প্রতিটা দুর্গাপুজোই (Durga Puja) যেন নিজের মধ্যে থাকা অযৌক্তিকতার অসুরকে পরাহত করার দিন! সন্তানং দেহি থেকে শুরু করে কুমারীপুজোয় (Kumari Puja) রীতিভঙ্গ যেন বারেবারে প্রমাণ করে দিচ্ছে ক্রমেই বদল আসছে। শক্তিরূপী দেবীর পুজোয় জাতি ধর্ম বর্ণভেদে মানুষ মিলিত হন, পুজোর প্রতিটি অংশ, প্রতিমার সাজ থেকে শুরু করে মণ্ডপসজ্জা সবেতেই নানা স্তরের মানুষ সমানভাবেই অংশ নেন। তাহলে কেন পুজোর আচারে কেবল নির্দিষ্ট বর্ণের প্রাধান্য? এই বছরের মহাষ্টমী তাই অনন্য নজির স্থাপন করেছে। মহাষ্টমীর দিন কোনও কুমারীকে দুর্গারূপে পুজো করা হয়ে থাকে। পুজোর ক্ষেত্রে ব্রাহ্মণরাজ কীভাবে শিকড় গেড়ে রয়েছে তা সকলেরই জানা। তাই দুর্গাকে কুমারী হিসেবে ভাবলেও কেবল ব্রাহ্মণকন্যাদেরই পুজো করা হত এতদিন। তবে এবার এই প্রথার শিকড় ভেঙেছেন অর্জুনপুরে এক বাঙালি পরিবার!
পুজোয় নুসরতের ঢাক, নাচে তোপ মৌলবীর, ট্যুইটার দুনিয়ার প্রশংসা
অর্জুনপুরের দত্ত পরিবার বিগত ৬ বছর ধরে নিজেদের বাড়িতে পুজোর আয়োজন করে চলেছেন। এবছর কুমারীপুজোয় কোনও ব্রাহ্মণদুহিতা নয়, মুসলিম পরিবারের এক সন্তানকেই দেবীদুর্গারূপে পুজো করা হয়েছে। উৎসবের যে আদতে কোনও ধর্ম হয় না, এবং সকল মানুষের মধ্যেই ঈশ্বর লুকিয়ে রয়েছেন নানারূপে তা আরও একবার জানান দিতেই এই মহা আয়োজন।
দত্ত পরিবারের সদস্য তমল দত্ত বলেন, “আমরা এর আগেও অ-ব্রাহ্মণকন্যার কুমারী পুজো করেছি এবং এই বার আমরা মুসলিম কন্যাকে দেবীজ্ঞানে পুজো করেছি। প্রথমে আমরা শুধুই ব্রাহ্মণ কন্যাদের পুজো করতাম। কিন্তু মা দুর্গা, সারা জগতের মা। তাই আমরা এবার প্রথা ভেঙে দিলাম।”
Durga Puja 2019: সাড়ে চারশো বছরের খুলনার রায় পরিবারের পুজো এখন হয় হাবরায়
দুর্গাপুজোয় কুমারী হিসেবে ফাতিমাকে খুঁজে পাওয়াটা বেশ কাকতালীয়ই ছিল। তমাল বলেন যে, কুমারীপুজোর জন্য মুসলিম মেয়ে খুঁজে পেতে তাঁদের বেশ সমস্যাই হচ্ছিল। তখনই তমালের সহকর্মী মোহাম্মদ ইব্রাহিম তাঁর ভাইঝি ফাতিমার নাম প্রস্তাব করেন। ফাতিমা তাঁর পরিবারের সঙ্গে আগ্রায় থাকে। ইব্রাহিম তাঁর পরিবারকে এই কুমারীপুজোর জন্য রাজি করানোর পরে, দত্তবাড়িতেই এসে ওঠেন ফাতিমা ও তাঁর মা।