This Article is From Jun 27, 2020

বিরল ঘটনা! ৩০ বছর পেরিয়ে মহিলা জানলেন আসলে তিনি "পুরুষ"

জন্ম থেকেই একটি বিরল রোগের শিকার তিনি, এর ফলে একটি শিশু জেনেটিকালি পুরুষ হিসাবেই জন্ম নেয় কিন্তু তার মধ্যে একজন মহিলার সমস্ত শারীরিক বৈশিষ্ট্য থাকে

বিরল ঘটনা! ৩০ বছর পেরিয়ে মহিলা জানলেন আসলে তিনি

Woman Turns Out to be Man: একটি বিরল রোগের ফলেই এই ঘটনা, জানিয়েছেন চিকিৎসকরা (প্রতীকী চিত্র)

হাইলাইটস

  • জন্ম থেকেই বিরল রোগের শিকার, শরীরের ভিতরে পুরুষাঙ্গ
  • বাইরে থেকে শারীরিক বিকাশ সব মহিলাদের মতোই
  • বীরভূমের এক বাসিন্দার শরীরে ধরা পড়ল এই রোগ
কলকাতা:

দেখতে-শুনতে, আচারে-ব্যবহারে, শারীরিক গঠনে পুরোপুরি একজন নারী হিসাবেই ৩০ টি বসন্ত পার করে ফেলেছিলেন বীরভূমের বাসিন্দা। গোল বাঁধলো হঠাৎ করে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হওয়ায়। এই লকডাউনের মধ্যেই অনেক হ্যাপা সামলে মহিলাকে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসকরা যা জানালেন তাতে চক্ষু চড়কগাছ মহিলার। চিকিৎসকরা জানালেন, টেস্টিকুলার ক্যান্সারে ভুগছেন তিনি। অর্থাৎ তিনি জিনগতভাবে আসলে পুরুষ। কারণ পুরুষদের যৌনাঙ্গের ক্যান্সারেরই একটি প্রকার হল টেস্টিকুলার ক্যান্সার। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন এই ধরণের ক্যান্সার (Woman with Testicular Cancer) শারীরিকগঠনের কারণেই কোনও মহিলার হওয়া সম্ভব নয়। ক্লিনিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট ডঃ অনুপম দত্ত এবং সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট ডঃ সৌমেন দাস মহিলার শরীরের যাবতীয় পরীক্ষার পর জানতে পারেন, আসলে জন্ম থেকেই 'অ্যান্ড্রোজেন সেনসিটিভিটি সিন্ড্রোম' (Androgen Insensitivity Syndrome) নামে একটি বিরল রোগের শিকার তিনি। প্রতি ২২ হাজার মানুষর মধ্যে ১ জনের শরীরে এমন রোগ থাকে। এর ফলে একটি শিশু জেনেটিকালি পুরুষ হিসাবেই জন্ম নেয় কিন্তু তার মধ্যে একজন মহিলার সমস্ত শারীরিক বৈশিষ্ট্য থাকে।

৯ বছর আগে ওই মহিলার বিয়ে হয়। চিকিৎসকদের কথায়, তাঁর সঙ্গে কথা বললে বা তাঁকে দেখলে কারোও মনেই এই সন্দেহ জাগার কথা নয় যে তিনি জেনেটিক্যালি পুরুষ। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে ডঃ অনুপম দত্ত বলেন, "ওনাকে দেখলে বা ওনার কণ্ঠস্বর শুনলে আপনার কোনওভাবেই মনে হবে না যে উনি জেনেটিক্যালি পুরুষ। স্তন থেকে শুরু করে জননেন্দ্রিয়, একজন নারীর মতো সব কিছুই রয়েছে তাঁর শরীরে। কিন্তু জন্মের সময় থেকেই তাঁর জরায়ু এবং ডিম্বাশয় কোনওটাই ছিল না। এমনকী জীবনে কখনও ঋতুস্রাবও হয়নি তাঁর।"

"ওঁর খুব পেটে যন্ত্রণা হওয়ার কারণে আমরা বেশ কিছু ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করে দেখি। কিন্তু তাতে দেখা যায়, ওঁর শরীরে অণ্ডকোষ রয়েছে। বায়োপসি করানো হয়। তারপরই ধরা পড়ে যে, তিনি আসলে টেস্টিকুলার ক্যানসারে আক্রান্ত", একথাও বলেন ওই চিকিৎসক।

বর্তমানে ওই ব্যক্তির শরীরে কেমোথেরাপি চলছে এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।

কিন্তু যিনি এতদিন মহিলা হিসাবে নিজেকে জেনে এসেছেন, হঠাৎ করে তাঁর শরীরে পুরুষত্বের প্রমাণ মেলায় কতটা স্বাভাবিক থাকতে পারবেন তিনি ও তাঁর পরিবার, এসম্পর্কে চিকিৎসকদের প্রশ্ন করা হলে তাঁরা জানান, "হ্যাঁ, একজন মহিলা হিসেবেই বড় হয়েছেন তিনি। প্রায় এক দশক ধরে বিবাহিত জীবনও কাটিয়েছেন তিনি। তাই আমরা এখন তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে পরামর্শ দিয়েছি, যে ভাবে এতগুলো বছর তাঁরা দাম্পত্য জীবন কাটিয়ে এসেছেন, ঠিক সেই ভাবেই বাকি জীবনটা যেন কাটান তাঁরা।" 

জানা গেছে, ওই দম্পতি গত কয়েকবছর ধরে বেশ কয়েকবার গর্ভধারণের চেষ্টা করলেও সফল হচ্ছিলেন না। তবে বর্তমানে জানা গেল তার আসল কারণ।

সম্ভবত এই রোগটি জিনগত, একথাও বলেন চিকিৎসক অনুপম দত্ত। "ওঁর দুই মাসিরও এই একই ধরনের রোগ ছিল। অর্থাৎ তাঁরাও অ্যান্ড্রোজেন ইনসেন্সিটিভিটি রোগাক্রান্ত ছিলেন। সম্ভবত এই রোগটি জিনগতই। এর থেকে বেশি আমরা বিরল এই রোগটির ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কিছু জানতে পারিনি", জানান চিকিৎসক।

.