বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, এই তথ্য বিজেপিকে নতুন নাগরিক পঞ্জির জন্য আওয়াজ তুলতে সাহায্য করবে।
এনসিআরবি তথা ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি বিদেশি সাজাপ্রাপ্ত আসামী রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। এই তথ্য বিজেপির রাজ্যে এনআরসি রূপায়ণের দাবিকে আরও তীব্র করবে। উৎসবের মরশুম শেষে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে এই তথ্য সামনে রেখে এনআরসির দাবি আরও জোরদার করার পরিকল্পনা করছে গেরুয়া শিবির। ২০১৭ সালের এনআরসিবির তথ্য অনুযায়ী, দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি বিদেশি সাজাপ্রাপ্ত আসামী রয়েছে রাজ্যে। দেশের মোট বিদেশি অপরাধীর সংখ্যার হারে পশ্চিমবঙ্গের হার ৬১.৯ শতাংশ। দেশের মধ্যে সর্বাধিক।
তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের পরে রয়েছে মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশ। ওই দুই রাজ্যে এই হার যথাক্রমে ৭ ও ৬.৮ শতাংশ। তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, কেবল বাংলাদেশ থেকেই বন্দি ১,৪০৩ জনের মধ্যে ১,২৮৪ জনই পশ্চিমবঙ্গে বন্দি রয়েছেন।
কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি জঙ্গিদের
বিজেপির দাবি, এই পরিসংখ্যান গুরুতর ইঙ্গিতবাহী। এর থেকে স্পষ্ট রাজ্যে এনআরসি রূপায়ণ অত্যন্ত জরুরি। তাদের মতে, তৃণমূল কংগ্রেসের দৌলতে রাজ্য ‘জিহাদি ও অনুপ্রবেশকারীদের নিশ্চিন্ত আশ্রয়' হয়ে উঠেছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা গত কয়েক বছর ধরে এই কথাটাই বলে আসছিলাম। কিন্তু যখনই আমরা এই ইস্যু তুলেছি আমাদের সাম্প্রদায়িক বলা হয়েছে। এমসিআরবি-র পরিসংখ্যান প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ থেকে ক্রমান্বয়ে বেআইনি অনুপ্রবেশ আমাদের জাতীয় সুরক্ষার পরিপন্থী হয়ে উঠেছে। এই তথ্য আমাদের সাহায্য করবে এনআরসির দাবিকে জোরদার করতে।''
জম্মু ও কাশ্মীরে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুললেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক সাংসদ
পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত প্রদেশে বাংলাদেশের সীমান্তরেখা ২,২১৬.৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের। এর একটা বড় অংশেই কোনও পাঁচিল বা বেড়া নেই।
দিলীপ ঘোষের সুরে সুর মিলিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানাচ্ছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ কেবল একমাত্র রাজ্য নয়, যাদের সীমান্তে বাংলাদেশ রয়েছে। অসম বা ত্রিপুরার মতো রাজ্যেরও আছে। কিন্তু আপনি এমন এক রাজ্য সরকার বা শাসক দলকে পাবেন না যারা কেবল ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেয়। তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গে এই কাজে দক্ষতা দেখিয়েছে।''
রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, কেবল ২০১৭ সালের এনসিআরবি তথ্যই নয়, গেরুয়া শিবির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে বিএসএফ-এর তথ্যও। যেখানে বলা হয়েছে, ২০১৯ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখায় এযাবৎ ১,৩৬৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, অসমের নাগরিক পঞ্জিতে ১৯ লক্ষ লোকের নাম বাদ গিয়েছে। তার অধিকাংশই হিন্দু নাগরিক। এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর রাজ্যে বিজেপির পালের হাওয়া কিছুটা কেড়ে নিয়েছে। তাঁর দাবি, এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৯-এর কথা বলছে, যার সাহায্যে সব হিন্দু শরণার্থীকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এইবার এনসিআরবি বিএসএফ-এর এই তথ্য থেকে তাদের এনআরসির দাবি আরও জোরদার করা ও তৃণমূলের প্রতিরোধের মোকাবিল করা সম্ভব হবে বলে দাবি তাঁর।
শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘তৃণমূল সরকার বা কোনও রাজ্যের সরকার কি আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখার দেখভাল করে। করে কেন্দ্রীয় সরকার, যা বর্তমানে বিজেপির। সুতরাং যদি কোনও বিদেশি অনুপ্রবেশ করে তাহলে তা বিজেপি সরকারের দায়।'' তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিচ্ছি, এই অভিযোগও ভিত্তিহীন।''
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)