Coronavirus, Lockdown : দেশ জুড়ে সঙ্কটে পড়েছেন অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক
হাইলাইটস
- দেশ জুড়ে লকডাউনের জেরে সমস্যার পরিযায়ী শ্রমিকরা
- শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা কম
- পায়ে হেঁটেই বাড়ি ফেরার এক অক্লান্ত চেষ্টায় শ্রমিকরা
নয়া দিল্লি: করোনার ভাইরাসকে (Coronavirus) আটকাতে দেশে চতুর্থ দফায় লকডাউন জারি রাখা হয়েছে। এদিকে এই লকডাউনের (Lockdown) কারণে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ধুঁকছে, সাধারণের পকেট ফাঁকা। সঙ্কটের এই পরিস্থিতি (COVID- 19) কাটাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্যাকেজও বরাদ্দ করেছেন। যদিও এরই মধ্যে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকার কতটা পাশে আছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।যদিও কেন্দ্র বলেছে যে রাজ্যগুলির দাবি মেনেই শ্রমিক স্পেশাল নামে বিশেষ ট্রেন চালাচ্ছে তারা। তবে মনে হচ্ছে যে এক্ষেত্রে কেন্দ্র-রাজ্য পারস্পরিক সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। দ্বিতীয়ত, শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন বরাদ্দের নিয়মগুলোও খুব জটিল। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনাকে মুম্বই থেকে বিহারের কোনও জেলায় যেতে হয় তবে আপনার পাশাপাশি ওই জেলাতে ফিরতে ইচ্ছুক এমন কমপক্ষে ২০-২৫ জন লোক থাকতে হবে, নাহলে ট্রেনের টিকিট পাওয়া আপনার পক্ষে কঠিন হতে পারে। অন্যদিকে, এই ট্রেনের টিকিটের ভাড়া দেওয়া নিয়েও সমস্যা। প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি যে এর ভাড়া শ্রমিকদের কাছ থেকে নেওয়া হবে কিনা। তাই প্রথমে টিকিটের টাকা শ্রমিকদের কাছ থেকেই আদায় করা হচ্ছিল। কিন্তু এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলে, কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট করে জানায় যে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের পক্ষে ভাড়ার ৮৫ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, বাকি ১৫ শতাংশ দিতে হবে রাজ্যগুলিকে।
"সবেমাত্র এক মুঠো ভাত খেয়েছে .... বুকে দুধ নেই… মেয়েকে কীভাবে খাওয়াবো…", এনডিটিভি যখন এই ঘটনাটি তুলে ধরে, তখন মহিলাকে সাহায্য করা হয়।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় আটকে রয়েছেন লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক। মুম্বই, দিল্লি, গুজরাট, কর্নাটক সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘরে ফিরতে চান তাঁরা । অন্যদিকে, রেলের সমস্ত নিয়মকানুন মেনে, ১২০০ জন যাত্রীর বেশি একটি ট্রেনে ওঠা সম্ভব নয়।
এমন পরিস্থিতিতে পরিযায়ী শ্রমিকরা ধৈর্য হারাচ্ছেন, কারণ তাঁদের কাছে থাকা সমস্ত সঞ্চয়ও গত দুই মাসে খরচ হয়ে গেছে। বাড়ি ফেরা ছাড়া আর কোনও উপায়ও নেই। এই পরিস্থিতিতে, পায়ে হেঁটে হোক, বা ট্রাক, সাইকেল বা অন্য কোনও কিছুতে চড়ে যেকোনও উপায়ে বাড়ি ফিরতে চাইছেন তাঁরা।
(করোনার ভাইরাসের সঙ্কটের মধ্যে অমৃত ও ইয়াকুবের বন্ধুত্ব অমর হয়ে গেল, বন্ধুর কোলের মধ্যেই প্রাণ হারালেন আরেক বন্ধু, পথেই মারা গেলেন তিনি)
এই শ্রমিকদের বেশিরভাগই হয় উত্তরপ্রদেশ, নয় বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ এবং ঝাড়খণ্ডের। কয়েকশো কিলোমিটার হেঁটে তাঁরা বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সরকারের পক্ষে যতটা উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল তা দেখা যাচ্ছে না।
নির্বাচনের সময় দেখা যায় সবাই উঠে পড়ে কাজে লাগেন। অথচ এই সময় বড় দলগুলো তো দূর অস্ত, স্থানীয় প্রশাসনও সেভাবে সহযোগিতা করছে না।
একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পরিযায়ী শ্রমিকরা চিতাবাঘের পিছনে পিছনে রাস্তা পার হচ্ছেন।
গুরগাঁও থেকে বিহারের ফিরতে রিক্সাই সম্বল। দীর্ঘ পথ প্যাডেল করে করে বাড়ি ফেরার চেষ্টা কিছু শ্রমিকের।কয়েক হাজার কিলোমিটার যেতে হবে। এক পরিযায়ী শ্রমিক NDTV-কে জানান যে তিনি গুরগাঁও থেকে বিহারের ভাগলপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে তা কিন্তু মেনে চলা যাচ্ছে না বহু ক্ষেত্রেই। রাজ্যগুলির সীমান্তে যেভাবে অসংখ্য মানুষ অপেক্ষা করছে কখন কোন বাস আসবে তার অপেক্ষায়, সেখানে গা ঘেঁষাঘেঁষি করেই রয়েছেন সকলে।
রাস্তার মধ্যে দেখা যায়, একটি ভারি স্যুটকেস টেনে নিয়ে যাচ্ছেন এক মহিলা। সেই স্যুটকেসের উপর ঘুমিয়ে রীতিমতো রাস্তা দিয়ে ঘষটে ঘষটে যাচ্ছে তাঁরই পরিবারের শিশু সদস্যটি। ঝাঁসির উদ্দেশে পায়ে হেঁটেই রওনা দিয়েছেন তাঁরা।
দেখুন এই মর্মস্পর্শী ছবিটি। বালাঘাটের এক শ্রমিক যিনি হায়দরাবাদে কাজ করতেন, ৮০০ কিলোমিটার দূরে বাড়ি ফিরতে চান স্ত্রীকে নিয়ে। হাতেই তৈরি করেছেন একটি গাড়ি, সেটাতেই স্ত্রী ও ছোট্ট সন্তানকে বসিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন ওই ব্যক্তি।
বুধবার ভোর তিনটের সময় মুম্বইয়ের সান্তাক্রুজ থেকে সাইকেল চালিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন একদল শ্রমিক। আবার প্রায় ২০ জনের একটি দল নবি মুম্বইয়ের থেকে মহারাষ্ট্রের বুলডানায় নিজেদের গ্রামে পৌঁছতে পায়ে হেঁটেই এগোচ্ছেন। এই দলে যেমন আছে ছোট বাচ্চা, তেমনি আছেন সাত মাসের গর্ভবতী এই মহিলাও।