কলকাতা: ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যত না উত্তেজনা ততোধিক উত্তেজনা দেশের অর্ধেকের বেশি ড্রয়িং রুমে। টেলিভিশনের প্রতিটি নিউজ চ্যানেল থেকে কেবলই উত্তপ্ত নির্বাচনী হাওয়া এসে গরম করে দিয়ে যাচ্ছে বাড়ির নিভৃত সোফাটিকেও। প্রাপ্তবয়স্কদের এই বিষয়ে না চাইলেও জুড়েই যাচ্ছে শিশুরা। সর্বত্র, সবখানে নির্বাচনের আবহে শিশুদের ত্যাজ্য করে রাখার অবশ্য কোনও উপায়ই নেই। তবে বিষয় বড়দের হলে কী হবে? মনটা তো এখনও ততখানি পঙ্কিলতার আবহে নেই, নেই বলেই সচল আর সৃজনশীল। ‘এসব তোদের জিনিস নয়' শুনতে শুনতে তাই বাচ্চারা নিজেরাই ভোটের আবহে বানিয়ে ফেলেছে এক নতুন খেলা। ‘ভোট-ভট' খেলা। না, রাজনীতিবিদরা আমাকে আপনাকে নিয়ে যে খেলা খেলে এ তার চেয়ে ঢের বিশুদ্ধ।
দিল্লির ‘শবরীমালা'? এই পারসি মন্দিরেও পিরিয়ডের সময় মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ
স্কুলের গাড়ি করে বাড়ি ফেরার সময়ে বাচ্চাদের এখন মন পসন্দ খেলা হয়েছে এই ‘ভোট-ভোট খেলা'। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে সমাদৃতা, বয়স ১০। জানায়, “আমাদের বাবা-মা বলে, ভোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু আমরা এখন দিতে পারব না। বড় হলে ভোট দেব। তাই এখন আমরা ভোট ভোট খেলা করছি।” কলকাতার উত্তরপূর্ব দিকের দু' তিনটি স্কুলের সহপাঠি বন্ধু রয়েছে তার, গাড়িতে ফেরার সময়ে ত্রিস্রোতা, নবনীতা, আয়ুশ, বিদিশা, সৌমি ও অন্যান্য বন্ধুদের সঙ্গে এখন এটাই খেলে সে।
ভোট কাদের দিতে হয়? সকলেরই সমস্বরে একটাই উত্তর ‘দলকে'! ভোটের লড়াইয়ে নামা অনেক দলের নামও জানে তাঁরা। চতুর্থ শ্রেণির নবনীতা বলে, “তৃণমূল...বিজেপি...কংগ্রেস..”। ও জানে নির্বাচনের পর কেউ একজন দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন!
এই ‘ভোট-ভোট' খেলা কীভাবে খেলে?
গম্ভীর হয়ে খেলায় বোঝায় বছর সাতেকের সৌমিলি। “আমরা দুই দলে ভাগ হয়ে যাই। তারপর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করি। আমাদের সকলেরই প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে হবে।” ত্রিস্রোতা বলে, ওরা হাত তুলে যে ভাগে হাত বেশি সেখান থেকেই প্রধানমন্ত্রী বেছে নেয়। যদি টাই হয়ে যায়? গাড়ির ‘ড্রাইভার কাকু' ভোট দেয়!
ভয়াবহ আগুন থেকে ৩০ জন মানুষকে বাঁচিয়ে নিজে ছাই হয়ে গেল এক সারমেয়
কচিকাঁচাদের নিয়ে গাড়ি চালান প্রবীর হালদার, এক গাল হেসে বলেন, “এমনকি আমাকেও প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী যে গান শুনতে চাইবে সেই গান বাজাতে হবে। টিফিনের প্রথম ভাগটা পাবে প্রধানমন্ত্রীই!”
এই বাচ্চাদের অভিভাবকরা জানান, বাড়ি ফিরে কে প্রধানমন্ত্রী হয়েছে এটা না বললে শান্তিই হয় না তাঁদের ছেলে মেয়ের। তৃতীয় শ্রেণির আয়ুষের মা শ্রাবণী দত্ত বলেন, “স্কুল থেকে ফিরে দেখি আমার ছেলে খুব উত্তেজিত, সেদিন ও প্রধানমন্ত্রী হয়েছিল যে!”
সাইকোলজিস্ট শ্রেয়া ঘোষ বলেন, “শিশুরা স্বভাবতই কৌতূহলী এবং তারা তাদের আশেপাশ থেকেই শেখে। তবে বাবা মাকে অবশ্যই যত্ন নিতে হবে যে খেলাটা যেন সেভাবেই হয়। সত্যিকারের নির্বাচনের মতো কুৎসিত যেন না হয়।”
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)