কলকাতা: আজ শুরু হচ্ছে গোটা দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব (Lok Sabha elections 2019)। রাজ্যের দুটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট এই প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি হল এই দুই লোকসভা কেন্দ্রের দুই যুযুধান প্রতিদ্বন্দ্বী। এছাড়া, এই দুই কেন্দ্রে অস্তিত্বের লড়াই বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের। বামফ্রন্ট সমর্থিত ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী লড়াই করবেন কোচবিহার (Cooch Behar) থেকে এবং বাম সমর্থিত আরএসপি প্রার্থী লড়াই করবেন আলিপুদুয়ার (Alipurduar) থেকে। উত্তরবঙ্গের এই দুই কেন্দ্রের ভোটের মূল ইস্যুগুলি হল দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা, এনআরসি, চিটফান্ড কেলেঙ্কারী, উন্নয়ন, নিরাপত্তা এবং চা বাগানের শ্রমিকদের উন্নতি। যে ইস্যুগুলোর কথা আলিপুরদুয়ার ও উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রে জনসভা করতে এসে বারবার বলে গিয়েছেন বিভিন্ন দলের নেতা ও নেত্রীরা। কমিশন জানিয়েছে সকাল ৯ টা পর্যন্ত রাজ্যের দুটি কেন্দ্রে গড়ে ১৮. ১২ শতাংশ ভোট পড়েছে। দেশের অন্য রজ্যের তুলনায় এই পরিয়ামণ কিছুটা বেশি বলেই খবর। দুপুর পর্যন্ত তেমন কোনও গোলমালের খবর এসে পৌছয়নি। তবে কোচবিহারের শীতলকুচিতে মহিলা ভোটারদের ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
কাল থেকে শুরু হচ্ছে লোকসভা নির্বাচন, এক নজরে দেখে নিন সমস্ত তথ্য
এই নির্বাচনে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে চলেছে বন্ধ চা-বাগান এবং চা-শ্রমিকদের জীবন। নব্বই দশকে বন্ধ হয়ে যাওয়া চা-বাগানই উত্তরবঙ্গের লোকসভা ভোট শুরু আগের সবথেকে বড় ইস্যু।
কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে ২০১৬ সালের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের পার্থপ্রতীম রায়। ৭ লক্ষ ৯৪ হাজার ৩৭৫'টি ভোট পেয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন বিজেপির হেমচাঁদ। তিনি পেয়েছিলেন ৩ লক্ষ ৮১ হাজার ১৩৪'টি ভোট। ১৯৫১ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্র ছিল কংগ্রেসের। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রটি ছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের। ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্র ফের ছিল কংগ্রেসের দখলে। তারপর ফের এই কেন্দ্রটি হয়ে যায় ফরওয়ার্ড ব্লকের। ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রের টানা বিজয়ী ছিল ফরওয়ার্ড ব্লক।
বিজেপির ইস্তেহারকে বিচ্ছিন্ন মানুষের কণ্ঠস্বর বলে বিঁধলেন রাহুল
২০১৪ সালে জেতে তৃণমূল। ২০১৬ সালের উপনির্বাচনেও এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসই জয়লাভ করে।
এই জেলাতে ভোটের প্রচারে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারে মূল লড়াই তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারী, বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক, কংগ্রেস প্রার্থী পিয়া রায়চৌধুরী এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের গোবিন্দচন্দ্র রায়ের মধ্যে। মোট বুথের সংখ্যা ২,০১০'টি।
অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে ২০১৪ সালে ৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৪৫৩'টি ভোট পেয়ে জিতেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের দশরথ তিরকে। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন আরএসপি'র মনোহর তিরকে। তিনি পেয়েছিলেন ৩ লক্ষ ৪১ হাজার ৫৬'টি ভোট। ১৯৭৭ সালে জন্ম হয় আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের। সেই ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আলিপুরদুয়ার ছিল রেভলিউশনারি সোশালিস্ট পার্টি বা আরএসপি'র একচেটিয়া আসন। গতবারের দ্বিতীয় স্থানাধিকারী মনোহর তিরকে কুমারগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ২০০১ সাল, ২০০৬ সাল ও ২০১১ সালের বিধায়ক। আরএসপি'র দাপুটে নেতা। তবে, এবারে আরএসপি'র প্রার্থী মিলি ওঁরাও।
বিজেপির সঙ্গে মমতাই জোট করেছিলেন, কংগ্রেস নয়ঃ রাহুল
আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে মোট সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলি হল- কালচিনি, তুফানগঞ্জ, আলিপুরদুয়ার, মাদারিহাট, ফালাকাটা, কুমারগ্রাম ও নাগরাকাটা।
১,৮৩৪'টি বুথে ভোট হবে আলিপুরদুয়ারে। মূল লড়াই তৃণমূল প্রার্থী দশরথ তিরকে, আরএসপি প্রার্থী মিলি ওঁরাও, বিজেপি প্রার্থী জন বারলা এবং কংগ্রেস প্রার্থী মোহনলাল বসুমাতার মধ্যে। এছাড়া, আরও দুই প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন নির্দল প্রশান্ত জয়ন্ত কিন্দো এবং এসইউসিআই-এর রবিচন রাভা।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)