তাঁর দল কংগ্রেস এবং এনসিপির সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার উপায় খুঁজে বের করবে, বলেন Uddhav Thackeray
মুম্বই: একেই বলে ক্ষমতার টান বড় টান। মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আদর্শগত ভাবে বিরোধী দুটি দল শিবসেনা ও কংগ্রেস নিজেদের মধ্যে সে রাজ্যে (Maharashtra) সরকার গঠনের বিষয়ে বৈঠক করে। জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray) সাক্ষাৎ করেন কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেলের (Ahmed Patel) সঙ্গে। শরদ পাওয়ারের এনসিপি-কংগ্রেস এবং শিবসেনার প্রায় একযোগে সাংবাদিক সম্মেলন হওয়ার পরেই গভীর রাতে আলোচনা হয় শিবসেনা-কংগ্রেসের মধ্যে। "আমরা আমাদের ভিন্ন মতাদর্শের মধ্যেও এক সঙ্গে কাজ করার একটি উপায় খুঁজে বের করবো", সাংবাদিক সামনে হাজির হয়ে বলেন উদ্ধব ঠাকরে।পাশাপাশি তিনি ওই অভিযোগ করেন যে বিজেপি'র পক্ষ থেকে শিবসেনার বিধায়কদের নিজেদের পক্ষে টানা চেষ্টা করা হচ্ছে।
শিবসেনাকে সমর্থন দিলে মুখ্যমন্ত্রী পদেরও দাবি জানাবে এনসিপি: সূত্র
মুখ্যমন্ত্রীত্বের দাবিতে দীর্ঘদিনের সঙ্গী বিজেপির হাত ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন: "বিজেপি-শিবসেনা বহু বছর ধরে একসঙ্গে ছিল .... হ্যাঁ, রাম মন্দির আমাদের জোটবদ্ধ করেছিল, ভগবান রামও তাঁর প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। এখন রাজনীতির জল অন্য দিকে গড়াচ্ছে। এর জন্যেও একটু সময় দিন।"
মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়ার পর, এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে সরকার গঠনের আশা ধরে রাখেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকর । দীর্ঘদিনের বিরোধী এবং আদর্শগতভাবেও ভিন্ন দল কংগ্রেসের সঙ্গে মতপার্থক্য সরিয়ে রেখে, তিনি বলেন, একসঙ্গে কাজ করার পথ বের করেছিল মেহবুবা মুফতির পিপিডি এবং বিজেপি, বর্তমান পরিস্থিতিতে এটাও সম্ভব। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি খুঁজে বের করছি, কীভাবে ভিন্ন আদর্শের দলগুলি বিজেপির সঙ্গে জোট করে”, তিনি আরও বলেন, “আমরা একসঙ্গে কাজ করার পথ বের করব...আমাদের ৬ মাস সময় রয়েছে, এবং আমি বিজেপিকে আদর্শের প্রশ্ন করতে চাই...কী করে তারা নীতিশ কুমার, পাসোয়ান, পিডিপি এবং নাইডুর সঙ্গে যেতে পারে”।
সুপ্রিম কোর্টে শিবসেনা, “বিজেপির পক্ষে কাজ করছেন রাজ্যপাল”, তোপ উদ্ধব ঠাকরের দলের
শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের মধ্যে বারেবারে আলোচনার সমাপ্তি ঘটে সোমবার, শেষ মুহুর্তে. যে সময়ে সমর্থনের চিঠি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে যাওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছিল শিবসেনা, কংগ্রেস জানিয়ে দেয়, কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি তারা এবং শরদ পাওয়ারের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ধীরে চলার বার্তা দিয়েছেন সনিয়া গান্ধি—ফলে শরদ পাওয়ারের দলকে সরকার গঠনে আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যপাল। সেই প্রস্তাবও কার্যকর হয়নি, শরদ পাওয়ার আরও সময় চাওয়ায়, এবং রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়।
এদিকে, শিবসেনার ৫৬ টি আসন থেকে মাত্র ২টি আসন কম থাকায় এনসিপি মনে করছে যে মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস ও তাঁদের সমর্থনে উদ্ধব ঠাকরের দল সরকার গড়লে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হবে তাঁরাও।
সোনিয়া গান্ধির নির্দেশে কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেল, মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং কেসি ভেনুগোপাল মুম্বইয়ে সরকার গঠনের বিষয়ে কথাবার্তা এগোনোর বিষয়ে দায়িত্ব নেন। "আমরা (কংগ্রেস এবং এনসিপি নেতারা) একটি কার্যকর (সাধারণ) ন্যূনতম কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করেছি যাতে সরকার গঠনের কাজে এগোনো যায়", বলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার।
তাঁর পাশে বসে কংগ্রেস নেতা আহমদ প্যাটেল জানান, শিবসেনাই কংগ্রেস-এনসিপি-র কাছে সমর্থন চেয়েছিল।
"ন্যূনতম কর্মসূচি ঠিক না করে শিবসেনাকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না", বলেন কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেল।
মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে ১৪৫ জন বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন, যেখানে কংগ্রেস ও এনসিপি যদি শিবসেনার হাত ধরে তবে তাঁদের মোট বিধায়কের সংখ্যা হবে ১৫৪ জন।