কংগ্রেস প্রার্থী শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়ালের সমর্থনে কানপুরে রোড-শো করলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী
কানপুর: সক্রিয় রাজনীতিতে তিনি পা রেখেছেন চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। তবে, তার অনেক আগে থেকেই তাঁর তুলনা করা হয় তাঁর ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে। কংগ্রেসের সমর্থক হোক বা বিরোধী দলের, তাঁর নীতির বিরোধিতা কেউ করুক বা না করুক, এই একটি বিষয়ে প্রায় সকলেই একমত যে, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী কোথাও গিয়ে তাঁর সমস্ত ভাবভঙ্গি, হাসি, আদবকায়দা নিয়ে তাঁর ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধীর মতোই। গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা এই প্রায় কাল্ট হয়ে যাওয়া জল্পনাটি নিয়ে ফের একবার কথা বললেন স্বয়ং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা শুক্রবার। তিনি বলেন, তাঁর ঠাকুমার ইন্দিরা গান্ধীকে অনুসরণ করেই দেশের জন্য কাজ করতে তিনি পিছপা হবেন না কখনওই।
তিনি বলেন, “ইন্দিরাজি'র কাছে আমি কিছুই নই। কিন্তু, দেশের জন্য সেবা করার যে ইচ্ছা তিনি পোষণ করতেন, সেই একই ইচ্ছা পোষণ করি আমি ও আমার দাদা (রাহুল গান্ধী)। কেউই আমাদের কাছ থেকে সেই ইচ্ছাটুকু ছিনিয়ে নিতে পারবে না। আপনারা চান বা না চান, আমরা আপনাদের সেবা করে যাওয়ারই চেষ্টা করব”। উত্তরপ্রদেশের কানপুরে কংগ্রেস প্রার্থী শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়ালের হয়ে প্রচারের পর একটি বৈঠকে দলীয় কর্মীরা তাঁর সঙ্গে তাঁর ঠাকুমার তুলনার প্রসঙ্গ তুললে এই কথাগুলি বলেন তিনি।
"বিজেপি-আরএসএস সাহায্য করছে তাঁকে..." মমতার অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়
এরপরই ওই জায়গা থেকেই বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেন তিনি। তিনি বলেন, “দেশের নয়, বিজেপি কেবল নিজেদের উন্নতি নিয়েই ভাবিত। এছাড়া ওদের আর কোনও লক্ষ্য নেই। দেখুন, একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। সরকার দু'ধরনের হয়। কেউ দেশের কথা ভাবে আর কেউ নিজেদের কথা ভাবে। বিজেপি সরকার এই দ্বিতীয় ধরনের। আত্মপ্রচার ছাড়া ওরা আর কিস্যু জানে না”।
একটি বিরাট রোড-শো'ও করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সেখানে তিনি বলেন, শাসক বিজেপি'র বহু প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও কানপুরের কোনও উন্নতিই হয়নি। তাঁর কথায়, “ওরা তো বলেছিল কানপুরকে ‘স্মার্ট সিটি' বানিয়ে দেবে। কিন্তু, আদৌ তা হল কি? কিছুই তো করল না। যুবসমাজের কাছে কাজ নেই। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে আত্মহত্যা করছে কৃষকরা। আমরা বলেছি যে, প্রতি বছর দরিদ্রদের ৭২ হাজার টাকা দেব। ওদিকে বিজেপি দাবি করেছে, অত টাকাই নেই। অথচ, বড় বড় ব্যবসায়ীদের পকেট ভরানোর জন্য বিজেপির কখনও টাকার অভাব হয় না”!
তিনি রোড-শো'তে একহাত নেন নোটবাতিল ও জিএসটি প্রণয়নের সিদ্ধান্তকেও। তাঁর কথায়, গোটা দেশের এক বিশাল সংখ্যক মানুষ সরকারের এই দুই নীতির ফলে সবদিক দিয়েই ভেঙে পড়েছেন।
দার্জিলিং-এর ৪০'টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাল বিজেপি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর মধ্যে তুলনা করে তিনি বলেন, “এই দুজনকে ভালো করে দাঁড়িপাল্লায় বসিয়ে দেখুন। একজন কোনওকিছুই সহ্য করতে পারেন না আর অন্যজন প্রায় প্রতিদিনই অকথ্য অপমান সহ্য করে চলেছেন। বিজেপি তো রাহুল গান্ধীকে প্রতিদিন অপমান করে। তাঁর মা, বাবা, ঠাকুমা সকলের নামেই বাজে কথা বলে যায় দিনের পর দিন। অথচ, তিনি (রাহুল গান্ধী) হাসিমুখে শুনে যান। তিনি নিজেকে প্রতিদিন আগেরদিনের থেকেও বেশি উন্নত করার কথা ভাবেন। যাঁরা তাঁর সমালোচনা করছেন, তাঁদের মুখ চেপে ধরার কথা ভাবেন না। একেই বলে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা”।
প্রিয়াঙ্কার ডাকে মন্ত্রমুগ্ধের মতো সাড়া দিয়ে ওঠেন কানপুরের অজস্র মানুষ। হাসিটি লেগেই থাকে তাঁর মুখে।