শোভাবাজার রাজিবাড়ির পুজো
কলকাতা: তখন সবে পলাশির যুদ্ধ শেষ হয়েছে। রাজা নবকৃষ্ণ দেব শোভাবাজার রাজবাড়িতে (Sovabazar Rajbari) আরম্ভ করেন দুর্গা পুজো। সেই শুরু। যুগ বদলেছে। কালের নিয়মে বদলেছে রাজবাড়ির অনেক রীতিনীতিও। কিন্তু শোভাবাজার রাজবাড়িতে প্রতিবছর দুর্গাপুজোর সময় আজও মা নাকি ‘মিঠাই' খেতে আসেন, এমন প্রবাদ বাঙালির ঘরে ঘরে প্রচলিত। ২৬০ বছরেরও বেশি প্রাচীন এই পুজো অবশ্য এখন শরিকি হয়ে গেছে। মায়ের পুজোর পালা পড়ে ঘোষ, মিত্র, দেব পরিবারে। কিন্তু বনেদিয়ানা, সাবেকি আভিজাত্যে (Traditional Durga Puja) একটুও চিড় ধরেনি।
আজও প্রধান রাজবাড়ি হিসেবে প্রচলিত এই বাড়িতে সাজসাজ রব শুরু হয় পুজো এলেই। দ্বারের দুপাশে কলাগাছ, মঙ্গল কলস বসে। বাইরে থেকে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান সাবেকি প্রতিমা দেখতে।
পেতলের থালায় করে ভোগ দেওয়া হয় রকমারি। প্রতিদিন থরে থরে যত্ন করে মায়ের উদ্দেশ্যে এই নৈবেদ্য নিবেদন করা হয়।
আর মায়ের ভোগ হিসেবে বাড়িতে ভিয়েন বসিয়ে তৈরি হয় নানা রকমের মিঠাই। তৈরি হয়ে দরবেশ, খাজা, গজা, পান্তুয়া, জিলিপি-র মতো শুকনো মিষ্টি। মাকে দেব পরিবার অন্ন দেন না।
আগে রাজবাড়িতে বলির চল ছিল। বিশেষ কারণে পরে সেই বলিপ্রথা বন্ধ হয়ে যায়। যে বছর যাঁর পুজোর পালা পড়ে তাঁকে পুজোর ক-দিন নিরামিষ খেয়ে থাকতে হয়। পুজোর দিনগুলোয় আমিষ ছোঁন না কেউ। কারণ, দেব বাড়ির আরাধ্য দেবতা যে রাধাগোবিন্দ।