LG polymers gas leak: বিশাখাপত্তনমের রাসায়নিক কারখানায় গ্যাস লিকের ঘটনায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়
নয়াদিল্লি:
অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে রাসায়নিক কারখানায় গ্যাস লিকের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু এবং ১,০০০ জনের বেশি মানুষ অসুস্থ হয়েছেন, মৃতদের মধ্যে রয়েছে দুজন শিশুও। চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের মধ্যে ২৫ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক বলে জানিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ঘটনাটিকে একটি রাসায়নিক বিপর্যয় বলে বর্ণনা করেছে তারা। একটি এলজি পলিমার কারখানায় গ্যাস লিকের ঘটনাটি ঘটে, করোনা ভাইরাস লকডাউনের কারণে কারখানাটি প্রায় ৪০দিন ধরে বন্ধ ছিল। এদিন রাস্তায় ছুটে বেড়াতে দেখা যায় বহু মানুষকে, গর্তে পড়ে অনেকে, কেউ আবার বাড়ির মধ্যেই ছিলেন। অন্তত তিনটি গ্রামের বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বাড়ি বাড়ি যান আধিকারিকরা।
এখানে রইল ১০'টি তথ্য:
একাধিক ভিডিওতে, বিশাখাপত্তনমের রাস্তায় নেমে পড়তে দেখা যায় বহু মানুষ, মহিলা ও শিশুদের। করোনার সতর্কতার জন্য মুখে মাস্ক পড়ে অসুস্থদের বের করে আনতে এবং অ্যাম্বল্যান্সে তুলে দেখা যায়।
দুজন ব্যক্তি এতটাই হতবুদ্ধি হয়ে পড়েন যে, তাঁরা গর্তে পড়ে যান এবং তাঁদের মৃত্যু হয়। গাড়ি গর্তে পড়ে গিয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। একজন মহিলা তাঁর বাড়ির দ্বিতীয়তল থেকে পড়ে যান। একটি মোবাইল ভিডিওতে, স্কুটারের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলা ফুটপাথে হঠাৎই পড়ে যান।
কারখানা সংলগ্ন বাসিন্দাদের চোখ জ্বলতে থাকে, চামরায় অস্বাভাবিক চুলকানি হতে থাকে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা। এই গ্যাস দীর্ঘসময় ধরে বের হতে থাকলে স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে এমনকী, কিডনিও নষ্ট হতে পারে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রধান এসএন প্রধান জানান, গ্যাসে আক্রান্ত হন ১,০০০ এর বেশি মানুষ। কারখানার প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গ্যাসের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে।
একটি ভাল্বের ক্ষতি হওয়ার কারণেই গ্যাস লিক করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ৪০ দিন লকডাউনের কারণে, গ্যাসের চাপ বেড়ে গিয়েছে। স্টিরাইন গ্যাস ২০ ডিগ্রির কমে রাখতে হয়, তবে নির্গমণ হয়নি, ফলে পাইপ ফেটে যায়।
পুলিশ আধিকারিক স্বরুপ রানিকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, লকডাউনের কারণে ৫,০০০ টনের দুটি ট্যাঙ্কে কাজ করা হয়নি, ফলে সেগুলি থেকে গ্যাস লিক হয়ে যায়। সংবাদসংস্থা এএফপিকে তিনি জানান, “লক়ডাউনের কারণে এটি পড়েই ছিল। এর ফলে সেখানে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়ে যায় এবং ট্যাঙ্কের ভিতরে তাপ উৎপন্ন হয়, তারফলেই গ্যাস লিক হয়েছে”।
ট্যুইট করে গ্যাস লিকের ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করে দেয় পুরনিগম, এবং সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হয়। ভিজে মাস্ক এবং ভিজে কাপরে সবাইকে মুখ ঢাকতে বলা হয়।
এই কারখানাটিতে পলিস্ট্রিন তৈরি হয়, এক ধরণের প্লাস্টিক যা ফাইবার কাঁচ তৈরিতে ব্যবহার হয়। পাশাপাশি খেলা, লেটেক্স ও বিভিন্ন সামগ্রি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। ১৯৬১ সালে হিন্দুস্তান পলিমার নামে এই সংস্থা তৈরি হয় এবং ১৯৯৭ সেটি দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি কেমিক্যাল অধিগ্রহণ করলে তার নাম হয় এলজি পলিমার ইন্ডিয়া।
এলজি কেমিক্যালের তরফে বলা হয়, “বর্তমানে গ্যাস লিকের ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে এবং গ্যাস লিকের কারণে অসুস্থদের চিকিৎসার সবরকম রাস্তাই আমরা খোলা রাখছি”। তিনি বলেন, “আমরা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি এবং গ্যাস লিক ও মৃত্যু কারণ খতিয়ে দেখছি”।
এদিনের ঘটনাকে অনেকেই ১৯৯৪ সালের ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার সঙ্গে তুলনা করেছেন, ইউনিয়ন কার্বাইড চালিত এই প্রেস্টিসাইড কারখানা থেকে গ্যাস লিকের ঘটনাকে দেশের অন্যতম শিল্প বিপর্যয় বলে মনে করা হয়। সেই ঘটনায় ৩,৫০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল। সরকারি তথ্য বলছে, প্রায় ১ লক্ষ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
Post a comment