Manua Case: স্বামীকে খুন করায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত মনুয়া ও তাঁর প্রেমিক
কলকাতা: প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে স্বামীকে খুনের ঘটনায় উত্তর ২৪ পরগনার মনুয়া (Manua) ও তাঁর প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করল বারাসাত চতুর্থ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। এছাড়াও দুজনেরই ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন বিচারক। ওই জরিমানা অনাদায়ে তাঁদের আরও ১ বছরের কারাদণ্ড হবে বলে জানিয়েছেন বারাসাত চতুর্থ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক। বৃহস্পতিবারই ওই মামলায় মনুয়া (Manua) ও তার প্রেমিককে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। অজিত রায়কে, খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করার পাশাপাশি তাঁর প্রেমিকা মনুয়াকে তার সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্রের অপরাধেও দোষী সাব্যস্ত করে বারাসাত চতুর্থ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। ২৩ মাস ধরে চলেছে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের শুনানি। ২০১৭-এ প্রেমিক অজিত রায়ের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে স্বামীকে খুন করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার গৃহবধু মনুয়া (Manua)।
বৃহস্পতিবার মনুয়াকাণ্ডের (Manua Case) রায়দানকে কেন্দ্র করে আদালত চত্ত্বরে ভিড় জমান অনুপম সিংয়ের প্রতিবেশীরা, সঙ্গে ছিলেন তাঁর বৃদ্ধ মা-বাবাও। তাঁরা দুজনেই বাংলাদেশের নাগরিক, শুধুমাত্র আদালতের রায় শোনার জন্যই বৃহস্পতিবার এদেশে আসেন তাঁরা। তবে জানা যায়, মনুয়া ও তাঁর প্রেমিকের এই যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণায় খুশি নন মৃত অনুপম সিংয়ের মা। তিনি ও অনুপমের বাবা ফাঁসির সাজা চেয়েছিলেন তাঁদের। সঠিক বিচার পাননি বলে অভিযোগ করে তাঁরা বলেন এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাবেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার আদালতে মনুয়া স্বীকার করেন,ষড়যন্ত্র করা ছিল আগে থেকেই। সেই মতো, ২০১৭-এর ২ মে, মনুয়ার দেওয়ার ডুপ্লিকেট চাবি ব্যবহার করে বাড়িতে ঢোকেন মনুয়ার প্রেমিক অজিত রায় ওরফে বুবাই। সেই সময় ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলেন অনুপম সিং। তবে ঘটনার দিন বাপের বাড়িতে ছিলেন মনুয়া। সেখান থেকেই প্রেমিক অজিত রায়ের থেকে স্বামী খুনের লাইভ আপডেট পাচ্ছিলেন তিনি।
২০১৭-এ মে মাসে বারাসাতের হৃদয়পুরে নিজের বাড়িতে খুন হন অনুপম সিং । সেই ঘটনায় নাম জড়ায় তাঁর স্ত্রী মনুয়া মজুমদার (Manua) ও তাঁর প্রেমিক অজিত রায়ের। প্রথমে মনুয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করেই অজিত রায়ের নাম পান তদন্তকারীরা। পরে তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়। যদিও প্রথমদিকে নিজের দোষ কবুল করতে চাননি মনুয়া মজুমদার (Manua)। পরে প্রেমিক অজিত রায়ের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয় তাঁকে। আর তাতেই সাফল্য পান তদন্তকারীরা। এরপর তাঁদের দীর্ঘ জেরা শেষে ৮৬ দিনের মাথায় প্রথম ৪৬৯ পাতার চার্জশিট জমা দেয়। পরের ধাপে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটেও পুলিস অনেক নতুন তথ্যপ্রমাণ দেয়। চার্জশিট অনুযায়ী, মনুয়াকেই এই খুনের মাস্টারমাইন্ড বলে উল্লেখ করে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা। পথের কাঁটা সরাতেই রীতিমতো পরিকল্পনা করেই স্বামীকে ঠান্ডা মাথায় খুন করিয়েছেন প্রেমিক অজিতকে দিয়ে।