আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা, নানা টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ নির্বাচনের সপ্তম ও শেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই দফার নয়টি আসনের- কলকাতা উত্তর ও কলকাতা দক্ষিণ, দমদম, বারাসসত, বসিরহাট, যাদবপুর, ডায়মন্ড হারবার, জয়নগর (এসসি) ও মথুরাপুর (এসসি) কেন্দ্রের ১১১ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ১,৪৯,৬৩,০৬৪ জন ভোটার। যাদবপুর বাদে আটটি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, কংগ্রেসে ও বামফ্রন্টের চতুর্মুখী লড়াই হবে।
কংগ্রেস যাদবপুর আসনে প্রার্থী দেয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ডায়মন্ড হারবার আসন থেকেই পুনরায় নির্বাচনে লড়ছেন। বিজেপির নীলাঞ্জন রায় তাঁর বিরোধী প্রার্থী। সিপিআই (এম)-এর ফুয়াদ হালিম ও কংগ্রেস মনোনীত সৌম্য আইচ রায় এই আসনে লড়ছেন। যাদবপুর আসনে তৃণমূলের সেলিব্রিটি প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী লড়ছেন বিজেপির অনুপম হাজরার বিরুদ্ধে! সিপিআই (এম)-এর বরিষ্ঠ নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এই আসনে প্রার্থী।
বসিরহাট লোকসভা আসন আরেকজন তারকা তৃণমূল প্রার্থী হলেন অভিনেত্রী নুসরত জাহান। বিজেপির সায়ন্তন বসুর সঙ্গে লড়ছেন তিনি। কংগ্রেস মনোনীত কাজি আব্দুর রহিম ও বামফ্রন্টের সিপিআই প্রার্থী পল্লব সেনগুপ্ত রয়েছেন ময়দানে। দমদমের আসনে বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য বনাম তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায়ের লড়াই! সিপিআই (এম) প্রার্থী নেপালদেব ভট্টাচার্য ও কংগ্রেসের সৌরভ সাহা লড়ছেন এই আসনে।
তৃণমূলের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারের বিরুদ্ধে বারাসত কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপির মৃণাল কান্তি দেবনাথ। কংগ্রেসের হয়ে সুব্রত দত্ত ও ফরোয়ার্ড ব্লকের হরিপদ বিশ্বাস এখানে প্রার্থী। জয়নগর (এসসি) আসনে, তৃণমূলের প্রতিমা মণ্ডল লড়ছেন বিজেপির অশোক কাণ্ডারীর বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের তপন মন্ডল ও আরএসপির সুভাষ নস্কর এই আসনের প্রার্থী। মথুরাপুরে (এসসি) তৃণমূলের চৌধুরী মোহন জাটুয়ার বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী বিজেপির শ্যামা প্রসাদ হালদার। কংগ্রেসের কৃত্তিবাস সর্দার ও সিপিআই (এম)-এর শরৎচন্দ্র হালদারও মাঠে নামছেন।
“অসাধারণ সাংবাদিক সম্মেলন”; মোদির প্রথম সম্মেলন নিয়ে খোঁচা রাহুল গান্ধীর
কলকাতা দক্ষিণে তৃণমূলের মালা রায় লড়বেন বিজেপির চন্দ্র কুমার বোসের বিরুদ্ধে। সিপিআই (এম) প্রার্থী নন্দিনী মুখার্জী ও কংগ্রেসের মিতা চক্রবর্তী রয়েছেন লড়াইয়ে। কলকাতা উত্তর কেন্দ্রে, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহার বিরুদ্ধে। সিপিআই (এম) প্রার্থী কনীনিকা বোস ও কংগ্রেসের সৈয়দ শাহিদ ইমাম লড়ছেন এই কেন্দ্রে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোট ৭১০ টি কোম্পানি রাজ্যের ১৭,০৪২ বুথে মোতায়েন করা হরেছে।
নয়টি নির্বাচনী এলাকা ছড়িয়ে আছে তিনটি জেলায়- কলকাতা, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা। এবার এই রাজ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ের ভোটে হাই ভোল্টেজ প্রচারণা করতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
'আমরা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফিরব 'পাঁচ বছরে প্রথমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি মোদীর
প্রচারের শেষ দুই দিনে রাজ্যে চারখানা সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কয়েকটি রোড শো করেন মহানগরীতে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অমিত শাহের রোডশো ঘিরে ব্যাপক তাণ্ডব চলে কলেজস্ট্রিটে। হিংসায় কলেজে ঢুকে ভেঙে ফেলা হয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তিও!
ভারতের নির্বাচনী ইতিহাসে নজিরবিহীন প্রথম পদক্ষেপে, নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গের নয়টি লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারণা শুক্রবারের বদলে বৃহস্পতিবারই রাত ১০ টায় বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সাধারণ নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও ব্যয় পর্যবেক্ষক ছাড়াও প্রথমবার নির্বাচনী প্যানেল একজন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক এবং একজন বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করছে। সব বুথে ভিভিপ্যাট ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা।