কলকাতা: আজ (শনিবার) মহালয়া। পিতৃপক্ষের শেষ। দেবীপক্ষের সূচনা। আজ থেকে আর সাত দিন পরেই হবে মা দুর্গার বোধন। আজ ভোর থেকে তাই কলকাতার সমস্ত গঙ্গার ঘাটে তোড়জোড় তর্পণের। পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে জলদান করে তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করেন তাঁদের পরের প্রজন্ম।
যুগ পরিবর্তেনের সঙ্গে সঙ্গে পুরুষের পাশাপাশি মহিলারাও এখন ঘাটে নেমে বুক গলা জলে দাঁড়িয়ে তর্পণ করেন। স্মরণ করেন সেই সব আপন জনদের। যাঁরা একসময় খুব কাছের ছিলেন। আজ তাঁরা মরলোকে।
গতকাল রাত ১২-টার আগেই পড়ে গেছে অমাবস্যা। আজ তার ভোর চারটে থেকে মানুষের ভিড় আহিরীটোলা ঘাটে। হিন্দু শাস্ত্র মতে, সূর্যোদয়ের আগে তর্পণ নাস্তি। তাই ভোরের আলো ফোটার অপেক্ষায় সবাই। একটু একটু করে আকাশ রাঙা হতেই একে একে সবাই নামতে থাকেন গঙ্গাবঙ্গে। পতিতপাবনীর জলে স্নান করে নিজেকে পবিত্র করার পাশপাাশি পিতৃ-মাতৃকুলের পরিবারের ছেড়ে চলে যাওয়া আপনজনের আত্মার সদগতি কামনা করেন। আবাহন জানান দশপ্রহরণধারিণীর।
পিছিয়ে নেই একুশ প্রজন্মও। এই যুগের প্রতিনিধি কাল রাতে ট্রেন ধরেছে টিটাগড় থেকে। আজ সকালে হাওড়া স্টেশনে নেমেই মা-দিদির সঙ্গে চলে এসেছে গঙ্গার ঘাটে। মন্ত্র উচ্চারণ করে, জলদান করে শ্রদ্ধা জানিয়েছে তাঁর দাদুকে। মান্যতা দিয়েছে বহু যুগ ধরে চলে আসা হিন্দু শাস্ত্র পুরাণ, আচার-বিচারকে। নিয়ম মেনে সে যেন বলতে চেয়েছে, সে ভোলেনি তার পূর্বপুরুষদের অবদান।
আজ রাত ১২ টা পর্যন্ত থাকবে এই বিশেষ তিথি। তাই সারা দিন ধরেই এই ছবি দেখা যাবে কলকাতার সমস্ত গঙ্গার ঘাটে। আর নীরবে স্রোতস্বিনী বয়ে চলবে আপন মনে। প্রতিবছরের মতো এবছরেও মহালয়ার তর্পণের সাক্ষী হয়ে।