কনৌজের ডিম্পলের হার নিঃসন্দেহে সমাজবাদী পার্টির জন্য খুব বড় আঘাত।
লখনউ: প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে জোটসঙ্গী হয়েছিলেন তাঁরা। আজ অখিলেশ যাদবের সঙ্গে তাঁর দলের জোট ভেঙে দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন মায়াবতী। দলের এক অভ্যন্তরীণ বৈঠকের পরে একথা জানানোর সময়ে অখিলেশ সম্পর্কে মায়াবতী বলেন, ‘‘নিজের স্ত্রী ডিম্পল যাদবকেই জেতাতে পারেননি।'' দু'বারের সাংসদ ডিম্পল যাদব এবার উত্তরপ্রদেশের কনৌজ লোকসভা কেন্দ্রে হেরে গিয়েছেন। এই বিপর্যয় চমকপ্রদ, কেননা এই কেন্দ্রে ৩.৫ লক্ষ যাদব সম্প্রদায়ের ভোট রয়েছে, যা তাঁকে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছিল এই আসনে। কিন্তু ফল থেকে পরিষ্কার হয়ে যায়, যাদব সম্প্রদায় ডিম্পল যাদবকে ভোট না দিয়ে বিজেপি প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছেন। কনৌজের ওই হার নিঃসন্দেহে সমাজবাদী পার্টির জন্য খুব বড় আঘাত।
গুরু নানকের জন্মদিন হোক ‘জাতীয় সহনশীলতা দিবস', কেন্দ্রকে প্রস্তাব পঞ্জাবের
সমাজবাদী নেতা রাম মনোহর লোহিয়া ১৯৬৭ সালে এই আসন থেকে জয়লাভ করেছিলেন। অখিলেশের বাবা মুলায়ম সিংহ যাদব ১৯৯৯ সালে এখান থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০০০ সালে এখানে আসেন অখিলেশ, ২০১২ সাল পর্যন্ত অখিলেশ এই আসন ধরে রেখেছিলেন। এরপর তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন। উপ নির্বাচনে বিরোধিতাহীন ভাবে জয়ী হন ডিম্পল।
বহুজন সমাজ পার্টি বা বিএসপি-র বৈঠকে মায়াবতী বলেন, ‘‘আমাদের ভোট ডিম্পল পেয়েছেন। কিন্তু যাদবরা ভোট দেননি।''
তাঁর মতে এই জোট একেবারেই ‘বেকার' (অর্থহীন)। তিনি বলেন, ‘‘যাদব ভোট আমরা পাইনি। কিন্তু আমাদের ভোট ওরা পেয়েছে। সমাজবাদী পার্টি কেবল সেখানেই জিতেছে, যেখানে মুসলিমরা তাদের বেশি করে ভোট দিয়েছে। এমনকী, ওঁর (অখিলেশ যাদব) নিজের পরিবারও যাদবদের ভোটে জিততে পারেনি।''
চলে গেলেন রুমা গুহ ঠাকুরতা, অভিভাবকহীন ক্যালকাটা ইউথ কয়্যার
মায়াবতী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একাই ১১ আসনের বিধানসভা উপ নির্বাচনে লড়বেন। যে কেন্দ্রগুলির প্রতিনিধিরা সাংসদ হয়ে লোকসভায় গিয়েছেন সেখানে এই উপ নির্বাচন হবে। এর আগে কোনও উপ নির্বাচনে বিএসপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। কিন্তু সূত্রানুসারে, এবার তারা মরিয়া হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএসপি-এসপি সমঝোতা ছিল দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া-নেওয়ার উপর নির্ভরশীল। মায়াবতীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলে অখিলেশ তাঁকে সমর্থন দেবেন। অন্যদিকে মায়াবতী বিধানসভা নির্বাচনে ২০১৭-এ ক্ষমতা হারানো অখিলেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনায় সমর্থন দেবেন।
মায়াবতী-অখিলেশ জোট (যাকে বলা হচ্ছিল বুয়া-ভাতিজা বা পিসি-ভাইপো জোট) শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হল এবং উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে মাত্র ডজনখানেক আসনে শেষ করল এবারের নির্বাচন।
সূত্র অনুসারে জানা যাচ্ছে, ‘‘যদি মায়াবতী জোট থেকে বেরিয়ে না যান, তাহলে তাঁকে অখিলেশকে উপ নির্বাচন ও ২০২২ সালের রাজ্য নির্বাচনে সাহায্য করতে হবে।''
এই মুহূর্তে অখিলেশ যাদব মায়াবতীর কাছে বোঝা ছাড়া কিছু নয়। সমাজবাদী পার্টির নেতারা বলছেন, যাদবদের ভোট পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ ‘জাতপাতের রাজনীতি'র দিন শেষ। এখন সম্প্রদায়ের সকলে উন্নতি চাইছে।