Lockdown : পায়ে হেঁটেই বাড়ি ফিরতে উন্মুখ এই শ্রমিকরা।
হাইলাইটস
- উত্তরপ্রদেশের এক গ্রামে আটকে রয়েছেন এই শ্রমিকরা
- এঁরা ফিরতে চান বিহারে, তাঁদের পরিবারের কাছে
- লকডাউন উপেক্ষা করে পায়ে হেঁটেই বেরিয়ে পড়তে চান তাঁরা
নয়াদিল্লি: ‘‘ঘরে একটা টাকাও নেই। কোথা থেকে আটা-চাল বা সবজি কিনব আমরা? আমার স্বামী ওখানে গিয়ে ফেঁসে গিয়েছে। ওরা অবশ্য ঠিকঠাকই খাওয়া দাওয়া করছে। কিন্তু আমরা কী করব?'' মোবাইলের স্পিকারে স্ত্রীর আর্তস্বর শুনতে শুনতে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Prasesh) হাপুর-এর আইসক্রিম কারখানার কর্মী সুগ্রীব চৌধুরীর চোথটা ছলছল করে ওঠে। কেবল সুগ্রীবই নন, আইসক্রিম কারখানার পরিযায়ী (Migrant) এই শ্রমিকদের সকলেরই গল্পটা মোটামুটি এক। এই অসহায়তার মধ্যে ওই হিন্দু শ্রমিকদের পেট ভরানোর দায়িত্ব নিয়েছে এক মুসলিম গ্রাম। কিন্তু পেট ভরলেও মন কারও ভাল নেই। বিহার থেকে হাপুর যে অনেকদূর! কোনও ভাবে যদি এখান থেকে নিজেদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো যেত! আপাতত সেই চিন্তাতেই আচ্ছন্ন তাঁরা। নিজের দশ সহকর্মীর সঙ্গে হাপুরের সরওয়ানি গ্রামে আটকে রয়েছেন সুগ্রীব। এদিকে পশ্চিম চম্পারণের একটি ছোট্ট গ্রাম পতিলারে রয়ে গিয়েছে তাঁর পরিবার— স্ত্রী, চার সন্তান ও বৃদ্ধা মা।
আরবিআইয়ের পদক্ষেপের ফলে ঋণ সরবরাহে উন্নতি হবে, কৃষক ও দরিদ্ররা সাহায্য পাবে: প্রধানমন্ত্রী
বাকিদেরও পরিবার রয়েছে পতিলার কিংবা বিসর্বা গ্রামে। মাঝে কয়েক হাজার কিলোমিটারের দূরত্ব। এখানে সুগ্রীবদের পেট ভরলেও ওখানে পরিবারের কাছে না আছে খাবার জোগান, না রয়েছে অর্থ সংস্থান।
সুগ্রীব জানাচ্ছেন, ‘‘আমাদের এখানে সমস্যা নেই। তবে আমাদের পরিবার বিহারে অনাহারে রয়েছে। আমার পরিবারে চারটি ছোট বাচ্চা রয়েছে। কিছুই করতে পারছি না। যখন ফোনে কথা বলি, পরিবারের সদস্যরা কান্নাকাটি করে। জানায়, খিদের চোটে আর থাকতে পারছে না ওরা। আমি অবশ্য পায়ে হেঁটেই ফিরে যেতাম। গত মাসে লকডাউনের পরই অনেকেই চম্পারণে ফিরে গিয়েছিল পায়ে হেঁটে। আমরাও যেতাম। কিন্তু এখানে পাশেই মুসলিম বসতি। ওঁরাই বোঝালেন, শাদাব চৌধুরীর মতো লোকেরা তাঁদের আত্মীয়দের বাড়িতে এক মাসের রেশন এমনকী গ্যাসের উনুনও পৌঁছে দিয়েছে।''
দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্যে ৫০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করল আরবিআই
এখানে থেকে অন্ন সংস্থান হয়ে গেলেও লকডাউনের মেয়াদ বাড়ার পর থেকে আরও বেশি করে মনে পড়ছে বাড়ির কথা। দুশ্চিন্তা পাক খাচ্ছে মনের মধ্যে।
গ্রামের প্রবীণরা এই শ্রমিকদের তাঁদের বাড়িতে ডেকে বুঝিয়েছেন। অন্য বাসিন্দারাও লকডাউনের কথা বুঝিয়ে বলেছেন। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝতে পেরেও মন মানছে না। যা হয় হোক, সুগ্রীবরা চাইছেন আর নয়। এবার বাড়ি ফিরতে হবে। দরকার হলে পায়ে হেঁটেই। বাড়ির লোকগুলো যে না খেয়ে অভুক্ত অবস্থায় পথ চেয়ে রয়েছে।