একেই বলে সাধারণের মতো থেকেও অসাধারণ জীবনযাপন। মেঘালয়ের (Meghalaya) একজন আইএএস অফিসার, রাম সিং একটি সহজ-সরল এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বেছে নিয়েছেন নিজের জন্যে। তাঁর ওই সহজ জীবনযাপন অন্য মানুষকেও অনুপ্রাণিত করছে। পশ্চিম গারো পাহাড়ের জেলা শাসক রাম সিং (Ram Singh) স্থানীয় বাজার থেকে জৈব সবজি কিনতে প্রতি সপ্তাহে ১০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করেন। যানবাহনে দূষণ বাড়ে তাই যতটা পথ পায়ে হেঁটে পেরনো যায় আর কী। আর বাজার করার জন্যে সঙ্গে করে নিয়ে যান বেতের ঝুড়ি, যাতে সবজি আনার সময় প্লাস্টিক ব্যবহার না করতে হয়। এদিকে নিয়মিত দীর্ঘ পথ হাঁটায় ফিটনেসও বজায় থাকে নিজের (IAS officer)। অর্থাৎ এককথায়, এক ঢিলে তিন পাখি।
শনিবার রাম সিংয়ের ফেসবুকে শেয়ার করা একটি ছবি ভাইরাল হয়। ছবিটিতে তাঁকে দেখা যাচ্ছে তুরার নিকটবর্তী একটি স্থানীয় বাজার থেকে শাকসবজি কিনে নিজের পিঠে থাকা বেতের ঝুড়িতে করে বাড়ি নিয়ে আসছেন তিনি। আর বাড়ি ফিরছেন পায়ে হেঁটেই, দূষণ এড়াতে, নাঃ কোনও যানবাহনের সাহায্য নেননি ওই আইএএস অফিসার।
সাফাই কর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্লাস্টিক পরিষ্কার প্রধানমন্ত্রীর
রাম সিং নিজের ওই ছবিটি শেয়ার করার সময় লেখেন, "২১ কেজি সাপ্তাহিক শাক সবজির কেনাকাটা, কোনও প্লাস্টিক নেই, কোনও যানবাহনের দূষণ নেই, কোনও যানজট নেই, ফিট ভারত, ফিট মেঘালয়, ইট অর্গানিক, ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন তুরা, পোশান, ১০ কিলোমিটার মর্নিং ওয়াক ..."।
তাঁর ফেসবুক পোস্টটি প্রায় ২ হাজারেরও বেশি 'লাইক' পেয়েছে এবং প্রচুর মানুষ মন্তব্য করেছেন তাতে এবং অনেকেই সবুজ ধরে রাখার প্রতি তাঁর এই প্রয়াসের প্রশংসা করেছেন।
এদিকে, তাঁর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে অন্য একটি ফেসবুক পোস্টও অনেকগুলি প্রশংসনীয় মন্তব্য সংগ্রহ করেছে।
National Sports Day: সাফল্যের কোনও লিফট নেই, সিঁড়িই আছে, বললেন মোদি
আইএএস অফিসার রাম সিংয়ের দুটি ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে রবার্ট জি লিংডোহ লিখেছেন, "ইনি ভারতীয় আমলাতন্ত্রের নতুন মুখ I আমি অনুপ্রেরণা পেয়েছি।"
"কাজ এবং জনগণের প্রতি তাঁর নম্রতা এবং উৎসর্গীকরণ, সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক," মন্তব্য করেন একজন । "অনুপ্রেরণামূলক। সাধারণ জীবনযাপন এবং উচ্চ চিন্তাভাবনা," অন্য একজন লেখেন এ কথা।
ইস্টমোজোর সঙ্গে কথা বলে রাম সিং জানান যে তিনি তুরা ট্রাফিক নিয়ে অভিযোগকারী লোকদের অনুপ্রাণিত করতেই হেঁটে হেঁটে বাজার করা শুরু করেছিলেন।
"অনেকেরই অভিযোগ ছিল যে প্রচুর শাকসবজি নিয়ে হাঁটতে অসুবিধা হয়। আমি তাঁদের 'কোকচেং' (স্থানীয় বাঁশের ঝুড়ি) বহন করার পরামর্শ দিই যা প্লাস্টিকের মারাত্মক ক্ষতি রুখে এর বিকল্প হতে সহায়তা করতে পারে। তবে তাঁরা আমার পরামর্শ শুনে কেবল হেসেছিলেন" বলেন রাম সিং। "সুতরাং আমার স্ত্রী এবং আমি বাঁশের ঝুড়িটি সঙ্গে নিয়ে বাজারের দিকে রওনা হলাম যেটা শাকসবজি বয়ে আনার পক্ষে বেশ সহায়ক বলেই মনে করছি আমি। আজকালকার যুবকরা বেশিরভাগই সুস্থ নন। আমি মনে করি যে তাঁদের হাঁটাচলা শুরু করা উচিত এবং নিজেদের ডায়েট নিয়ন্ত্রণে নজর দেওয়া উচিত"।
"আমি গত ছয় মাস ধরে নিয়মিত এইভাবেই বাজার করি", নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান রাম সিং। "আমি মনে করি আধুনিক চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করার জন্য সনাতন পদ্ধতিতেই সমাধান করা দরকার। আমরা যদি গতানুগতিক উপায়কেই বেছে নিতে পারি তবে আমরা ফিটও থাকতে পারি", পরিষ্কার জানান মেঘালয়ের ওই আইএএস অফিসার।
দেখুন এই ভিডিও: p>