আতঙ্কের এক নাম এখন করোনা ভাইরাস (Coronavirus), ভারতে হু-হু করে ছড়াচ্ছে ওই সংক্রমণ। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে রাজ্যটি করোনার প্রকোপে পড়েছে তা হল মহারাষ্ট্র। পরিস্থিতি (Coronavirus Crisis) এমন দাঁড়িয়েছে যে, ওই রাজ্যের (Maharashtra) সবচেয়ে ব্যস্ত শহর মুম্বইয়ে এখন শুধুই মারণ কান্না। কেননা চিনের যে উহান প্রদেশ থেকে প্রথম করোনা সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছিল, এখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে সেই উহানকেও টপকে গেছে দেশের বাণিজ্যনগরী (Mumbai)। পরিসংখ্যান বলছে, উহানে করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫০,৩৩৩, যার মধ্যে ৩৮৬৯ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আর এদিকে মুম্বইয়ে এখনও পর্যন্ত ওই মারণ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫১,১০০ জন। অর্থাৎ সংক্রমণের বিচারে উহানকেও ছাড়িয়ে গেছে মুম্বই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি ধারাভিতে কোভিড- ১৯ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় দ্রুতহারে সংক্রমণ বেড়েছে।
জাঁকিয়ে বসছে কোভিড- ১৯ আতঙ্ক, করোনায় ভুগে এবার মৃত্যু হল বিধায়কের
ওদিকে যেখানে গোটা চিন দেশে করোনায় আক্রান্ত ৮৪,০০০ এর কিছু বেশি মানুষ, সেখানে ভারতের করোনা হটস্পট মহারাষ্ট্রে ওই মারণ রোগ থাবা বসিয়েছে মোট ৯০,৭৮৭ জনের শরীরে। তবে আশার কথা এই যে, যোগ্য চিকিৎসা সহায়তায় ওর মধ্যে ৪২,৬৩৮ জন রোগী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সেরে উঠেছেন।
সুখবর! এই প্রথম ভারতে সক্রিয় করোনা রোগীদের সংখ্যাকে টপকে গেল সুস্থতার সংখ্যা
মহারাষ্ট্র সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেরাজ্যে নতুন করে ২,২৫৯ জন করোনা পজিটিভ হিসাবে ধরা পড়েছেন, যা সারা দেশে নতুন করোনা আক্রান্ত ৯,৯৮৫ জনের হিসাবে এক চতুর্থাংশ।
একদিনের মধ্যে ওই রাজ্যে করোনা প্রাণ নিয়েছে আরও ১২০ জনের, এর ফলে মহারাষ্ট্রে সব মিলিয়ে করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে মোট ৩,২৮৯ জনের, যা দেশের সব রাজ্যের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যার হিসাবে সর্বোচ্চ।
এদিকে টানা লকডাউনের পর ধীরে ধীরে মহারাষ্ট্রেও শিথিল করা হচ্ছে বিধিনিষেধ। গত সপ্তাহ থেকেই সেরাজ্যে মোট ১৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে সরকারি অফিস ও ১০ শতাংশ কর্মী নিয়ে বেসরকারি অফিসগুলোতে কাজ শুরু করার অনুমতি দিয়েছে উদ্ধব ঠাকরে সরকার। পাশাপাশি বাধ্যতামূলক সামাজিক দূরত্ব এবং সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত নিয়মাবলী মেনে বৈদ্যুতিক সংক্রান্ত কাজ, কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে যুক্ত ও প্রযুক্তিসংস্থার সঙ্গে যুক্ত মানুষদেরও কাজ শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে অনেকেই বলছেন, এরপর থেকে আরও দ্রুতহারে ওই রাজ্যে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে।
যদিও দেশের বেশিরভাগ রাজ্যে ৮ জুন থেকে ধর্মীয় স্থান, শপিংমল, হোটেল এবং রেস্তোঁরা খুলে দেওয়া হলেও মহারাষ্ট্রে এখনও সেগুলো বন্ধই রয়েছে।
তবে শুধু মহারাষ্ট্রই নয়, সারা দেশেই হু-হু করে করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। তবিশ্বের মধ্যে যেসব দেশ এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবার সেই তালিকায় পঞ্চম স্থানে পৌঁছে গেছে ভারত। করোনা আক্রান্তের বিচারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, রাশিয়া এবং ব্রিটেনের পরেই রয়েছে আমাদের দেশ।