This Article is From Oct 01, 2018

দুর্গাকে ঋতুমতী দেখানোর 'শাস্তি', শিল্পীর নামে অভিযোগ দায়ের হল পুলিশে

প্রাথমিকভাবে ছবিটি প্রভূত প্রশংসা কুড়োয় বিভিন্নমহল থেকেই। তারপরই আসরে নামেন চরমপন্থীরা। ঘুরে যায় খেলা!

দুর্গাকে ঋতুমতী দেখানোর 'শাস্তি', শিল্পীর নামে অভিযোগ দায়ের হল পুলিশে

আটচালায় দুর্গার বদলে স্যানিটারি ন্যাপকিন। সেখানে ঋতুমতীর রক্তে একটি লাল গোলাপ আঁকা।

কলকাতা:

রজঃস্বলা এখনও এই 2018’তে এসেও আমাদের দেশে একটি দুচ্ছাই করার বা নাক সিঁটকানোর মতো বিষয়। এখনও কোনও ধর্মীয় উপাচারে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয় না কেউ রজঃস্বলা হয়ে পড়লে। স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে গেলে দোকানদার সেটিকে কালো পলিথিনে মুড়ে দেয়। সম্ভবত আরডিএক্সের মতো অতি ভয়ঙ্কর বিস্ফোরকও ওভাবে দিতেন না হয়তো তিনি। কিন্তু এটা দেবেন। দেনও। প্রশ্ন করলে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন। ভাবটা এমন, প্রশ্নকর্তা বা কর্ত্রী কি কিছুই জানেন না? অহো, কী নির্বোধ! এমন এক দেশে দাঁড়িয়ে তা নিয়ে কেউ যদি সামান্যতম রসিকতাও করতে যান, তাহলে যে গোটা সমাজ মিলে তাঁকে জ্যান্ত শূলে চড়ানোর বন্দোবস্ত করার চেষ্টা করবে, তা তো একপ্রকার নিশ্চিতই। মুম্বাইবাসী বাঙালি অনিকেত মিত্রও তার ব্যতিক্রম নন। দুর্গাপুজো ও স্যানিটারি ন্যাপকিনকে মিলিয়ে দিয়ে একটি শিল্পই করেছিলেন তিনি। তা ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। ফলাফল? তাঁর নামে এফআইআর!

দুর্গার আটচালায় দুর্গার বদলে স্যানিটারি ন্যাপকিন। সেখানে ঋতুমতীর রক্তে একটি লাল গোলাপ আঁকা। ছবিটা আপাতদৃষ্টিতে ছিল এমনটাই। প্রাথমিকভাবে তা প্রভূত প্রশংসা কুড়োয় বিভিন্নমহল থেকেই। তারপরই আসরে নামেন চরমপন্থীরা। ঘুরে যায় খেলা!

সেই চরমপন্থারই একটি নমুনা পাওয়া গিয়েছিল সৌরাংশু বিশ্বাস নামের একজনের মন্তব্যে। তিনি লেখেন, “এমনটা যদি দক্ষিণ ভারতে হতো, তাহলে অনিকেতের হাত কেটে ফেলত ওখানকার মানুষ। আমরা বাঙালিরা খুবই সহিষ্ণু, তাই এগুলো সহ্য করি। কিন্তু, এটা আমাদের মা দুর্গাকে অপমান এবং আমরা সেটা কোনওভাবেই সহ্য করব না। প্রশ্নই নেই”।

অনিকেতের সমর্থনেও এগিয়ে এসেছিলেন অনেকে। “এখন আর মন্তব্য করার আগে কেউ একটুও ভেবে দেখে না। তাদের কেবল একটা হিন্দু সংস্করণ, একটা মুসলমান সংস্করণ এবং একটা ক্রিশ্চান সংস্করণ দরকার। ব্যাস”, বলেন শিঞ্জনা দাস নামের আরেকজন।

জীতাংশু শর্মা নামে একজন লেখেন, “এখনও মানুষ সত্যিটা মেনে নিতে ভয় পায়। এমন একটি ভাবনার জন্য আপনাকে কুর্নিশ। বির্ভয়ে থাকুন”।

কিন্তু এই ছবিটি যাঁর তৈরি, সেই অনিকেত মিত্র কী বলছেন? এনডিটিভিকে তিনি বলেন, “আমি আমার মা এবং বোনের কষ্ট দেখেছি। দেখেছি ঋতুমতী হওয়ার পর কীভাবে পুজোসহ তাদের সমস্ত ধর্মীয় উপাচার থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়। এই ছবিটির মাধ্যমে একটি বার্তাই দিতে চেয়েছিলাম আমি। কোনও ঋতুমতী মহিলাকেই দুর্গাপুজোর উৎসব থেকে স্রেফ ঋতুমতী হওয়ার কারণেই সরিয়ে রাখা উচিত নয়”।

প্রসঙ্গত, অনিকেত মিত্রর বিতর্কিত ছবিটি চব্বিশ ঘন্টায় চার হাজারের বেশি শেয়ার হওয়ার পর ফেসবুক মুছে দেয়।

.