কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়েছে, পাকিস্তান কুলভূষণ যাদবকে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় কার্যকর করার অধিকার থেকে বঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছে
নয়াদিল্লি: কুলভূষণ যাদবকে (Kulbhushan Yadav) দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় পুর্নবিবেচনা করতে চান না তিনি নিজেই, এবং প্রাণভিক্ষার আর্জি জানাতে ইচ্ছুক বলে দাবি করেছে পাকিস্তান (Pakistan) । তারই উত্তরে ভারতের তরফে বলা হল, “গত চার বছর ধরে চলা নিরবিচ্ছিন্ন প্রহসন”। বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, “বিচারের নামে প্রসহন করে কুলভূষণ য়াদবকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন। তাঁর মামলার পুর্বিবেচনার আর্জি না জানানোর জন্য কুলভূষণ যাদবকে জোর করা হয়েছে”। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে আরও বলা হয়েছে, “তরিঘরি নির্লজ্জভাবে তাঁর অধ্যাদেশের আওতায় যথাযথ সুরক্ষা আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে, পাকিস্তান আবশ্যিকভাবেই কুলভূষণ যাদবকে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় কার্যকর করার অধিকার থেকে বঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছে”।
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল আহমেদ ইরফান বলেন, ১৭ জুন কুলভূষণ যাদবকে পুর্নবিবেচনার আর্জি জানানোর আহ্বান জানানো হয়। তবে তিনি, “বকেয়া প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানোকেই অগ্রাধিকার দেন”। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান তাঁকে দ্বিতীয়বার কূটনৈতিক পরামর্শের প্রস্তাব দিয়েছে।
গত বছরের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক আদালত জানায়, কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ পুনর্বিবেচনা করতে হবে পাকিস্তানকে, এবং ততক্ষণ পর্যন্ত তা স্থগিত রাখতে হবে। বদ্ধভাবে বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে তাঁকে সাজা দিয়ে, এবং কূটনৈতিক সহায়তার অনুমতি না দিয়ে পাকিস্তান ভিয়েনা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে বলে ভারতের অবস্থানের সঙ্গে সহমত হয় আন্তর্জাতিক আদালত।
২০২০ এর ২০মে, পাকিস্তান একটি অধ্যাদেশ জারি করে সেনা আদালতের দেওয়া রায়ের পুনর্বিবেচনার জন্য হাইকোর্টকে অনুমতি দেয়।
বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতের যুক্তির সামনে, পাকিস্তানের দাবি, তাদের আইনে, “কার্যকরী পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং পুনরায় বিবেচনা করতে দেওয়া হবে”। এখন প্রায় একবছর পর, “তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুতে গিয়ে, পুনর্বিবেচনার নামে সামান্য কিছু করার জন্য অধ্যাদেশ জারি করেছে”।
২০১৬ সালের মার্চে পাকিস্তানের হাতে গ্রেফতার হন ভারতের প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিক কুলভূষণ যাদব, তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ তোলা হয়, যা খারিজ করেছে ভারত। এক বছর পর, তাঁর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় পাক সেনা আদালত। ২০১৭ এর এপ্রিলে, আন্তর্জাতিক আদালতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ভারত এবং পরের মাসে, কুলভূষণ যাদবের শাস্তি স্থগিত হয়ে যায়।
পাকিস্তানের দাবি, কুলভূষণ যাদবকে বেলুচিস্তান থেকে গ্রেফতার করা হয়, ভারতের তরফে বলা হয়, তাঁকে ইরান থেকে অপহরণ করা হয়েছে, সেখানে নৌসেনা থেকে অবসরের পর, ব্যবসা করতেন তিনি।