অসমের এনআরসি নিয়েও বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন মমতা।
কোচবিহার: মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মের 'তাস' ব্যবহার করে দেশের ইতিহাসকে 'বদলে' দেওয়ার চেষ্টা করার জন্য তীব্র ভর্ৎসনা করলেন বিজেপিকে। কোচবিহারের একটি জনসভায় বক্তৃতা দিতে এসে তিনি বলেন, ভারতীয় ইতিহাস এবং সংস্কৃতি কখনওই 'সাম্প্রদায়িকতা এবং কুসংস্কার'-এর প্রচার করেনি। তাঁর কথায়, "আমাদের রাজ্যের ধর্মনিরপেক্ষতার ইতিহাস ও বুনোটকে যাঁরা ভেঙে ফেলতে চাইছেন, তাঁদের জেনে রাখা উচিত, বাংলার মানুষ কখনওই ভাঙনের রাজনীতিকে গ্রহণ করেনি"। ওই জনসভা থেকে অসমের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন তিনি জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি নিয়ে। "অসম থেকে ওরা (বিজেপি) চল্লিশ লক্ষ মানুষকে তাড়াতে চাইছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই বাঙালি। এমনও রিপোর্ট আমাদের কাছে আছে, মানুষ এনআরসি তালিকায় নিজের নাম খুঁজে না পেয়ে হতাশায় আত্মহত্যা করেছে। আমি ভাবি বাংলার বিজেপি এই বিষয় নিয়ে ঠিক কী যুক্তি দিতে পারে", প্রশ্ন তোলেন মমতা।
গুজরাট থেকে বিহারীদের উৎখাত করার ব্যাপারটি নিয়েও সরব হন মমতা। "ওরা অসম থেকে বাঙালিদের আর গুজরাট থেকে বিহারীদের তাড়াচ্ছে। আমাদের দেশের সংবিধান সকলকে সমান চোখে দেখার কথা বলেছে। জাতি, ধর্ম ও বর্ণের ভিত্তিতে আমরা কখনওই মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারি না। কোনওভাবেই না", বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত 28 সেপ্টেম্বর গুজরাটের সবরকণ্ঠ জেলায় চোদ্দ মাসের এক শিশুকন্যার ধর্ষণের ঘটনায় ওই অঞ্চলের একজন বিহারী শ্রমিককে গ্রেফতারের পর ওই অঞ্চলের জনতার রোষ এসে পড়ে এলাকায় বসবাসকারী বিহারীদের ওপর। হিন্দিভাষীদের ওপর। 60,000-এর বেশি শ্রমিক দিন দুয়েকের মধ্যেই ওই এলাকা ছেড়ে নিজেদের রাজ্যে চলে যায়।
মহাত্মা গান্ধীর নীতি ও বিশ্বাসের প্রতিও যে বিজেপির কোনও শ্রদ্ধা নেই, সেই কথাটিও জনসভায় দাঁড়িয়ে বলেন মমতা। "ধর্মীয় দাঙ্গা রোখার জন্যই অনশন করেছিলেন গান্ধীজি। কলকাতার বেলেঘাটায় বসে। আমরা তাঁর আদর্শেই চলব। বিজেপির ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার আদর্শ নিয়ে নয়", বলেন মুখ্যমন্ত্রী