Maharashtra: এনসিপি এবং কংগ্রেসের সমর্থনের জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে শিবসেনা
মুম্বই:
মহারাষ্ট্রে সরকার গড়া নিয়ে আজই জোট ঘোষণা করতে পারে শিবসেনা, কংগ্রেস এবং এনসিপি। সমস্ত দলের তরফে সিদ্ধান্ত হয়েছে পাঁচ বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবে শিবসেনার, এমনটাই জানিয়েছেন সঞ্জয় রাউত। “মহারাষ্ট্র বিকাশ অগধি” সরকারে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেই নেতৃত্ব দেবেন কিনা, তা এখনও ঠিক নয়। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের সঙ্গে দেখা করেন উদ্ধব ঠাকরে এবং তাঁর ছেলে আদিত্য ঠাকরে। সূত্রের খবর, যখন শরদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে বলেন, তিনি জানান, দলের বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবেন। বৈঠকে আদিত্য ঠাকরের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রথমবার তিন দল একসঙ্গে সরকার গড়ছে, ফলেে তাদের মধ্যেএকটি কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম তৈরি করা হবে আজই।
মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
"শুক্রবারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শিবসেনাকে সমর্তন দেওয়ার পক্ষে আমাদের যুক্তি ছিল দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সরকারের আমলে এ রাজ্যে হওয়া দৈন্যদশার অবসান ঘটানো। আমরা মহারাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্থ রাজ্যে পরিণত হতে দিতে পারি না", এনডিটিভিকে বলেন কংগ্রেস নেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চৌহ্বান ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শরদ পাওয়ার দিল্লি থেকে ফিরে আসার সময় উদ্ধব ঠাকরে এবং তাঁর পুত্র আদিত্য ঠাকরে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তাঁর বাসভবনে যান। সূত্রের খবর, শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত এবং এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এনডিটিভি জানতে পেরেছে যে নতুন জোটের ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচিতে কৃষক এবং চাকরি এবং শিবসেনার ভর্তুকিযুক্ত খাদ্য পরিকল্পনার উপর জোর দেবে।
তিনটি দলই নীতিগতভাবে একমত হওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু এখনও দুটো বিষয়ে সহমত হয়নি শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস। শিবসেনা যেমন অর্ধমেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী পদে রাজি নয়, কিন্তু এনসিপি চাইছে দুই দলের মধ্যে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদের দায়িত্ব নেওয়া হোক। আর কংগ্রেসের যে সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচি আছে তাতে তাঁরা বলছে, শিবসেনা যেহেতু একটি হিন্দুত্ববাদী দল, তাই "ধর্মনিরপেক্ষ" শব্দটি জোটে অন্তর্ভুক্ত করা উপযুক্ত নয়।
শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত জানিয়েছেন, শনিবার তিনটি দলের বিধায়কদের সমর্থনের চিঠি রাজ্যপালের হাতে হস্তান্তর করা হবে। "শনিবার তিন দলের বিধায়কদের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির হাতে তুলে দেওয়া হবে" তিনি বলেছিলেন। সেনা ও এনসিপির সূত্র বলছে, "সবকিছু ঠিকঠাক চললে রবিবার বা সোমবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে।"
বৃহস্পতিবার সকালে সনিয়া গান্ধির বাসভবনে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক করে দলনেত্রীকে বোঝান যে মহারাষ্ট্রের "পরিবর্তিত পরিস্থিতি"-তে উদ্ধব ঠাকরের দলের সঙ্গে জোট বাঁধার বিষয়টি বিবেচনা করতে। কেননা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় শত্রু হ'ল বিজেপি।
বিগত তিন দশক ধরে অংশীদার বিজেপি-র সঙ্গে জোট ভাঙার পরে এখন শিবসেনা এনসিপি এবং কংগ্রেসের সমর্থনের জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এর আগে শিবসেনা বিজেপিকে প্রস্তাব দিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী পদটিতে দুটি মেয়াদে দুই দলের নেতার বসার ব্যাপারে কিন্তু বিজেপি তা প্রত্যাখ্যান করায় জোট ভেঙে দেয় শিবসেনা।
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে শিবসেনার সমর্থনের অনুরোধ বিবেচনার পর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের মধ্যেএক বৈঠক হয়। মোদির সঙ্গে পাওয়ারের ওই বৈঠক নিয়ে তীব্র জল্পনা শুরু হলে এর কয়েক ঘণ্টা পরেই আবার এনসিপির সঙ্গে বৈঠক করে কংগ্রেস। সংসদে এনসিপির হয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রশংসাসূচক বাক্যও উদ্বেগে ফেলে কংগ্রেসকে।
৪৫ মিনিটের প্রধানমন্ত্রী-পাওয়ার বৈঠক নিয়ে বিচলিত হয়ে পড়ে কংগ্রেস। জানা যায়, পাওয়ারের সমর্থন চেয়েছি বিজেপি। শিবসেনার থেকে এনসিপি মাত্র দুটি আসন পিছনে রয়েছে এবং বিজেপিকে তাঁরা সমর্থন করলে মহারাষ্ট্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখিয়ে সরকার গড়তে পারবে গেরুয়া দল এবং প্রয়োজনে শরদ পাওয়ারকে দেওয়া হতে পারে মুখ্যমন্ত্রী পদ, এমন প্রস্তাবও নাকি দেয় বিজেপি, এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে মহারাষ্ট্রে কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারায় মহারাষ্ট্রে অচলাবস্থার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে সেখানে জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন।
Post a comment