Read in English
This Article is From Mar 02, 2019

কিডনির সমস্যায় ভুগছে মাসুদ আজহার, চিকিৎসা চলছে পাক সেনা হাসপাতালে, জানুন বিস্তারিত

গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ওই ব্যাঙ্কোয়েটে দাঁড়িয়ে লাদেন স্মৃতিচারণ করেছিল, ১৯৯৩ সালে কীভাবে তার সঙ্গে পরিচয় হয় মাসুদ আজহারের। কীভাবেই বা ওইসময় কাজ চালাত এই দুই বিশ্বত্রাস জঙ্গিনেতা।

Advertisement
অল ইন্ডিয়া
নিউ দিল্লি:

কিডনির সমস্যার প্রবলভাবে ভুগছে পাক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহার। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে সামরিক হাসপাতালে তার নিয়মিত ডায়ালিসিস চলছে। শনিবার এই কথা জানালেন কেন্দ্রীয় সরকারের এক কর্তা। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি একদিন আগেই জানিয়েছিলেন যে, মাসুদ আজহার অত্যন্ত ‘অসুস্থ'। তারপরই কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা বিভাগের এক কর্তা এই কথা জানান। ওই কর্তা বলেন, “সাম্প্রতিক রিপোর্টসমূহ দেখে বোঝা যাচ্ছে কিডনির সমস্যায় প্রবলভাবে ভুগছে মাসুদ আজহার। এই মুহূর্তে সে চিকিৎসাধীন। রাওয়ালপিন্ডির সামরিক হাসপাতালে তার নিয়মিত ডায়ালিসিস চলছে। পাক সেনার সদর দফতরে”। প্রসঙ্গত, শাহ মেহমুদ কুরেশি বৃহস্পতিবার জানান, “মাসুদ আজহার এখন পাকিস্তানেই আছে। অন্তত আমার কাছে যেটুকু তথ্য আছে, তা থেকে এই ব্যাপারে আমি নিশ্চয়তা দিতে পারি। এখন এতটাই অসুস্থ সে যে ঘর থেকে বেরোনোর মতো অবস্থাতেই নেই।

জইশ প্রধান মাসুদ আজহার এক সময় ওসামা বিন লাদেনের অতি ঘনিষ্ঠ সহকারি ছিল। বহু আফ্রিকান দেশে সন্ত্রাসবাদী হামলায় মদত দেওয়ার পান্ডা। এছাড়া, গ্রেট ব্রিটেনের বহু মসজিদকে ব্যবহার করে জিহাদের ডাক দেওয়া এই জঙ্গি নেতাকে ধর্মের ভিত্তিতে সন্ত্রাসবাদের অন্যতম কুখ্যাত ‘প্রাণপুরুষ' বলা যায়।

বীর অভিনন্দনকে ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ভারতীয় বিমান বাহিনী; টুইটে ঘটনাক্রম প্রকাশ

Advertisement

এই ৫০ বছর বয়সী জঙ্গি নেতার প্রভাব এতটাই বেশি যে, ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর আইসি-৮১৪ নামের বিমানটিকে হাইজ্যাক করে কান্দাহার বিমানবন্দরে দাঁড় করিয়ে রেখে দিয়েছিল। তার বিনিময়ে তৎকালীন ভারত সরকার মাসুদ আজহারকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। সেই রাতে ওসামা বিন লাদেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে একটি ব্যাঙ্কোয়েট পার্টির আয়োজন করেছিলেন মাসুদ আজহারের ‘সম্মান'-এ।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ওই ব্যাঙ্কোয়েটে দাঁড়িয়ে লাদেন স্মৃতিচারণ করেছিল, ১৯৯৩ সালে কীভাবে তার সঙ্গে পরিচয় হয় মাসুদ আজহারের। কীভাবেই বা ওইসময় কাজ চালাত এই দুই বিশ্বত্রাস জঙ্গিনেতা।

