২০১৭ সালে ছাত্র নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে রণক্ষেত্র হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। তারপর থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ ছিল নির্বাচন প্রক্রিয়া। সব বাধা পেরিয়ে শেষপর্যন্ত দীর্ঘ ৩ বছর পর বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নির্বাচন প্রক্রিয়া (Jadavpur University Election) সম্পন্ন হতে চলেছে। তবে এই প্রথমবার ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা এবিভিপি। বিজেপির আদর্শগত পরামর্শদাতা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) ছাত্র সংগঠনই হল অখিল ভারতীয় ছাত্র পরিষদ (ABVP)। এবিভিপি ছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের(Jadavpur University) ছাত্র সংগঠনের নির্বাচনে অংশ নেবে এসএফআই, সিপিআইয়ের এআইএসএ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ, ডিএসও এবং আরপিএফ।
জানা গেছে, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় প্যানেলে ১৩ টি আসনের মধ্যে ৯টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে এবিভিপি বা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া বা এসএফআই এবং আরও কিছু ছাত্র সংগঠনের থেকেও বেশি প্রার্থী দিচ্ছে তারা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৩ বছরের মধ্যে এই প্রথম ছাত্র ইউনিয়ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০১৭ সালে, নির্বাচন চলাকালীন রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস গুলিতে চরম হিংসা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পর, শিক্ষা বিভাগ ছাত্র ইউনিয়ন নির্বাচন আপাতভাবে নিষিদ্ধ করে দেয়। তার পরিবর্তে অ্যাপোলিটিক্যাল ছাত্র পরিষদ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আপত্তি জানান পড়ুয়ারা। ছাত্র ইউনিয়ন নির্বাচনের দাবিতে তিন বছরের বিক্ষোভের পরে ফের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই নির্বাচন করার অনুমতি মিলেছে।
কলা বিভাগের ৪টি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৫টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে এবিভিপি। তবে বিজ্ঞান বিভাগের ৪ টি আসনে কোনও প্রার্থী দেয়নি তাঁরা। ২০১৭ সালেও, এবিভিপি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কয়েকটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল তবে এবিভিপি হিসাবে নয়,অন্য একটি ব্যানারের অধীনে ওই নির্বাচনে লড়েছিল তাঁরা।
যাদবপুরের ছাত্র সংগঠনের নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার আবেদন জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মতে এই প্রথম ছাত্র ভোটকে কেন্দ্র করে কোন উপাচার্য শান্তি রক্ষার আবেদন জানালেন।
বৈঠকে গিয়ে যাদবপুরে কালো পতাকা দেখলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়
গত সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় যাদবপুরে আসার পর যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল সেই ঘটনায়ই বেশি ভাবাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। সেই ঘটনায় এবিভিপি উপর ছাত্র সংসদ অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ভোটে যে সহযোগিতা ও গঠনমূলক ঐতিহ্য রয়েছে এবারেও তা বজায় থাকবে এবং শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোট হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস।