কলকাতা: রবিবার শেষ হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের(Lok Sabha Election 2019) ভোটগ্রহণ পর্ব। আর তারপরেই হিংসা ছড়াল রাজ্যে। পুলিশ সূত্রে পাওয়া খবর থেকে জানা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের দু'টি জেলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ, বিরোধী দলের নির্বাচনী এজেন্টদের মারধর করা হয়েছে। এছাড়াও কর্মীদের বাড়ি ও গাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে। আশঙ্কা ছিলই। সেই আশঙ্কা সত্যি করে এবারের নির্বাচনের সপ্তম তথা শেষ পর্যায় সম্পন্ন হতেই এভাবে হিংসা ছড়াল রাজ্যে। রবিবার ছিল রাজ্যের ন'টি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ (Election 2019)। পাশাপাশি চারটি বিধানসভা আসনের উপ নির্বাচনও ছিল। বিকেলে ভোট শেষ হতেই কোনও কোনও জায়গায় শুরু হয় মারপিট ও গণ্ডগোল।
Elections 2019: মমতা-চন্দ্রবাবু বৈঠক, বাড়ছে জল্পনা
মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাগর বিধানসভা এলাকায় দুই বিজেপি (BJP) নেতা চণ্ডাল মণ্ডল ও নন্টু বেরা আক্রান্ত হন। তাঁদের সাগর গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ, রবিবার রাতে তাঁদের প্রচণ্ড মারধর করে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। ভোট শেষে বাড়ি ফেরার পথেই তাঁরা আক্রান্ত হন। এক পুলিশ অফিসার জানাচ্ছেন, ‘‘দুই আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করার পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কাউকে এখনও গ্রেফতার না করা হলেও তদন্ত চলছে।'' এদিকে দমদম এলাকার এক বিজেপি কর্মীর বাবাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল (TMC) সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এক স্থানীয় বিজেপি নেতা এই অভিযোগ জানিয়েছেন।
এক্সিট পোলের কথা বলে ইভিএম বদলের ছক হয়েছেঃ মমতা
জয়নগর লোকসভার অন্তর্গত গোসাবায় তিনজন বিজেপি সমর্থকের বাড়িতে হানা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে। এক স্থানীয় বিজেপি নেতা জানাচ্ছেন, কয়েকজন তৃণমূল সমর্থক আমাদের দু'জন কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর চালায় রবিবার। সোমবারও এক কর্মীর বাড়িতে হামলা চালায় ওরা।'' বারাসত লোকসভার হাবড়ায় তৃণমূল (TMC) ও বিজেপি (BJP) সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কুলতলা এলাকায় এক বিজেপি সমর্থককে মারধর করার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ওই সংঘর্ষ শুরু হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের তরফ থেকে অবশ্য অভিযোগ, তৃণমূের পঞ্চায়েত নেতার গাড়ি চুরির চেষ্টা করছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। তাই থেকেই অশান্তির সূত্রপাত।
সন্ত্রাসের অভিযোগে আটটি লোকসভা কেন্দ্রের কয়েকটি বুথে পুননির্বাচনের দাবি জানাল বিজেপি
এদিকে সিপিআই(এম) কর্মীদেরও মারধরে অভিযুক্ত হয়েছে তৃণমূল। কলকাতা (উত্তর) লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কাশীপুর এলাকায় সোমবার তাদের দলের নির্বাচনী এজেন্টদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ করে তারা। অন্যদিকে মানিকতলায় তৃণমূলের অফিস ভাঙচুর ও দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষে ১০-১২ জনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ, বহিরাগতদের আক্রমণের ফলেই ওই ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা হিংসায় বিশ্বাস করি না। কর্মীদের শান্ত থাকতে বলা হয়েছিল। বুথের কয়েকজন কর্মীর মধ্যে ইগোজনিত কারণে সমস্যা তৈরি হয়।''
অশান্তি উপ নির্বাচনেও,গণনা পর্যন্ত রাজ্যে বাহিনী রাখার দাবি নির্মলার
রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলতে থাকা রাজনৈতিক সংঘর্ষের প্রতিবাদে ভাটপাড়ার বাসিন্দার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মাস দুয়েক আগে বিধায়ক অর্জুন সিংহকে সরিয়ে দেওয়ার পরেই উপ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই এলাকায়। অর্জুন-পুত্র পবনকুমার সিংহ ও সারদা-নারদা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মদন মিত্র (Madan Mitra) ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কাঁকিনাড়া স্টেশনে ওই সংঘর্ষের প্রতিবাদে অবরোধ করা হলে পূর্ব রেলওয়ের শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর শাখায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। পাশাপাশি বিজেপি সমর্থকরা জগদ্দল পুলিশ স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান। স্থানীয় জনতার নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রতিরক্ষা আধিকারিকের নিস্পৃহতার দাবি তুলে তাঁরা প্রতিবাদে মুখর হন। এদিকে মদন মিত্রও মুখ্য নির্বাচন অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন অর্জুন ও তাঁর পুত্রকে অভিযুক্ত করে। তৃণমূল নেতার অভিযোগ, এলাকায় সন্ত্রাস করছেন অর্জুন ও তাঁর ছেলে পবনকুমার।