প্রতি বছরের মতো এবারেও ২১ জুলাইয়ের (21 July) শহিদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। মধ্য কলকাতায় তৈরি হয়েছে শহিদ মঞ্চ। প্রতি বছরই লক্ষাধিক মানুষের জনজোয়ারে ভাসে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ (Martyrs Day Rally)। কিন্তু এবার সমাবেশ নিয়ে যথেষ্ট দ্বিধা রয়েছে শাসক দলের অন্দরেই। কারণ, ভিড় টানতে মঞ্চে তারকা সমাবেশ যাঁর মাধ্যমে ঘটে সেই প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা বিচারাধীন। তিন তিনেক আগেই টলিপাড়ার একঝাঁক টেলি শিল্পী যোগ দিয়েছেন প্রতিপক্ষ শিবিরে। পাশাপাশি, একাধিক কাউন্সিলর, বিধায়কের সঙ্গে দল ছেড়েছেন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত, শুভ্রাংশু রায়ের মতো একাধিক প্রথম সারির নেতা-মন্ত্রীরা। এদিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ জানিয়েছেন, শহিদ দিবস পালনে বাধা সৃষ্টি করতে চাইছে বিজেপি।
তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার রবিবারের চালু ট্রেনের মাত্র ৩০ শতাংশ ট্রেন চালাচ্ছে এই রবিবার। শনিবার মমতা জানিয়েছেন, ‘‘আমি শুনেছি আগামীকাল রেল সাধারণ সংখ্যক ট্রেন চালাবে না বিজেপির নির্দেশে। আমার কাছে খবর আছে, ওরা সাধারণ ভাবে রবিবার যত ট্রেন চলে তার মাত্র ৩০ শতাংশ ট্রেন চালাবে। এটা ঠিক নয়।''
এর পাশাপাশি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করা হয়েছে শাসক দলের পক্ষ থেকে। অভিযোগ, সাংসদ দিলীপ ঘোষ, যিনি বিজেপির রাজ্য সভাপতিও, তিনি দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, যে তৃণমূল নেতারা ‘কাটমানি' বাবদ নেওয়া অর্থ ফেরত দেননি, তাঁদের যেন কলকাতায় সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়া থেকে আটকানো হয়। দিলীপ কার্যত ‘হুমকি' দিয়ে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা ওঁদের টেনে বাস থেকে নামিয়ে দেব।''
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় ১৩ জন কংগ্রেস কর্মীর। তখনও তৃণমূলের জন্ম হয়নি। মমতা তখন ছিলেন যুব কংগ্রেস নেত্রী। পশ্চিমবঙ্গে তখন বাম শাসন। সেই হত্যার প্রতিবাদেই মমতার উদ্যোগে শুরু হয় শহিদ দিবস পালন। তৃণমূল কংগ্রেসের আগামী কর্মসূচির ঘোষণা এই সমাবেশে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এবারের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল থেকে পরিষ্কার, বিজেপির উত্থানে টলমল শাসক দলের অন্দর। গত বারের ২টি আসন থেকে ১৮-তে উঠে এসেছে গেরুয়া শিবির। পাশাপাশি একাধিক নেতা-কর্মী কিংবা সম্প্রতি টেলি তারকাদের অনেকেরই বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় মমতা যে প্রবল অস্বস্তিতে রয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য। কাজেই ২০২১ সালে বিধানসভায় জিতে রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় পুনর্বহাল থাকার দিকে চোখ রেখে রবিবারের সভায় তৃণমূল নেত্রী প্রবল আক্রমণ করবেন বিজেপিকে, এমনটাই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।
কোন পথে বিরোধী পক্ষকে ধরাশয়ী করার মাত করার ছক কষছেন তৃণমূল সুপ্রিমো? উত্তর মিলবে ২১ জুলাইয়ের শহিদ মঞ্চে।