লকডাউনের শহরে এক তরুণীর অভব্যতার সাক্ষী থাকল সল্টলেক।
কলকাতা: লকডাউনের শহরে এক তরুণীর অভব্যতার সাক্ষী থাকল সল্টলেক (A young Girl of kolkata)। পুলিশ কেন গাড়ি আটকিয়েছে, এই রাগে পুলিশের উর্দি চেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শর্মিষ্ঠা দেবনাথ নামে এক তরুণীর বিরুদ্ধে। সোশাল সাইটে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে তেমনটাই দেখা গিয়েছে। সল্টলেকের পিএনবি (Saltlake, PNB) মোড়ের এই ঘটনায় স্পষ্টতই হকচকিয়ে গিয়েছিল কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। পরে সরকারি বিধি (Violating Lockdown Rule) লঙ্ঘনের দায়ে তিন জনকে গ্রেফতার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বিধাননগর কমিশনারেট। জানা গিয়েছে, ধৃতরা হলেন অভিযুক্ত শর্মিষ্ঠা দেবনাথ, তাঁর এক বন্ধু নির্মল দেবনাথ এবং অ্যাপ-ক্যাব চালক জাভেদ খান। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সেই গাড়িও (An App-Cab)।
“সাদা পোশাকে যাঁরা রয়েছেন, ঈশ্বরের মতো”, চিকিৎসকদের হেনস্থা নিয়ে বললেন প্রধানমন্ত্রী
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরের দিকে WB 04 F 8890- নম্বর প্লেটের সাদা রঙের একটা অ্যাপ-ক্যাবকে সল্টলেকের পিএনবি আইল্যান্ডের সামনে আটকানো হয়। এমনিতেই সে সময় এলাকায় নাকা-চেকিং চলছিল। সেই চেকিংয়ে পিকনিক গার্ডেন থেকে আসা ওই গাড়ি আটকিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য, অসুস্থ, প্রসূতি ছাড়া সেভাবে কোনও গাড়ি ছাড়ার অনুমতি নেই লকডাউনে। সেটাই নিশ্চিত করতে গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন পুলিশকর্মীরা। তখনই গাড়ি থেকে নেমে পুলিশের দিকে তেড়ে আসেন শর্মিষ্ঠা দেবী। অভিযোগ, "আঙুল তুলে তাঁকে পুলিশকে শাসাতেও দেখা গিয়েছে।" এই তরজার মধ্যেই হঠাৎ ছুটে এসে এক পুলিশকর্মীর উর্দিতে মুখ ঘসে দেন ওই তরুণী। এমনকি, তাঁর মুখে একটা ফোঁড়া ছিল, সেটা ফাটিয়ে রক্ত লাগিয়ে দেওয়া হয় সেই পুলিশকর্মীর উর্দিতে। এমনটাই জানানো হয়েছে বিধাননগর পুলিশ সূত্রে।
সোশাল সাইটে ছড়ি পড়া এক ভিডিওতে সেই দৃশ্যই দেখা গিয়েছে।পুলিশের আরও অভিযোগ, "এরপর সেই রক্তের দাগ দেখিয়ে এই যে করোনা" বলে কটাক্ষ শুরু করেন শর্মিষ্ঠা দেবনাথ।" তাঁর সঙ্গে থাকা বন্ধু সেই তরুণীকে নিরস্ত্র করার চেষ্টা করলেও, রণে ভঙ্গ দেননি তিনি। বরং তুই -তোকারি করে ওই তরুণীর পুলিশকর্মীকে শাসাতে দেখা গিয়েছে ওই ভিডিওতে।
নেই মাথা গোঁজার ঠাই! লকডাউনে গ্রামে ফিরতে ৮০ কিমি হাঁটা লাগালেন এক শ্রমিক
"আমার কিছু হয়ে গেলে কে দায়িত্ব নেবে?" ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে এমন প্রশ্ন তুলেছেন শর্মিষ্ঠা দেবী। নিজেকে অসুস্থ দাবি করলেও, তাঁর হাবেভাবে সেই রেশ ছিল না। এমন দাবি করছেন নেটিজেনরা। তবে গোটা এই দু'মিনিটের ভিডিওতে পুলিশকে একবার মেজাজ হারাতে দেখা যায়নি। মহিলা নাগরিকদের সঙ্গে প্রোটোকল মেনেই ব্যবহার করেছে বিধাননগর পুলিশ। তবে, যে পুলিশকর্মীর উর্দিতে রক্ত লাগানো ছিল, পরিস্থিতির চাপে তিনি একটু মেজাজ হারালেও, তা ছিল নিয়ন্ত্রণে। পুলিশের এহেন আচরণকে এমনভাবেই স্বাগত জানিয়েছে নেট দুনিয়া।
এদিকে, এই ভিডিও দেখে, পুলিশের ভুমিকাকে কুর্নিশ করলেও, নাগরিক অসচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নাগরিকরা। যেখানে করোনা সংক্রমণ রোধে একটাই দাওয়াই সামাজিক দূরত্ব বজায় ও নিজেকে গৃহবন্দি রাখা। সেখানে লকডাউন ভেঙে বাইরে বেরিয়ে পুলিশের সঙ্গে করা এই তরুণীর এই অভব্য আচরণ দেখে ছিঃ ছিঃ করছে নেট দুনিয়া।