তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র সংসদে দাঁড়িয়ে Narendra Modi সরকারের সমালোচনা করেন
হাইলাইটস
- "নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা" করেছে বিজেপি, বলেন মহুয়া মৈত্র
- "সবকা সাথ" স্লোগানের অপব্যবহার করেছে বিজেপি, বলেন তৃণমূল সাংসদ
- বিজেপি নেতাদের "গোলি মারো" স্লোগানেরও তীব্র সমালোচনা করেন তিনি
নয়া দিল্লি: সংসদে দাঁড়িয়ে ফের বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে ঝাঁঝালো আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি (Mahua Moitra) বলেন, দেশের মানুষ বিজেপির "সবকা সাথ সবকা বিকাশ (সকলের সঙ্গে, সকলের জন্যে উন্নয়ন)" স্লোগানে বিশ্বাস করে তার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। "আপনাদের যে নাগরিকরা ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছেন এখন তাঁদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে আপনারা তাঁদের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন" সংশোধিত নাগরিকত্ব (CAA) ইস্যুতে সরব হন মহুয়া মৈত্র। বিজেপি এমন একটি "পরিস্থিতি তৈরি করছে যেন আমাদের বাবা-মা এক একজন সন্ত্রাসবাদী এবং আমাদের শিশুরা এক একজন দেশদ্রোহী তৈরি হবে", বলেন তৃণমূলের ওই সাংসদ। নাগরিকত্ব বিতর্ক প্রসঙ্গে হিটলারের আমলের নাৎসি বন্দি শিবিরের উদাহরণও টেনে আনেন তিনি। ‘‘জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকরণ বা এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-র মাধ্যমে প্রথমে চিহ্নিতকরণ করা হবে। তারপর তাঁদের অধিকার কেড়ে নিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে'', বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করতে দেখা যায় মহুয়া মৈত্রকে।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র সংসদে দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁর অভিযোগ এনআরসি বা সিএএ-র মতো এই ধরণের পরিকল্পনার কথা আগে জানায়নি মোদি সরকার, তাই তাঁদের "সবকা সাথ সবকা বিকাশ (সকলের সঙ্গে, সকলের জন্যে উন্নয়ন)" স্লোগানে বিশ্বাস করে দেশের যেসব ভোটাররা ভোট দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদিকে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে সরকার। তাঁর কথায়, দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। সিএএ-এনআরসি আতঙ্কে দেশছাড়া হওয়ার ভয়ে ভুগছেন বহু মানুষ।
Lok Sabha: বিজেপি সাংসদদের "বিদ্বেষমূলক বক্তব্য", অভিযোগে ওয়াকআউট বিরোধী সাংসদদের
পাশাপাশি বিজেপি সাংসদদের বিদ্বেষমূলক বক্তব্যেরও নিন্দা করেন মহুয়া মৈত্র। এর আগে দিল্লি বিধানসভার নির্বাচন উপলক্ষে বিজেপির হয়ে প্রচারে গিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্য়মন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। নিজেদের বক্তব্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকরণ (NRC) এর বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের "বিশ্বাসঘাতক" এবং "সন্ত্রাসবাদী" হিসাবে চিহ্নিত করেন তাঁরা এবং সমাবেশে উপস্থিত জনতাকে প্রয়োজনে গুলি চালানোরও পরামর্শ দেন ওই দুই বিজেপি নেতা।
উত্তর-পশ্চিম দিল্লির রিথালা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে প্রচার চালান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। সেই প্রচার সভা থেকেই অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে "গুলি মারার' স্লোগান দেওয়ার উস্কানি দেন ওই বিজেপি সাংসদ। সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে শোনা যায়, দিল্লির নির্বাচনী প্রচার সভায় অনুরাগ ঠাকুর স্লোগান তুলছেন, "দেশের বিশ্বাসঘাতকদের...", এর পরেই উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের বলতে শোনা গিয়েছে "গুলি মার শা..."। অর্থাৎ দেশের সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তাদের গুলি করে মারো।
যোগী আদিত্যনাথের "গুলি" মন্তব্য প্রসঙ্গে কী বললেন Mamata Banerjee?
তার আগে বিজেপি সাংসদ পরবেশ বর্মার বিরুদ্ধেও আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে। শাহিনবাগের প্রতিবাদীরাই দেশের মানুষের বোন ও মেয়েদের ধর্ষণ করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে 'জঙ্গি' বলেও সম্বোধন করতে দেখা যায় তাঁকে।
"এই সরকার সৌজন্যবোধ হারিয়েছে৷ মনে রাখতে হবে ৯০ কোটি ভোটারের মধ্যে আপনারা মাত্র ২৩ কোটি মানুষের ভোট পেয়েছেন ৷ এই পরিস্থিতিতে দেশের ১৩০ কোটি জনগণের প্রত্যেকের উপরে ঔদ্ধত্য ফলানোর চেষ্টা করবেন না ৷ গণতন্ত্রের আঙিনার বাইরে গিয়ে জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না", রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মোদি সরকারের উদ্দেশে বলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।