রাজ্যপালের দাবি, সত্ত্বর স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য রাজ্যজুড়ে ৩,০০০ আবেদনপত্র পেয়েছেন (ফাইল ছবি)
কলকাতা: কেন্দ্রের স্বাস্থ্য প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারত যোজনা (Ayushman Bharat Yojana) থেকে বঞ্ছিত এরাজ্যের মানুষ, বৃহস্পতিবার এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর (Jagdeep Dhankhar), পাশাপাশি জোর দিয়ে বললেন “এই ধরণের বিষয় নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়”। রাজ্যপালের দাবি, সত্ত্বর স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য রাজ্যজুড়ে ৩,০০০ আবেদনপত্র পেয়েছেন। কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর বলেন, “রাজ্যপাল হিসেবে আমার এখনও ১০০দিন হয়নি। এই সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য রাজ্যজুড়ে আমি ৩,০০০ আবেদনপত্র পেয়েছি। আমি এই আবেদনপত্রগুলি দেখেছি, এবং দেখা গিয়েছে, তাঁরা কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের উপভোক্তা হওয়ার যোগ্য”।
রাজ্য সরকারের সঙ্গে আমার কোনও লড়াই নেই: রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়
রাজ্যপাল বলেন, “আমি এও জানতে পেরেছে যে, রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে আবেদনকারীরা। তা ছাড়াও, যদি তাঁরা রাজভবনে চিঠি লেখেন, তাহলে বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করা হবে”। তিনি বলেন, কারও প্রয়োজনে তিনি তাঁকে সহায়তা করতেই পারেন, তবে সাধ্য সীমিত।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর বলেন, “রাজ্যপালের বড় হৃদয় রয়েছে, তবে মাত্র ২ কোটি টাকার তহবিল...সেখানে একজন সাংসদ পান ৫ কোটি টাকা তহবিল। বেশীরভাগ রাজ্যে, বিধায়কদের তহবিল ২ থেকে ৪ কোটি টাকা। এখানে আমায় বলা হয়েছে, বিধায়কদের ৬০ কোটি টাকার তহবিল। তারমধ্যে ২ কোটি টাকা আমায় বরাদ্দ করা হয়েছে, ১৮টি বিষয়ে আমি অংশগ্রহণ করতে পারব”।
কালীপুজো মিটতেই হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল বাগযুদ্ধ
রাজ্যপাল বলেন, এই ব্যাপক সংখ্যক আবেদনেই স্পষ্ট, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল। তাঁর কথায়, “তিন মাসে আমি ৩,০০০ আবেদনপত্র পেয়েছি, সেগুলি স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য, এটি রাজ্যের পরিস্থিতির প্রকাশ”। তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, এটা ঠিক নয়, কেন কেন্দ্রের এত ভাল একটি প্রকল্প, যাতে এত সুবিধা রয়েছে এবং সারা বিশ্ব তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে, এখানে মানুষের সুবিধার জন্য কেন তা নেওয়া হয়নি”।
২০১৮-এ আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সূচনা করা হয়, দ্বিতীয়ও তৃতীয় পর্যায়ের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এই প্রকল্পে বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকার বাৎসরিক বিমা দেওয়া হয়। পরিবারের আয়তন বা বয়সের কোনও সীমা নেই এই প্রকল্পে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রকল্পটি থেকে রাজ্যকে সরিয়ে রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, এর মাধ্যমে, বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। সব বিষয়ে রাজনীতিকরা উচিত নয় বলেই মন্তব্য করেন রাজ্যপাল।
রাজ্যের আগামী উপ নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণ হয়, আবেদন রাজ্যপালের
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর বলেন, “স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে রাজনীতির ঊর্দ্ধে রাখা উচিত। আর্থিক ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে মানুষকে স্বাস্থ্য প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্ছিত করা ঠিক নয়”। রাজ্যপাল বলেন, যারাই ক্ষমতায় থাকুক, সাধারণ মানুষের জন্য মিলেমিশে কাজ করা উচিত। তাঁর কথায়, “মানুষের জন্য এটা একটা বড় প্রকল্প, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নীতি নির্ধারকরা, একসঙ্গে কাজ করা উচিত, যাতে মানুষ এই সুবিধা পায়। প্রত্যেকটা টাকার সুবিধা যেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয়, যদি কেন্দ্রের থেকে সহায়তা আসে, আমাদের তা গ্রহণ করতে হবে”।
২০১৬-এ রাজ্যে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সূচনা করে রাজ্য সরকার। বিমার মাধ্যমে চিকিৎসার জন্য পরিবার পিছু বার্ষিক ১.৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয় এই প্রকল্পে। সঙ্কটজনক হলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়।