স্বামীর কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন মহম্মদ আফরাজুলের(Afrajul) স্ত্রী গুলবাহার বিবি।
সইদপুর, মালদহ: মালদহের সইদপুর গ্রাম থেকে রাজস্থানে কাজ করতে গিয়েছিলেন মহম্মদ আফরাজুল(Afrajul) । দু'বছর আগে সেখানে তাঁকে(Afrajul) হত্যা করা হয়। সেই হত্যার ঘটনার কথা এখনও ভোলেনি মালদহ(Malda) জেলার মানুষ। এই জেলার বাসিন্দাদের একটি বড় অংশের রুটিরুজি নির্ভর করে অন্য রাজ্যে গিয়ে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করার ওপর। সেরকমই একজন নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন মহম্মদ আফরাজুল(Afrajul)। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করার পর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এই গোটা ঘটনাটির ভিডিও করা হয়েছিল। সেই ভিডিওতে উঠে এসেছিল, কীভাবে মৃত্যুর আগে হাতজোড় করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করছিলেন মহম্মদ আফরাজুল(Afrajul)। “ভিডিওটি এখনও রয়েছে। এই গ্রামের মানুষ এখনও ভিডিওটি দেখতে পারে। আমি জানি না সে কী ভুল করেছিল। শুধু মনে হয়, স্রেফ তার ধর্মের জন্যই তাকে খুন করে ফেলা হল”, এক কামরার ঘরে বসে বলছিলেন আফরাজুলের(Afrajul) স্ত্রী গুলবাহার বিবি। তাঁর চোখে তখন জল। তাঁর পাশেই বসেছিল তাঁদের কনিষ্ঠ কন্যা হাবিবা এবং তাঁর নাতি-নাতনিরা।
"আমাদের প্রধানমন্ত্রী চা-ওয়ালা আর অর্থমন্ত্রী হলেন কেটলি", মোদীকে তোপ মমতার
“এই গ্রামে এমন একটি পরিবারও নেই, এমনকী, সত্যি বলতে, এই গোটা এলাকায় এমন একটি পরিবারও নেই, যাদের কোনও না কোনও সদস্য দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ বা রাজস্থানের মতো রাজ্যে কাজ করতে যায়নি। এখানে তো কিচ্ছু নেই। কাজ নেই। উন্নয়ন নেই। তার মধ্যেও যদি শুধু ধর্মের কারণে আমাদের ছেলেমেয়েগুলোকে মেরে ফেলে ওরা, তাহলে আমরা কীসের আশা নিয়ে বাঁচব বলতে পারেন?”, প্রশ্ন করলেন মহম্মদ বাবুল। যাঁর তিন পুত্র এই মুহূর্তে দিল্লিতে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন।
দু'দফার ভোটের পর দিদির ঘুম উড়ে গিয়েছে: নরেন্দ্র মোদী
প্রসঙ্গত, ২০ বছর ধরে রাজস্থানে কাজ করা মহম্মদ আফরাজুলের(Afrajul) মৃত্যুর পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁর পরিবারকে ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। ৬ হাজার টাকার একটি চাকরি দেওয়া হয় তাঁর জ্যেষ্ঠ কন্যাকে এবং তাঁর স্ত্রী গুলবাহার বিবি'র জন্য ধার্য করা হয় ৭৫০ টাকার মাসিক পেনশন।
“আমি জীবনে বহু কষ্ট দেখেছি, জানেন? যখনই ভেবেছিলাম, সব ঠিক হয়ে যাবে এবার, কিছুটা শান্তি ফিরে আসবে, তখনই তো সব শেষ হয়ে গেল”, কথা বলতে বলতে ধরে আসে ধরে আসে গুলবাহার বিবি'র গলা।
দার্জিলিং-এর ৪০'টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাল বিজেপি
আগামী ২৩ এপ্রিল উত্তর মালদহ ও দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে ভোট। তিনি কি ভোট দেবেন?
এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে দপ করে জ্বলে উঠল এতক্ষণ বিষণ্ণ হয়ে থাকা কণ্ঠটি। “কেন দেব না? এটা তো আমার অধিকার! আমি আমার ভোটটা দেব। যখন ওই ভিডিওটা ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল, আমরা ক্রমশ অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি, তখন একজন বিজেপি নেতাও আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। গত দু'বছরে কোনও বিজেপি নেতার আমাদের কাছে আসার বা আমাদের পাশে দাঁড়ানোর সময়ই তো হল না। ভোট তো দেব। ভোটটা তো দিতেই হবে”।
তারপর চুপ করে যান তিনি। গ্রামের বাড়ির উঠোনে একসঙ্গে পড়ে থাকে শেষ বিকেলের রোদ্দুর এবং দু'বছর আগে এক অসহায় মানুষের হাতজোড় করে করা বেঁচে থাকার অনুরোধটি।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)