This Article is From Apr 19, 2020

লকডাউনে আটকে পড়া অন্তঃসত্ত্বাকে নিজের ঘরে ২১ দিন আশ্রয় দিলেন ট্যাক্সি চালক

ওই চ্যাক্সি চালক নিজে থাকেন এক কামরার বাড়িতে। ঘরে পাখাও নেই। ভয় ছিল পাড়া প্রতিবেশীরা কী বলবেন তা নিয়ে। তবুও অসহায় মহিলাকে সাহায্য না করে পারেননি তিনি।

লকডাউনে আটকে পড়া অন্তঃসত্ত্বাকে নিজের ঘরে ২১ দিন আশ্রয় দিলেন ট্যাক্সি চালক

কার্ফু পাস পাওয়ার পরে ওই মহিলাকে জয়পুরের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন ট্যাক্সি চালক।

নয়াদিল্লি:

গত ২৪ মার্চ থেকে সারা দেশে চলছে লকডাউন। ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দেন, লকডাউনের মেয়াদ ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গত মার্চে আচমকা লকডাউনের ঘোষণার পরে বহু মানুষকে সমস্যায় পড়তে হয়। কেউ আশ্রয় হারিয়ে ফেলেন। আবার অনেকেই খাবারের জোগাড় করতে না পেরে সমস্যায় পড়েন। তবু মানবতাকে আশ্রয় করে গোটা দেশ লড়াই শুরু করে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে। তেমনই এক মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন গুরুগ্রামের ট্যাক্সি চালক সঞ্জয়। তাঁর ট্যাক্সিরই যাত্রী এক গর্ভবতী লকডাউনের কারণে আটকে পড়লে সেই মহিলাকে ২১ দিনের জন্য নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেন সঞ্জয়। পরে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হলে কার্ফুর পাস জোগাড় করে তাঁকে তাঁর বাড়ি জয়পুরে পৌঁছে দেন।

আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলা জয়পুর থেকে মুজাফফরনগর আসছিলেন। সেই সময়ই অকস্মাৎ লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় তিনি গুরুগ্রামে আটকে যান। তিনি সঞ্জয়েরই ট্যাক্সির যাত্রী ছিলেন। মহিলার অসহায়তা দেখে তিনি তাঁকে সাহায্য করেন।

সঞ্জয় নিজে থাকেন একটি এক কামরার বাড়িতে। ঘরে পাখাও নেই। জয়পুরে এক যাত্রীকে নামিয়ে ফেরার সময় ওই মহিলা সঞ্জয়কে জানান, তাঁর বড় মেয়ে মজফফরনগরে থাকে। সঞ্জয় যেন তাঁদের পৌঁছে দেন। ২৮ বছরের সুহানা সিংহের সঙ্গে ছিল তাঁর মেয়ে।

তাঁরা আটকে পড়ার পর সঞ্জয় ওই মহিলাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তাঁর ভয় ছিল, এলাকায় জল্পনা শুরু হতে পারে ওই মহিলাকে নিয়ে। কিন্তু তবু বিপদের দিনে ওই অন্তঃসত্ত্বাকে একা ছেড়ে দিতে পারেননি তিনি। 
এরপর ২১ দিন সুহানা ও তাঁর মেয়েকে আশ্রয় দেন সঞ্জয়। তাঁদের খাবার দাবারের জোগাড় করার পাশাপাশি সুহান‌াকে হাসপাতালেও নিয়ে যান তিনি। চেষ্টা করতে থাকেন কার্ফু পাস জোগাড়ের।

সঞ্জয় জানাচ্ছেন, ‘‘কোনও উপায় ছিল না। আমার মনে হয়েছিল একদিনের ব্যাপার। ভেবেছিলাম যা হোক করে সামলে নেব। কিন্তু জানতাম না লকডাউন এত দীর্ঘ দিন ধরে চলবে।''

সুহানা সিংহের মুখে সঞ্জয়ের প্রভূত প্রশংসা। তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘ওই ট্যাক্সি চালক আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। আমরা এক ঘরে ভাই-বোনের মতো বাস করেছি। টাকা ফুরিয়ে গেলে সঞ্জয় নিগম পর্যদের থেকে সাহায্য চায়। পর্ষদও পরিস্থিতি বুঝতে পেরে সাহায্যের আশ্বাস দেয়। অবশেষে কার্ফু পাসের ব্যবস্থা হয়। সঞ্জয় আমাকে জয়পুরের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে।''

.