This Article is From Feb 18, 2020

‘‘বিতর্ক-কেলেঙ্কারি নয়, মানুষের মনে চিরস্থায়ী ‘দাদার কীর্তি’’: মন্ত্রী শোভনদেব, সুব্রত

২০০১ সালে আলিপুর বিধানসভা কেন্দ্র। আমার বাড়ির এলাকা থেকে প্রথম নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হলেন তাপস পাল।

‘‘বিতর্ক-কেলেঙ্কারি নয়, মানুষের মনে চিরস্থায়ী ‘দাদার কীর্তি’’: মন্ত্রী শোভনদেব, সুব্রত

'মহানায়কের অভাব পূরণ করেছিলেন তাপস': শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা:

তাপস পাল (Tapas Paul), বাংলা ছবির মহা তারকা। রাজনীতিতে কোন ক্যারিশ্মায় চার বার নির্বাচনে জিতেছেন? কেন হাজার বিতর্ক, কেলেঙ্কারি সত্ত্বেও তাঁর প্রয়াণে চোখের জলে ভিজছে আপামর বাঙালি? সাংসদ তাপস পালকে নিয়ে না বলা কথায় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sobhandeb Chattopadhyay) এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukhopadhyay)----

‘আটের দশক সেটা। মহানায়ক নেই। টলিউড খাঁ খাঁ করছে। তেমন অবস্থা থেকে বাংলা ছবিকে টেনে তুললেন এক নিষ্পাপ মুখের সহজিয়া অভিনেতা। তিনি তাপস পাল। একের পর এক ছবি করছেন। দর্শক ভালোবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন তাঁকে। কেন? পাশের বাড়ির ছেলে-র মতো ছিলেন বলে। ২০০১ সালে আলিপুর বিধানসভা কেন্দ্র। আমার বাড়ির এলাকা থেকে প্রথম নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হলেন তাপস পাল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বোধহয় বুঝতে পারেননি, এভাবে একজন তারকা অভিনেতা ভোটযুদ্ধে জিতে ফিরবেন। তারপরে নদিয়ার কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের পরপর দু-বারের জয়ী সাংসদ।

তাপসের অফিস ছিল আমার বাড়ির পাশে। ফলে, ওঁর সঙ্গে অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল খুব স্বাভাবিক ভাবেই। সেই অন্তরঙ্গতা একসময় আত্মীয়তায় পরিণিত হয়েছিল। আমার স্ত্রী ওঁকে ভাইফোঁটা দিতেন। মাত্র ৬১ বছর বয়সে সেই মানুষটা আচমকাই 'নেই'! ভাবতে ভীষণ খারাপ লাগছে। ২০০-টিরও বেশি ছবিতে অভিনয়। অভিনয় নয়, নিজের আবেগপ্রবণ সত্ত্বাকেই তুলে ধরতেন প্রতি চরিত্রে। সেই ছাপ পড়েছিল রাজনীতিতেও। তাই কাজ না করতে পারলেও ধৈর্য ধরে শুনতেন সাধারণ মানুষের কথা। ওঁর সঙ্গে কথা বলে আরাম পেতেন সবাই। মাটির কাছাকাছই ছিলেন বলেই। সেই ক্যারিশ্মাতেই তিনি চার বার নির্বাচনে জয়ী। সত্যিই এ যেন দাদার কীর্তি!

অনেকেই হয়ত বলবেন, তাপস পালকে নিয়ে অনের কেলেঙ্কারি আছে। রোজভ্যালি কাণ্ডে জড়িয়ে গ্রেফতার হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও বিদ্রোহ করেছিলেন। আমি বলব, বিতর্ক কার জীবনে না থাকে! একবারও কিন্তু প্রমাণিত নয়, তিনি প্রকৃত অভিযুক্ত। আর একসঙ্গে পথ চলতে গেলে মনোমালিন্য হয়েই থাকে। আজ সেসবের ঊর্ধ্বে তাপস। সমস্ত কেলেঙ্কারি-বিতর্ক পেছনে ফেলে মানুষের মনে চিরস্থায়ী ‘দাদার কীর্তি।''

2h8l80lg

‘মানুষ নন। তাই বাকি পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদদের মতো ছিলেন না তিনি। কিন্তু তাঁর উপস্থিতির আলাদা দাম ছিল। তাপস মানেই 'দাদার কীর্তি', তাপস মানেই 'সাহেব', 'গুরুদক্ষিণা', 'পারাবত প্রিয়া', 'ভালোবাসা ভালোবাসা'-র মতো দুরন্ত সব প্রেমের ছবি। সেই ক্যারিশ্মা যাবে কোথায়! হয়ত তিনি সাংসদ পদেও সীমাবদ্ধ ছিলেন। কিন্তু কৃষ্ণনগরের সাংসদ হিসেবে তিনি অনেক কাজ করেছেন। আর মানুষের কথা ভীষণ শুনতেন দরদ দিয়ে। তাঁকে একটু কাছ থেকে দেখার জন্য উদ্বেল হত জনতা। ভীষণ কষ্ট করতে পারতেন। আর কখনও তাঁর মুখের হাসি মুছত না। আজও নিজে হেসে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন। এ এক অদ্ভুত সমাপতন।‘  

.