কলকাতা: একই অঙ্গে কত রূপ! বাঙালির পাতে একসময় ইনি না পড়লে পেট আর মন দু'ই ভরত না। সেই ‘সন্দেশ' আরও তার স্বাদের মহিমায় উজ্জ্বল! শুধু বহিরাঙ্গে বদল ঘটেছে মিষ্টির। জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে কখনও তৃণমূলের জোড়া ঘাস ফুল, কখনও বিজেপির পদ্ম, কংগ্রেসের হাতচিহ্ন, বা সিপিআই(এম)-এর কাস্তে হাতুড়ি ছাপের সন্দেশই এখন বাজার মাত করেছে।
বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিকের (Balaram Mullick and Radharaman Mullick ) দোকানে আসতে না আসতেই হাওয়া হয়ে যাচ্ছে এই ‘নির্বাচনী মিষ্টি'! শুধু শহরের প্রাচীনতম এই মিষ্টির দোকানেই নয়, সোদপুরের শিবানী মিষ্টির দোকানের অবস্থাও একই।
শতবর্ষ কাবার! ২০১৯-এর রাজনৈতিক তরজায় অমলিন নেতাজির প্রিয় তেলেভাজার দোকান
পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা নির্বাচনে গ্রামীণ কেন্দ্রে যেখানে নকুলদানা আর লাড্ডু বিতরণ করে ভোটবাক্স ভরার চেষ্টা চলছে, সেখানে মহানগরে মিষ্টান্ন নির্মাতারাও এই সুযোগে মাঠে নেমে পড়েছেন। বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিকের পপি মল্লিক বলেন, “আমরা অনেক বছর ধরেই নির্বাচনকালে এই মিষ্টি তৈরি করছি। এই বছরও প্রতিক্রিয়া খুব ভালো।" নির্বাচনী লড়াইয়ে রাজনৈতিক দলের থিমযুক্ত মিষ্টির মধ্যে কোনটি সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে তা জানতে চাওয়া হলে অবশ্য হেসেই কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন তিনি।
কোন দলের মিষ্টির অর্ডার কেমন? মোটামুটি হিসেব কষে মল্লিকরা জানিয়েছেন, রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের মিষ্টির চাহিদাই শীর্ষস্থানীয়। তাঁদের ২৫০ গ্রাম মিষ্টির দাম ১৫০ টাকা।
ফুটবল এবং ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় থিম মিষ্টি বানানোয় রেকর্ড গড়েছিলেন সোদপুরের শিবানী মিষ্টির দোকানটি। একটা ট্রে তে দলীয় প্রতীকের মিষ্টি এখন দেদার বিকোচ্ছে তাঁদের।
তৃণমূলের ‘জোড়া ঘাস ফুল', বিজেপির পদ্ম, কংগ্রেসের হাতচিহ্ন, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদীর (সিপিআই-এম) কাস্তে হাতুড়ি সব রকমের মিষ্টিই পাবেন। দোকানের কর্মচারী সঞ্জীব দাস বলেন, “আমরা এই বড় ট্রেগুলির দাম রেখেছি ৮০০-২,০০০ টাকা এবং একটি ছোট সন্দেশের দাম ৭০ টাকা।”
সঞ্জীব জানিয়েছেন, এই বছর বিশাল প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন তাঁরা। তিনি আরও জানান, গ্রাহকদের মধ্যে এই মিষ্টির এতই চাহিদা যে তাঁরা আরও বড় আকারের মিষ্টি চাইছেন। বাজারে এখন তৃণমূলের সন্দেশের (Trinamool Sandesh) চাহিদাই সবথেকে বেশি, এর পরেই চাহিদা বিজেপির মিষ্টির। কংগ্রেস ও সিপিআই (এম) মতো অন্যান্য দলগুলোর মিষ্টিও যে বিক্রি হচ্ছে না তা নয় তবে তা কিন্তু অন্যদের চেয়ে বেশ কম।"
কোচবিহারের রাসমেলার মাঠ থেকেই আজ মোদীকে জবাব দেবেন মমতা
গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজড করা যাবে এই মিষ্টি। সব মিষ্টিই অর্ডার অনুযায়ী টাটকা বানিয়ে দেবেন তাঁরা, সময় লাগবে সামান্যই। সঞ্জীব আরও বলেন, “এইতো সবে শুরু, আমি নিশ্চিত যে নির্বাচনী তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে চাহিদাও বাড়তে থাকবে।"
মল্লিকেরা যখন দলীয় প্রতীক নিয়ে মিষ্টি বানাতে উঠে পড়ে লেগেছেন, সেখানে শিবানী সুইটস জানিয়েছে কোনও গ্রাহক চাইলে তাঁরা নেতাদের মুখের প্রতিলিপি দিয়ে মিষ্টি বানিয়ে দেবেন। তাঁদের কথায়, যেভাবে হাই ভোল্টেজ প্রচারাভিযান চলছে, তাতে এই মিষ্টি খানিক মুখ ও ও মন ভালো করবে।
ইতিমধ্যেই বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, গ্রীষ্মকালে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে জনগণকে নকুলদানা ও জল বণ্টন করা হবে এবং জনগণের মধ্যে পালটা লাড্ডু বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি।
এই রাজ্যে সাত দফার নির্বাচন ১১ এপ্রিল শুরু হবে এবং নির্বাচনের শেষ তারিখ ১৯ মে। ভোট গণনা হবে ২৩ মে।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)