Advertisement

১৯৯৪ সালে জম্মু ও কাশ্মীরে জিহাদি বক্তৃতা দেওয়ার জন্য মাসুদ আজহারকে গ্রেফতার করে ভারত সরকার। ওই সময় তার অন্যতম ডানহাত, ব্রিটিশ নাগরিক ওমর শেখ, তৎকালীন অতি কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন হরকত-উল-আনসারের সদস্য, ভারত থেকে পণবন্দি করেছিল চারজন পশ্চিমী পর্যটককে। তাদের দাবি ছিল, মাসুদ আজহারকে ছাড়ার পর তবেই ওই বিদেশি বন্দিদের ছাড়া হবে। যদিও, তাতে তখন তারা সফল হয়নি। গোয়েন্দারা ওই চার পণবন্দিকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে ওমর শেখের জিম্মা থেকে এবং গ্রেফতার করে ওই কুখ্যাত জঙ্গিকেও।

১৯৯৫ সালে ফের ৫ জন বিদেশি পর্যটকদের পণবন্দি করে হরকত উল আনসার মাসুদ আজহারকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি নিয়ে। পরে তাদের পাঁচজনকেই হত্যা করা হয়।

Advertisement

১৯৯৯ সালে কান্দাহারে বিমান হাইজ্যাক করার পর মাসুদ আজহারকে ছাড়তে বাধ্য হয় ভারত সরকার। তার কয়েকদিনের মধ্যেই ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় বিশ্বের অন্যতম ভয়ঙ্কর জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের। ২০০০ সালের এপ্রিল মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের বাদামি বাগ ক্যান্টনমেন্টে প্রথম আত্মঘাতী হামলা চালায় জইশ।

ওই হামলায় মানববোমা হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল ২৪ বছর বয়সী আসিফ সাদিককে। মাসুদ আজহারের একদম প্রথম দিকে বাছাই করে তোলা পরে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা ভয়ঙ্কর জঙ্গি। সেও ছিল ব্রিটিশ নাগরিক। ওই সময় আল কায়দার বহু জঙ্গিকেও নিজেদের সংগঠনের কাজে ব্যবহার করত মাসুদ আজহার।

Advertisement

এবার থেকে অভিধানে বদলে যাবে 'অভিনন্দন' শব্দের মানে, বলছেন নরেন্দ্র মোদি

সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের পর যখন মাসুদ আজহার জখম হয়ে যায়, তারপর থেকেই তার মূল কাজ হয়ে দাঁড়ায় হরকত-উল-আনসারে নতুন আসা ছেলেদের ‘উদ্বুদ্ধ' করা। গত শতাব্দীর নয়ের দশকের শুরুতেই মাসুদ আজহার হরকত-উল-আনসারের মহাসচিব পদে বসে। তারপর তার কাজ হয়ে দাঁড়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুরে ঘুরে জঙ্গি সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা। ওই দেশগুলির মধ্যে ছিল- জাম্বিয়া, আবু ধাবি, সৌদি আরব, মঙ্গেলিয়া, গ্রেট ব্রিটেন এবং আলবেনিয়া।

Advertisement

১৯৯৩ সালে আল-কায়দা জঙ্গি অধ্যুষিত কেনিয়াতেও যায় সে। সোমালিয়ায় দায়িত্বরত এক আল-কায়দা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গির সঙ্গে দেখা করার জন্য। ১৯৯৩ সালের অগস্ট মাসে গ্রেট ব্রিটেনে ঢোকে মাসুদ আজহার। বক্তৃতা দেওয়ার জন্য। তারপরই শুরু হয় ও দেশের সেই সব মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা, যারা জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিতে বিশেষভাবে দক্ষ। ১৯৯৩ সালে মাসুদ আজহার সাজ্জাদ আফগানির সঙ্গে আসে বাংলাদেশে। ১৯৯৪ সালে ভারত থেকে যখন তাকে গ্রেফতার করা হয়, সেই সময় সে ছিল হরকত উল মুজাহিদিন বা হরকত উল আনসারের সদস্য।

প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর থেকেই ভারতে হওয়া বহু সন্ত্রাসের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে জইশের।

তার মধ্যে রয়েছে ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সংসদ ভবনে হামলা। ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি পাঠানকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে হামলা। ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর উরিতে সেনাবাহিনীর সদর দফতরে হামলা। যাতে শহিদ হন ১৭ জন জওয়ান। আহত হন আরও ৩০ জন।

ভারতের ওপর এখনও পর্যন্ত শেষতম হামলা জইশ করে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। পুলওয়ামাতে। ভয়াবহ আত্মঘাতী হানায় শহিদ হন ৪০ জনেরও বেশি সিআরপিএফ জওয়ান।     



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
Advertisement