Maharashtra Government: মুম্বইয়ে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের সঙ্গে দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং অজিত পাওয়ার (পিটিআই)
হাইলাইটস
- শনিবার দেবেন্দ্র ফডনবিশের সঙ্গে শপথ নেন অজিত পাওয়ার
- শুক্রবার রাতে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের বৈঠক চলাকালীনও কোনও ইঙ্গিত মেলেনি
- তাঁর বিরুদ্ধে সেচ এবং ব্যাংক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে
মুম্বই: কথায় বলে রাজনীতির চিরকালীন বন্ধু বা শত্রু বলে কিছু হয় না, সেই কথারই জলজ্যান্ত প্রমাণ দেখা গেল মহারাষ্ট্রে। যে অজিত পাওয়ারকে দুর্নীতির দায়ে বারবার বিদ্ধ করেছে বিজেপি, সেই তিনিই মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) বিজেপির ত্রাতা হলেন। এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের ভাইপো (Ajit Pawar) পদ্মবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে শুধু যে সরকার গড়তে (Maharashtra Government) তাঁদের সমর্থন জোগালেন তা নয়, দেবেন্দ্র ফড়নবিশের মন্ত্রিসভায় উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতেও দেখা গেল তাঁকে। অজিত পাওয়ারের এই পদক্ষেপ এনসিপির পাশাপাশি পাওয়ার পরিবারকেও বিভক্ত করেছিল। তাঁর কাকা শরদ পওয়ার অভিযোগ করেন যে তিনি (অজিত পাওয়ার) শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোটের পক্ষে দলের বিধায়কদের কাছ থেকে নেওয়া সমর্থনের চিঠির অপব্যবহার করেছেন। এই ঘটনার পর যদিও অজিত পাওয়ারকে এনসিপির পরিষদীয় দলনেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তবে এখনও তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই জানিয়েছেন শরদ পাওয়ার।
শুক্রবার রাতেও সেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের সভায় যোগ দিয়েছিলেন অজিত, এমনকি সেই সময়েও তিনি এমন কোনও ইঙ্গিত দেননি। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন যে তাঁর অজিত পাওয়ারের দৈহিক ভাষা দেখে "সন্দেহজনক" মনে হয়েছিল। ওই শিবসেনা সাংসদ বলেন, "রাত ৯ টা পর্যন্ত এই মহাশয় (ব্যক্তি) আমাদের সঙ্গে বসে আলোচনায় অংশ নিচ্ছিলেন। তারপরই তিনি হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে গেলেন। কথা বলার সময় তিনি আমাদের চোখের দিকে তাকাচ্ছিলেন না, তখনই আমার সন্দেহ হচ্ছিল" ।
অজিত পাওয়ারের বিজেপিকে সমর্থন ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, বললেন শরদ পাওয়ার
সূত্রের খবর, শরদ পাওয়ারের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে অনেকগুলি দুর্নীতির মামলা রয়েছে। সেগুলির থেকে বাঁচতেই তিনি ক্ষমতাসীন গেরুয়া দলের বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করছেন। একটি সেচ কেলেঙ্কারি এবং একটি ব্যাংক দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত অজিত পাওয়ার বেশ কিছুদিন ধরেই নাকি দেবেন্দ্র ফড়নবিশের সঙ্গে যোগাযাোগ রাখছিলেন বলে জানা গেছে।
Maharashtra: সনিয়া গান্ধির সঙ্গে শরদ পাওয়ারের সাক্ষাতের পরের দিনই বড়সড় পদক্ষেপ করে বিজেপি
সূত্র বলছে, এনসিপির উপ প্রধান অজিত পাওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন যে তাঁর কাকা ভবিষ্যতে কোনও এক সময় নিজের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলের জন্যে তাঁকে ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করতে পারেন।
মহারাষ্ট্র অভ্যুত্থানের পরে শরদ পাওয়ার এবং উদ্ধব ঠাকরের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে নিখোঁজ হওয়া আরেক এনসিপি নেতা ধনঞ্জয় মুণ্ডে অজিত পাওয়ারের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০১৪ সালে ৭০,০০০ কোটি টাকার সেচ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে কংগ্রেস-এনসিপি সরকারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল অজিত পাওয়ারকে।
পিছন থেকে ছুরি মেরেছেন অজিত পাওয়ার, মহারাষ্ট্রের প্রসঙ্গে বলল শিবসেনা
পরে দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ক্ষমতা এসে অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
মহারাষ্ট্র নির্বাচনের আগেই, সেপ্টেম্বরে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট একটি সমবায় ব্যাংক কেলেঙ্কারির অভিযোগে শরদ পাওয়ার এবং অজিত পাওয়ার, দুজনের নামেই চার্জশিট দাখিল করে। তাঁদের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়।
তখনই হঠাৎ করে বিধায়ক পদ ছেড়ে দিয়ে অজিত পাওয়ার তাঁর দলকে অবাক করে দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন যে তিনি এমন কাজ করেছেন কারণ তিনি "চান না তাঁর জন্যে তাঁর কাকার বদনাম হোক"।
অজিত পাওয়ার এও বুঝতে পারছিলেন যে এনসিপিতে তাঁর ক্ষমতা হ্রাসের চেষ্টা করা হচ্ছে। সুপ্রিয়া সুলের সঙ্গে তাঁর ঠাণ্ডা যুদ্ধ তো চলছিলই, তার মধ্যে তাঁর ছেলে পার্থও এই বছরের শুরুতে লোকসভা নির্বাচনে হেরে যান।
পাশাপাশি মহারাষ্ট্র নির্বাচনের প্রচারের সময় তাঁর একটি গাড়ি থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়, তখনও তিনি খবরের শিরোনামে ছিলেন।
কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেছেন, "মহারাষ্ট্র নির্বাচনের আগে বিজেপি বলেছিল যে অজিত পাওয়ারকে মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলে সেচ কেলেঙ্কারির অভিযোগে বন্দি করা হবে। নির্বাচনের পরে তাঁকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়েছে" ।
শরদ পাওয়ার বলেন যে তাঁর ভাইপো খারাপ হয়ে গেছেন এবং এও বলেন যে বিজেপির পাশে থাকার বিষয়টি পুরোপুরিই অজিত পাওয়ারের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।