Tmc Candiadte List 2019: অভিনেতাদের প্রার্থী নির্বাচন করাটা একটা রাজনৈতিক কৌশল।
হাইলাইটস
- তৃনমূলের 42টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই তারকা প্রার্থী রযেছেন
- প্রার্থী হযেছেন মিমি চক্রবর্তী, নুসরৎ জাহান, মুনমুন সেন
- বক্স অফিসের সাফল্য দিয়েই ব্যালট বক্সে বাজিমাত করতে চাইছেন তিনি
কলকাতা: লোকসভার প্রয়াত অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় একসময় যাদবপুর(Jadavpur) কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে(Loksabha Elections) লড়েছিলেন। ১৯৮৪ সালে তাঁকে পরাজিত করেন তৎকালীন কংগ্রেস প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তৃণমূলের আইনজীবী পেশাগতভাবে আমেরিকার হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক সুগত বসুকে(Sugata Basu) সরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee), সেই সংবেদনশীল আসনে প্রার্থী করেছেন তরুণ অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীকে (Mimi Chakraborti) । ‘ক্রিসক্রস', ‘ভিলেন', ‘টোটাল দাদাগিরি' সিনেমার সফল অভিনেত্রী মিমি এবার যাদবপুর কেন্দ্রে লোকসভার প্রার্থী(Loksabha Elections 2019)।
বাংলা থেকে ভোটে দাঁড়ালে নোটবন্দির মতোই ব্যর্থ হবেন মোদীঃ মমতা
মিমি চক্রবর্তী(Mimi Chakraborti) একাই নন, অভিনেত্রী নুসরৎ জাহানও (Nusrat Jahan) বসিরহাট(Basirhat) কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন। বসিরহাট সাম্প্রদায়িক ভাবে সংবেদনশীল কেন্দ্র হিসাবে বিবেচিত হয়, কারণ এটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত। তৃণমূলের(Trinamul Congress) ৪২ জন প্রার্থীর মধ্যে অন্তত ৫ জন প্রার্থীই সিনেমা জগৎ থেকে আসা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এত জন প্রার্থী কেন সিনেমা জগতের থেকেই বেছে নেওয়া হলো? যার মধ্যে চারজনই আবার মহিলা? তিনি বলেন, ‘‘কেন নয়? যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে।''
নুসরৎ জাহান(Nusrat Jahan) আগেই বলেছেন, ‘‘একজন মহিলা পারবেন না, এমন কাজ হয় না। আজকের দিনে নারী ক্ষমতায়ন অনেক বেড়েছে। তারা নিজেদের পেশাগত দিক এর সঙ্গে সঙ্গে মানব সভ্যতারও যত্ন নিতে পারেন।''
রাজ্যের সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রকেই 'স্পর্শকাতর' ঘোষণা করা হোক, বলল কংগ্রেস
তবে তৃণমূলের বিরোধীরা বলছেন এটা আসলে ‘রাজনৈতিক চাল'। যে কোনও রূপোলি পর্দার সঙ্গে যুক্ত মানুষই চট করে অনেক বেশি মানুষের ভোট টেনে নিতে পারেন। তা ছাড়া প্রত্যেকটা দলের মধ্যে নানা অন্তর্দ্বন্দ্ব চলে কর্মীদের মধ্যে। কিন্তু কোনও অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি যদি নির্বাচনে সাফল্য নাও পান তা হলে তাকে দিব্যি ‘ঝেড়ে' ফেলা যায়। আর যদি তিনি সফল হন তা হলে সেটা পার্টির মুকুটে অতিরিক্ত পালক হিসেবে বিবেচিত হয়।
শুধু মিমি, নুসরত নয় চোখ ধাঁধানো তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় ৪১ শতাংশই মহিলা এবার
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘যাঁরা বক্স অফিসে সফল তাঁদের প্রতি ভোটারদের সব সময় একটা অতিরিক্ত আকর্ষণ থাকে। আগেও দেখা গিয়েছে সিনেমার সঙ্গে যুক্তদের মমতা ব্যানার্জি প্রার্থী করেছেন। এবারও সেই ফর্মুলাযই আবার প্রয়োগ করা হয়েছে।'' তিনি আরও বলেন, ‘‘সঠিকভাবে না জানলেও শুনছি, বিজেপি বিনোদ খান্না, শত্রুঘ্ন সিনহা, হেমা মালিনী, ধর্মেন্দ্রকে প্রার্থী করতে চলেছে। কংগ্রেস হয়তো নাগমাকে রাখবে। বেশ কিছু আঞ্চলিক দল সিনেমার তারকাদের উপরে পাখির চোখ করে রয়েছে।''
বাসুদেব আচারিয়াকে হারিয়ে আসা মুনমুন এবার লড়বেন বাবুলের বিরুদ্ধে
কিন্তু এ ভাবে চলতে থাকলে যারা দলের নিয়মিত সদস্য তাদের মনোবলে ভাঙ্গন ধরবে না? সৌগতবাবু বলেন, ‘‘আমার কাছে অন্তত এমন কোনো অভিযোগ আসেনি।''
কংগ্রেসের ঋজু ঘোষাল বলেন, ‘‘তারকাখচিত হওয়াটা বিষয় নয়, প্রশ্নটা হল যিনি জিতবেন তিনি মানুষের প্রতিনিধি হবেন। তাই মানুষকে আপনি কি ফিরিয়ে দিতে পারছেন সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আর রাজনীতি একটা যথেষ্ট সিরিয়াস বিষয়।''
বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং
তবে ২০১৪ সালে এই ‘স্ট্র্যাটেজি' কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষেই গিয়েছিল। অভিনেতা দেব ঘাটাল থেকে, মুনমুন সেন বাঁকুড়া(Bankura) থেকে জিতে গিয়েছিলেন। দু'টিই ছিল গ্রামীণ আসন। আপাতত মুনমুন সেনকে বিজেপি-র বাবুল সুপ্রিয়ের বিরুদ্ধে আসানসোল(Asansol) থেকে দাঁড় করানো হয়েছে। বাবুল ইতিমধ্যেই মজা করে একটি টুইটও করেছেন:
তবে ২০১৪ সালে সিপিএমের আইনজীবী বাসুদেব আচার্যকে বেশ বড় ব্যবধানে হারিয়েছিলেন মুনমুন সেন।
কিন্তু সব শেষেও প্রশ্নটা রয়েই যাচ্ছে। বাস্তব রাজনীতি নাকি তারকাদের গ্ল্যামার! তবে মমতা ব্যানার্জি যে এই সুযোগের বেশিটাকেই জেতার ফর্মুলায় কাজে লাগিয়ে ফেলেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন দেখা যাক বক্স-অফিসের সাফল্য অর্জন কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে ভোটের ব্যালট বক্সে।