শনিবার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ
মুম্বই: মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর (Chief Minister of Maharashtra) পদ থেকে ইস্তফা দিলেন দেবে্দ্র ফড়নবিশ (Devendra Fadnavis), মঙ্গলবার তাঁর সরকারকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “যাইহোক, পরের সরকার তৈরি হবে...যেই নেতৃত্ব দিক না কেন...আমি বলতে পারি নিশ্চিত-সেটা খুবই অস্থায়ী সরকার হবে। সরকারের চাকার অভিমুখ তিনদিকে”। দলের প্রাক্তন জোটসঙ্গীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেন, “বিজেপি জনরায় পেয়েছে। মানুষের রায় অনুযায়ী, আমরা সরকার গঠনে চেষ্টা করেছিলাম, তবে শিবসেনা মনে করেছে, এটা সংখ্যার খেলা, আমরা মনে করি, তাদের দরকষাকষির ক্ষমতা বাড়তে পারে”।
পদত্যাগ করলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ
দিল্লিতে এদিন সংসদে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, তারপরেই পদত্যাগ করেন ফড়নবিশ। মঙ্গলবারের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, বুধবার সন্ধ্যায় আস্থাভোট করে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে, তারপরেই বৈঠকে বসেন বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা। মহারাষ্ট্রে দলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সেখানে দেবেন্দ্র ফড়নবিশের পদত্যাগ করা উচিত, নাকি আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা উচিত, তা নিয়ে বৈঠক হয়। তবে বিজেপির পক্ষে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় আস্থা ভোটে জয়লাভ করে কঠিন। বৈঠকের পরেই দেবেন্দ্র ফড়নবিশের কাছে মেসেজ যায়।
খবর, প্রধানমন্ত্রী, অমিত শাহের মেসেজ পেতেই, পদত্যাগ দেবেন্দ্র ফড়নবিশের
দেবেন্দ্র ফড়নবিশের পদত্যাগকে স্বাগত জানিয়েছেন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, তিনি বলেন, “যাঁরা মানুষের রায় অপহরণ করে নিয়েছিলেন”, তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাব প্রকাশে এসেছে। তাঁর কথায়, “মহারাষ্ট্রের মানুষের ক্ষমা চাওয়া উচিত দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং অজিত পাওয়ারের। তাঁদের সরকার মিথ্যা এবং অক্ষমতার ওপর দাঁড়িয়েছিল এবং তাসের ঘর ছিল”।
দেবেন্দ্র ফড়নবিশের পদত্যাগের আগে, ইস্তফা দেন শনিবার উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার। বিজেপিকে সমর্থন জানিয়ে মহারাষ্ট্রে চমক দিয়েছিলেন তিনি, এবং দাবি করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে রয়েছেন এনসিপির ৫৪জন বিধায়ক, ফলে বিজেপি পৌঁছেছিল ১৭০-এ।
বুধবার মহারাষ্ট্রে আস্থা ভোট, বিজেপি বিরোধী জোটের সঙ্গে একমত হয়ে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
পরবর্তীকালে, প্রায় সমস্ত বিধায়করাই দলের পক্ষে চলে আসেন, এবং গতকাল সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের পাঁচতারা হোটেলে দলের শক্তিপ্রদর্শনে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৫০জন। পরিষ্কার হয়ে যায়, দলের মধ্যে একঘরে হয়ে যাচ্ছেন অজিত পাওয়ার এবং বিজেপির পক্ষে আদৌ সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক নেই।
এর ফলে ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ১৪৫ অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে বিজেপির। তাদের দলের রয়েছেন ১০৫জন বিধায়ক এবং ১১ জন নির্দল বিধায়ক। আস্থা ভোটে জয় পেতে তাদের আরও ৪০ জন বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন।
ভারতীয় রাজনীতিতে সবচেয়ে পুরানো জোটসঙ্গী বিজেপি ও শিবসেনা, গতমাসে নির্বাচন পর্ব সম্পন্ন হওয়ার পর থেকেই খারাপ হতে থাকে।
বিজেপি সরকারের পক্ষে সওয়াল অজিত পাওয়ারের, বললেন তাঁর নেতা শরদ পাওয়ার
অন্যান্যসহ শিবসেনা দাবি করে, দুই দলের মধ্যে নির্দিষ্ট সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ভাগ করতে হবে, মঙ্গলবার দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেন, এই ধরণের কোনও চুক্তি হয়নি।
তারপরেই, বিরোধী জোট, এনসিপি-কংগ্রেসের দিকে যায় শিবসেনা। শনিবার, বিজেপির নাটকী. পদক্ষেপের পর, তিনদল একমত হয়, যে তারা সরকার গঠনের দাবি জানাবে।