড খেলতে এসেছিলাম, সেটাই আমার কলকাতার ফুটবলের সঙ্গে পরিচয়। সেই সময় যিনি আমাদের কমিউনিকেশন ম্যানেজার ছিলেন, এ বারও তিনি ছিলেন। আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরলেন, এটাই তো প্রাপ্তি। ফুটবল খেলার। ফুটবলার হিসেবে ভালবাসা পাওয়ার।