50 বছরের পুরনো মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ে গত 4 সেপ্টেম্বর।
নিউ দিল্লি: আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, এক বছরের মধ্যেই মাঝেরহাটে তৈরি হয়ে যাবে নতুন ব্রিজ (Majherhat Bridge)। তিনি বলেন, পুরনো ব্রিজটি ভেঙে ফেলে সেখানে স্থানান্তরিত করা হবে নতুন ব্রিজ। যদিও, ব্রিজ ভাঙার ঘটনা নিয়ে আজ কিঞ্চিৎ সুর পালটেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পূর্ত দফতরেরও দায় রয়েছে এই ব্যাপারে। প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, পূর্ত দফতরের গাফিলতিও এই ব্রিজ ভেঙে পড়ার জন্য দায়ী। তাঁরা কোনওভাবেই দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। যদিও, তার সঙ্গে তিনি এই কথাটিও জানিয়ে দিতে ভোলেননি যে, মেট্রো রেলের কম্পনের ব্যাপারটি নিয়েও তদন্ত চলছে।
গত সপ্তাহের মঙ্গলবার ভেঙে পড়ে দক্ষিণ কলকাতার মাঝেরহাট ব্রিজ (Majherhat Bridge)। ওই ঘটনায় প্রাণ হারান তিনজন। আহত হন বহু মানুষ।
মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার দু’দিন বাদে শহরে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি। মমতাকে ওই সাংবাদিক সম্মেলনেই প্রশ্ন করা হয় যে, ব্রিজের দায়িত্ব ছিল কোন সংস্থার ওপর? তার উত্তরে তিনি বলেন, “আমি একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছি, তাদের চিহ্নিত করার জন্য”।
ওই সাংবাদিক সম্মেলনেই 20’টি সেতুকে ‘বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করেন মমতা। তাদের মধ্যে রয়েছে সাঁতরাগাছি, বেলগাছিয়া এবং শিয়ালদহ সেতুও।
রাজ্যের সেচ দফতর, কেএমডিএ (KMDA) এবং পিডব্লিউডি (PWD)-এর পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করার পর সেই কমিটিই জরুরি ভিত্তিতে এই সেতুগুলির সংস্কার করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
এছাড়া, ওই বৈঠকে মমতা কুড়ি চাকার বড় লরিগুলির শহরের ব্রিজে ওঠার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত নেন এবং যতক্ষণ না তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসছে ততক্ষণ মাঝেরহাটে জোকা-বিবাদীবাগ মেট্রো প্রকল্পের কাজ স্থগিত থাকবে বলেও জানিয়েছিলেন।
মাঝেরহাট ব্রিজ (Majherhat Bridge) ভেঙে পড়ার পর থেকেই মেট্রো রেলের প্রকল্পকে দোষ দিয়ে যাচ্ছিলেন মমতা। তিনি বলেছিলেন “ওই মেট্রোর প্রকল্পে পাইলিং করার সময় গোটা এলাকা জুড়ে মনে হত ভূমিকম্প হচ্ছে, এমন কথা আমাকে স্থানীয় মানুষরাই জানিয়েছেন”।
যদিও মাঝেরহাট ব্রিজ (Majherhat Bridge) ভেঙে পড়ার দিনই রেল বিকাশ নিগমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, মেট্রো প্রকল্পের সঙ্গে এই দুর্ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ, যে অংশে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেই অংশের পাইলিং-এর কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল।
এছাড়া, আরও যে সংস্থাকে দায়ী করেছিল রাজ্য সরকার, সেটি হল- কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “পোর্ট ট্রাস্টের যদি ভারী যন্ত্রপাতি পরিবহণের প্রয়োজন হয়, তাহলে ওঁরা রেল ওয়াগন অথবা রোরোজ ব্যবহার করুন”।