দীর্ঘদিন ধরে এই নাম-সংক্রান্ত জটিলতা চলছে
কলকাতা: দেশের একের পর এক শহরের নাম বদলে যাচ্ছে। অথচ, বহু আবেদন সত্ত্বেও এই রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে 'বাংলা' রাখা নিয়ে এখনও গড়িমসি করে যাচ্ছে কেন্দ্র। বুধবার এই নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, সমস্ত ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থানগুলির নাম প্রায় প্রত্যেকদিনই বদলে দিচ্ছে বিজেপি। অথচ যেই বাংলার নাম পরিবর্তনের প্রসঙ্গ আসছে, যা বাংলার ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরিও, তখনই সরকার আর পাত্তা দিচ্ছে না। গত জুলাই মাসেই রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যের নাম বদলে 'বাংলা' রাখা নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে একটি বিল পাশ হয়ে গিয়েছিল। গত ২৬ জুলাই বাংলা, ইংরেজি এবং হিন্দি এই তিন ভাষাতেই রাজ্যের নাম 'বাংলা' করার প্রস্তাবটি বিধানসভায় পাশ করিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর আগেও দু'বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যের নাম পরিবর্তনের দাবি তোলা হয়েছিল। ২০১১ সালে তিনটি ভাষাতেই রাজ্যের নাম 'পশ্চিমবঙ্গ' করার দাবি ওঠে। কেন্দ্র তা নাকচ করে দেয়। ২০১৬ সালে বাংলাতে 'বাংলা', ইংরেজিতে 'বেঙ্গল' এবং হিন্দিতে 'বঙ্গাল' করার দাবি ওঠে। কেন্দ্র নাকচ করে দেয় সেই প্রস্তাবও। শেষমেশ এই তিন ভাষাতেই 'বাংলা' নাম রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয় চলতি বছরের জুলাই মাসে।
একটি বিবৃতি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, "দীর্ঘদিন ধরে এই নাম-সংক্রান্ত জটিলতা চলছে"।
তিনি বলেন, "স্বাধীনতার পর থেকেই বেশ কয়েকটি রাজ্য ও শহরের নাম বদলানো হয়েছে। যেমন, উড়িষ্যা হয়েছে ওড়িশা। পণ্ডিচেরী হয়েছে পুদুচেরি। মাদ্রাজ হয়েছে চেন্নাই। বোম্বে হয়েছে মুম্বাই। ব্যাঙ্গালোর হয়েছে বেঙ্গালুরু। এইসব ক্ষেত্রে নাম পরিবর্তনের সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের আবেগের কথাটিও মাথায় রাখা হয়েছিল। সেই আবেগের কথা মাথায় রেখেই রাজ্য বিধানসভা থেকে সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছিল 'বাংলা' নামটি"।
তিনি এই কথাও জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পরামর্শ মেনেই আমরা তিনটে ভাষাতেই এই রাজ্যের নাম 'বাংলা' রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
বিজেপিকে এ দিন তুলোধনা করে তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, এই রাজ্যে যাদের ক্ষমতা শূন্য, তারা রাজ্যের নাম নিয়ে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটা নেবেন, তা হতে পারে না। আমরা সংবিধান মেনেই বিধানসভা থেকে নাম বদলের প্রস্তাব পেশ করেছিলাম। কেন্দ্রের উচিত তাকে সম্মান জানানো।